Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

জবাবে ধোঁয়াশা, ইডি ফের ডাকতে পারে অর্পিতাকে

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তাঁকে আগেই দু’-দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সুস্পষ্ট জবাব চেয়ে বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা জানান, দু’বারের জিজ্ঞাসাবাদে অর্পিতা যে-সব উত্তর দিয়েছেন, তার কয়েকটি জায়গায় ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। তা ছাড়াও তদন্ত যতটা এগিয়েছে, তাতে তাঁর কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য জানা দরকার বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৪ ০৩:১৯
Share: Save:

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে তাঁকে আগেই দু’-দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সুস্পষ্ট জবাব চেয়ে বালুরঘাটের তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা জানান, দু’বারের জিজ্ঞাসাবাদে অর্পিতা যে-সব উত্তর দিয়েছেন, তার কয়েকটি জায়গায় ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। তা ছাড়াও তদন্ত যতটা এগিয়েছে, তাতে তাঁর কাছ থেকে আরও কিছু তথ্য জানা দরকার বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

এই কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সারদার সংবাদমাধ্যমের ব্যবসার দিকে নজর দিয়েছিল ইডি। ওই ব্যবসায় কয়েকশো কোটি টাকা ঢেলেছিলেন সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন। তদন্তকারীরা জানান, অর্পিতা সারদার যে-সংবাদ চ্যানেলের নির্বাহী সম্পাদক পদে ছিলেন, তার মালিকানা হস্তান্তর নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। মূলত এই বিষয়েই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই চ্যানেলের আর্থিক হিসাবনিকাশের বিষয়টিও তাঁর কাছ থেকে জেনে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। যদিও অর্পিতা বারে বারেই দাবি করে আসছেন, তিনি ওই চ্যানেলের কর্মী ছিলেন মাত্র। মালিকানা বা আর্থিক বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।

অর্পিতাকে তৃতীয় দফায় তলব করার আগেই ইডি-র তদন্তকারীরা সোমবার কলকাতা পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর প্রকাশ উপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। প্রকাশবাবু নিজেই এর আগে ইডি-র তদন্তকারীদের সঙ্গে দেখা করে সারদা কেলেঙ্কারি নিয়ে বেশ কিছু তথ্য সরবরাহ করেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, ওই কেলেঙ্কারির সঙ্গে কলকাতা পুরসভারও যোগ আছে। পুরসভা যে-ভাবে ডায়মন্ড হারবার রোডের একটি ঠিকানায় সারদার বিভিন্ন সংস্থার নামে ৬৯টি ট্রেড লাইসেন্স অনুমোদন করেছিল, তা বেআইনি বলে মনে করেন তিনি। প্রকাশবাবুর দাবি, আইন ভেঙে ঢালাও লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে বলেই মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কেও ইডি-র তদন্তের আওতায় আনা প্রয়োজন। মেয়র অবশ্য আগেই বলেছেন, ইডি ডাকলে তিনি এই অভিযোগের জবাব দেবেন।

তদন্তকারীরা জানান, প্রকাশবাবুর অভিযোগ নথিবদ্ধ করার জন্যই এ দিন তাঁকে সল্টলেকে ইডি-র দফতরে ডেকে পাঠানো হয়। দু’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ইডি-কর্তারা তাঁর কাছ থেকে ডায়মন্ড হারবার রোডে সারদার অফিস সংক্রান্ত তথ্য জানতে চান। প্রকাশবাবুর দাবি, ওই ঠিকানায় সারদার এজেন্টদের সংগৃহীত আমানত রাখা হতো। তাই ওই অফিসে হানা দিলে এখনও আর্থিক কেলেঙ্কারির গুরুত্বপূর্ণ কিছু সূত্র মিলতে পারে।

সম্প্রতি দিল্লিতে সুদীপ্তের ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে একটি জমি সংক্রান্ত নথি উদ্ধার করেছে ইডি। তল্লাশিতে মিলেছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্যও। সারদার বাজেয়াপ্ত করা ৩৯০টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন পরীক্ষার কাজ প্রায় শেষ করেছে ইডি। তদন্তকারীদের একাংশ জানান, উধাও হওয়া টাকার সন্ধানে একটি প্রাথমিক তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হয়েছে। এই তথ্যভাণ্ডারের জন্যই আরও কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এই তথ্য যাচাইয়ে সুদীপ্ত এবং তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষকে ফের জেরা করার প্রয়োজন হতে পারে। লোকসভার ভোটের পরে ওই দু’জনকেই জেরা করতে পারেন তদন্তকারীরা। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের আরও একটি তদন্তকারী সংস্থা এসএফআইও-ও এর মধ্যে সুদীপ্তকে জেরা করতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

ed sarada arpita ghosh scam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE