দক্ষিণবঙ্গের সুন্দরবনের ‘মৌবনে’র পর এ বার উত্তরের ‘মধু’। পুজোর মরসুমের মধ্যেই বন দফতরের ‘নন টিম্বার ফরেস্ট প্রোডিউস ডিভিশনে’র (এনটিএফপি) উদ্যোগে বাজারে আসতে চলছে উত্তরবঙ্গের ‘মধু’। ৭টি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকার মধু চাষিদের থেকে তা সংগ্রহ করে প্রক্রিয়াকরণের পর বোতলজাত করে ‘মধু’ নামে সুদৃশ্য লেবেলিং করার পর বিক্রি হবে। এত দিন সরকারি উদ্যোগে কেবলমাত্র বন উন্নয়নের নিগমের তৈরি সুন্দরবনের মধু ‘মৌবন’ই উত্তরবঙ্গে বিক্রি হত। এ বারই প্রথম উত্তরবঙ্গের মধু চাষিদের আর্থ সামজিক উন্নয়নের কথা মাথা রেখে মধুর বাণিজ্যকরণ শুরু করতে চলেছে রাজ্যের বন দফতর।
এনটিএফপি ডিভিশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিএফও অরুণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সুন্দরবনের মধু এনে যা বিক্রি করি, তার থেকে প্রচুর বেশি চাহিদা রয়েছে। সেই কথা মাথায় রেখেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উত্তরবঙ্গের মধুর এমন ভাবে বাণিজ্যকরণ আগে হয়নি।” তিনি জানান, মধু বোতলজাত করার জন্য সরকারি ড্রাগ লাইসেন্স দরকার হয়। দুই সপ্তাহ আগে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য এবং পরিবার বিষয়ক দফতর থেকে সেই অনুমতি মিলেছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, সুন্দরবন এলাকায় জঙ্গলে বন্য মৌমাছির চাক থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌবন তৈরি হয় কলকাতার বন উন্নয়ন নিগমের কারখানায়। উত্তরবঙ্গে প্রতিবছর খুব কম করে তা প্রায় ১০ টন বিক্রি হয়। ৫০০ গ্রাম এবং ১ কেজির বোতলে ওই মধু ২৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। একে মাথায় রেখেই গত তিন-চার মাস আগে কাজ শুরু করে এনটিএফপি ডিভিশন। দেখা যায়, কার্শিয়াং, কালিম্পং, দার্জিলিঙের পাহাড়ি এলাকা ছাড়াও রায়গঞ্জ, বক্সাদুয়ার, লাটাগুড়ি, ধূপগুড়ি, গয়েরকাটা, বান্দাপানি, শাল কুমার, খুট্টিমারি-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় মধুর চাষ হয়। দফতরের উদ্যোগেই অনেক জায়গায় মৌমাছি পালনের জন্য ‘অ্যাপিয়ারি বক্স’ও দেওয়া হয়। দেখা যায়, সরষে, লিচু, কমলালেবু, শাল, জারুল, দন্ডকলস বাগান যে সব এলাকায় রয়েছে, সেখানেই ভাল মধু চাষ হচ্ছে। তিন কিলোমিটার অবধি উড়ে উড়ে মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করে। সেই হিসাবেই বাক্স বসিয়ে তাতে রানি মৌমাছি ঢোকানো হয়। বর্ষার পর থেকে মধুর চাক তৈরি হয়ে যায়। পরে মধু নিষ্কাশন যন্ত্রের সাহায্যে মৌচাক না ভেঙে মধু সংগ্রহ করা হয়। পরর্তীতে ফের চাকে মধু হয়।
কিন্তু মৌচাক থেকে উৎপন্ন মধু সে ভাবে বাজারজাত হয় না। ফড়েদের দিয়ে শিলিগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুর দুয়ারের মত এলাকায় পাঠিয়ে দেন। স্থানীয়ভাবে গ্রামেগঞ্জেও তা বিক্রি হয়। কিছু দিন ধরে ডুয়ার্সের বিভিন্ন রিসর্টে পর্যটকদের জন্য ও এলাকার বিউটি ক্লিনিকগুলিতে স্থানীয় মধু সরবরাহ হচ্ছে। কিন্তু সবই বিক্ষিপ্ত ভাবে হওয়ায় চাষিরা উপকৃত হয় না। ধূপগুড়ির নিরঞ্জনপাটের মধু চাষি জ্যোতিষচন্দ্র রায় বলেন, “আমি দীর্ঘদিন থেকে মধু চাষ করছি। কিন্তু সরকারি উদ্যোগে মধু কেনা হয়নি। আমরা নির্ধারিত মূল্য এবং টানা সরবরাহের আশ্বাস পেয়েছি। অনেকেই মধু চাষে উৎসাহী হবেন। লাভের পরিমাণ বাড়বে আশা করি।”
ঠিক হয়েছে, শীতের মরসুমের কথা মাথা রেখে প্রথম দফায় ২ টন মধু সংগ্রহ হচ্ছে। পরে তা এনটিএফপি ডিভিশনে বাগডোগরা সংলগ্ন তাইপু’র কারখানায় প্রক্রিয়াকরণ হবে। বিভিন্ন বস্তি থেকে সংগ্রহ করা মধু ফুটিয়ে ঠান্ডা করে আলট্রা ভায়োলেট রে-র মাধ্যমে জীবাণুমুক্ত করার পরে তা বোতলজাত হবে। ডিএফও জানান, মধু চাষিদের থেকে ১৫০-২০০ টাকা কেজি দরে কিনে তা প্রক্রিয়ার পর ২৫০ টাকার কাছাকাছি বাজারে বিক্রি করা হবে। আবার চাষিদের উৎসাহ বাড়াতে লাভের একটি অংশও তাদের দেওয়া নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। পুজোর মরসুমেই এই মধু বাজারের আনার চেষ্টা চলছে। তবে সুন্দরবনের ‘মৌবন’ও বাজারে চালু থাকবে।
মহার্ঘ ভাতার দাবিতে পথে
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা
বকেয়া ৪৯% মহার্ঘ ভাতা, ৮.৩৩% বোনাস, অস্থায়ী কর্মীদের স্থায়িকরণ এবং গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার দাবিতে পথে নামল নামল সরকারি ও আধা সরকারি কর্মীদের যৌথ সংগ্রামী মঞ্চ। মঙ্গলবার নব মহাকরণের সামনে বিক্ষোভ করে ওই মঞ্চের আহ্বায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ সরকারি কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ফটিক দে বলেন, “আমাদের দাবি মানা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।” একই দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি-ও। তৃণমূলের রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠন ছেড়ে সদ্য বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন প্রাণবন্ধু নাগ এবং দেবাশিস শীল। তাঁদের অভিযোগ, ৮ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসা বিমা এবং আবাসন গড়ার যে ঘোষণা করেছিলেন, তা বাস্তবায়িত হয়নি। মহার্ঘ ভাতা এবং বোনাসের প্রশ্নেও মুখ্যমন্ত্রী কথা রাখেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy