সৌরশক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন দেশের মধ্যে এ রাজ্যে প্রথম শুরু হয়েছিল। পরে গুজরাত, কর্নাটক, মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনে এগিয়ে গিয়েছে। বাজেট বক্তৃতায় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র জানান, অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে রাজ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের উপরে কর ছাড় দেবে। অপ্রচলিত শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদকদের ১০ বছর ধরে ১০০% ভ্যাট মকুব করা হলে দাম কমবে অপ্রচলিত শক্তির যন্ত্রের, মত তাঁর। উত্তর দিনাজপুরে ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি হবে বলে জানান তিনি।
পরিবেশ দূষণ এড়াতে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে বলছেন পরিবেশবিদেরা। তাঁদের অনেকেই রাজ্যের এই করছাড়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছেন। নতুন ঘোষণায় খুশি অপ্রচলিত শক্তি ও তার যন্ত্রাংশ নির্মাতারাও। তাঁদের অনেকে অবশ্য বলছেন, এই ছাড় শুধু যন্ত্রাংশ বিক্রির উপরে দেওয়া হবে নাকি বিদ্যুৎ উৎপাদকেরা কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রেও এই ছাড় পাবেন, তা স্পষ্ট নয়। তাঁদের দাবি, কাঁচামাল কেনার সময় করছাড় না পেলে যন্ত্রের দাম বাস্তবে কতটা কমবে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে।
অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনে যুক্ত ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রে তাঁদের ৫% কর দিতে হয়। বিদ্যুৎ তৈরির যন্ত্রাংশ বিক্রির সময় ব্যবসায়ীরা একই হারে ভ্যাট নিতেন। অর্থাৎ ১০০ টাকার কাঁচামাল কিনলে কর-সহ দাম পড়ত ১০৫ টাকা। সেই কাঁচামাল দিয়ে যন্ত্রাংশ তৈরির পরে ১৫০ টাকা দাম হলে, তার উপরে ৫% হারে ভ্যাট চাপানো হতো। ফলে ক্রেতাকে মোট দাম দিতে হত ১৫৭ টাকা ৫০ পয়সা। ১৫৫ টাকা ব্যবসায়ী নিজে রেখে ২ টাকা ৫০ পয়সা সরকারকে কর দিতেন। এ দিন কর ছাড়ের ঘোষণার পরে ব্যবসায়ীদের একাংশ বলছেন, কাঁচামালে ৫% হারে কর দিতে হলে সেই টাকা পণ্যের মূল দাম হিসেবেই জুড়ে যাবে। তার ফলে যতটা দাম কমার আশা করা হচ্ছে, ততটা না-ও কমতে পারে।
অপ্রচলিত শক্তি বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়ীদের বক্তব্য ছিল, গুজরাত বা মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্যে এই ধরনের শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে যেমন কঠোর নীতি রয়েছে, তেমনই ভর্তুকির মতো উৎসাহপ্রদান প্রকল্পও রয়েছে। এ দিন রাজ্যের কর ছাড়ের ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও সৌরশক্তি ব্যবসায়ী অনুপম বড়াল বলেন, “শুধু কর ছাড়ে বা দাম কমিয়ে অপ্রচলিত শক্তিক্ষেত্রে উন্নতি অসম্ভব। বহুতলের মাথায় সৌরশক্তিকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।”
রাজ্যে অপ্রচলিত শক্তি সংস্থার অধিকর্তা শান্তিপদ গণচৌধুরীর দাবি, বহুতলে সৌরশক্তির প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক হচ্ছে। ফলে চলতি বছরে রাজ্যে অপ্রচলিত শক্তি যন্ত্রাংশের চাহিদা অনেকটা বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy