রাকেশ আস্থানাকাণ্ডের পর চিটফান্ড ও নারদা মামলায় জড়িতরা কি বা়ড়তি অক্সিজেন পাবেন? ছবি: সংগৃহীত।
নারদা-সারদা তদন্ত কি এ বার গতি হারাবে? প্রশ্নটা উঠছে ওই মামলাগুলির তদন্তের নেতৃত্বে থাকা রাকেশ আস্থানা বিপাকে পড়ায়।
পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও দেশ জুড়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মামলায় বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)-এর নেতৃত্বে রয়েছেন সিবিআইয়ের স্পেশ্যাল ডিরেক্টর রাকেশ আস্থানা। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠায় আপাতত বেসামাল সিবিআইয়ের অন্দর। ফলে প্রশ্ন উঠছে, নারদা-সারদা মামলায় অভিযুক্তরা কি কিছুটা বাড়তি অক্সিজেন পাবেন? এ রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলে বেশ কয়েক জন নেতা-মন্ত্রী-সাংসদেরা ওই মামলাগুলিতে অভিযুক্ত। তবে এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত তৃণমূল। একাংশের মতে, অভিযুক্তদের এতে কোনও লাভই হবে না। অন্য অংশের মতে, রাজনৈতিক ভাবে বিরোধীদের বেকায়দায় ফেলার জন্যই সিবিআইকে ব্যবহার করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে নির্বাচনের আগে তা নিয়ে ফায়দা তোলা আর সম্ভব হবে না।
গত জুন মাসে রাকেশ আস্থানা নিজে কলকাতায় এসেছিলেন। শহরে এসে নারদা মামলা নিয়ে তদন্তে গতি বাড়ানোর নির্দেশও দেন তিনি। চিটফান্ড মামলাগুলিও যাতে গতি পায়, তার নির্দেশও দিয়েছিলেন আস্থানা। এর পরই সারদা মামলা নিয়ে নড়েচড়ে বসে সিবিআই। পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সমনও পাঠানো হয়। একই ভাবে নারদা তদন্তেও গতি আসে।
আরও পড়ুন
গ্রেফতার আস্থানা-ঘনিষ্ঠ ডিএসপি, আরও বিপাকে সিবিআইয়ের দু’নম্বর
আস্থানাকাণ্ডের পর অবশ্য সেই গতি কতটা বজায় থাকবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। শাসক দল তৃণমূল অবশ্য এই সুযোগে সিবিআইকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ব্যবহারের অভিযোগ তুলতে ছাড়ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল সাংসদ (সারদা মামলায় যাঁর নাম জড়িয়েছে) সোমবার বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার রাজনৈতিক ভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই বিরোধীদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে ব্যবহার করছে। এটি আমরা প্রথম থেকেই জানতাম। এই ঘটনা প্রমাণ করে যে সিবিআই একটা দুর্নীতিগ্রস্ত সংস্থা। এর নির্ভরযোগ্যতা বলে কিছু নেই।”
আরও পড়ুন
রাজি করানো গেল মমতাকে, বাড়ছে নিরাপত্তা, বাড়ির সামনে বসছে জোড়া ওয়াচ টাওয়ার
তৃণমূলের মতোই একই মত এ রাজ্যের সিবিআইয়ের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ। তাঁদের মতে, দুর্নীতিতে রাকেশ আস্থানার নাম জড়ানোয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হওয়ায় সিবিআইয়ের মর্যাদা ও নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে। সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন উঠছে, এ রাজ্যের যে সমস্ত শীর্ষ নেতা-মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা কি বা়ড়তি অক্সিজেন পাবেন? এ প্রসঙ্গে এক তৃণমূল নেতার অভিযোগ, “২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে সিবিআইকে ব্যবহার করে ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তবে আস্থানার এই ঘটনার পর তাদের পূর্বপরিকল্পনা অনেকটাই ধাক্কা খাবে।”
আরও পড়ুন
সূচনা করবেন অমিতই, রথযাত্রা পিছিয়ে দিল বিজেপি
বিজেপি যে আস্থানাকাণ্ডের পর বেকায়দায় পড়বে তা অবশ্য মানতে নারাজ তৃণমূলের একাংশ। শাসক দলের একাংশের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবুজসঙ্কেত ছাড়া আস্থানার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা সম্ভব হত না। ফলে তৃণমূলের একাংশের আশঙ্কা, আস্থানাকাণ্ডের পরেও এ রাজ্যে নারদা-সারদা মামলা যে গতিতে চলছিল, তা-ই বজায় থাকবে। তাঁদের মতে, যাঁরা আস্থানাকাণ্ডের পর লাভবান হওয়ার কথা ভাবছেন, তাঁরা ভুল ভাবছেন।
(পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার খবর এবং বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলায় খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের রাজ্য বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy