Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
আসানসোল, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং

১লা বৈশাখে মুখ দেখাবে নতুন তিন জেলা

নতুন বাংলা বছরে রাজ্যের প্রাপ্তি হচ্ছে নতুন জেলা। আগামী ১লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের তিনটি নতুন জেলা আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে বলে সোমবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৫০
Share: Save:

নতুন বাংলা বছরে রাজ্যের প্রাপ্তি হচ্ছে নতুন জেলা। আগামী ১লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের তিনটি নতুন জেলা আত্মপ্রকাশ করতে চলেছে বলে সোমবার জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

গত ডিসেম্বর মাসে নবান্ন ঘোষণা করেছিল, রাজ্যে নতুন পাঁচটি জেলা তৈরি হবে। কিন্তু কলকাতা হাইকোর্টের সবুজ সঙ্কেত অনুযায়ী প্রথম পর্যায়ে হচ্ছে তিনটি জেলা— আসানসোল, ঝাড়গ্রাম ও কালিম্পং। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বাংলা নববর্ষে সেগুলো আত্মপ্রকাশ করবে। দ্বিতীয় ধাপে আসবে বসিরহাট ও সুন্দরবন। প্রথম দফায় তিন নতুন জেলার সুবাদে পশ্চিমবঙ্গে জেলার সংখ্যা দাঁড়াবে ২২।

এ দিন লখনউ রওনার আগে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আসানসোল, ঝা়ড়গ্রাম, কালিম্পং— এই তিন জেলা গঠনে হাইকোর্টের অনুমোদন এসে গিয়েছে। পরিকাঠামোগত দিক খতিয়ে দেখতে শিগগিরই কালিম্পং যাবেন মুখ্যসচিবের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদল। আসানসোলে যাবেন স্বরাষ্ট্র-সচিব। ঝাড়গ্রামে যাবেন কর্মিবর্গ ও প্রশাসনিক সংস্কার দফতরের সচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি।’’ মমতা এ দিন জানিয়েছেন, এপ্রিলের বাংলা নববর্ষেই তিন জেলা চালু হয়ে যাবে।

নবান্নের খবর: আসানসোল জেলার নতুন নাম হবে বর্ধমান শিল্পাঞ্চল। এর দু’টি মহকুমা—দুর্গাপুর ও আসানসোল। আওতায় থাকবে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের অধীন এলাকাগুলো। বাকিটা রয়ে যাবে বর্ধমান জেলার মধ্যে। ঝাড়গ্রাম ও কালিম্পং জেলা কার্যত এখনকার দু’টি মহকুমা নিয়েই গড়ে উঠবে। ঝাড়গ্রাম অবশ্য ইতিমধ্যে ‘পুলিশ জেলা’ হিসেবে চিহ্নিত। সেটাই হবে ঝাড়গ্রাম জেলা।

গত ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে নতুন জেলা গঠনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘পুরোদস্তুর জেলা গড়তে এক বছর লাগবে। কারণ, নতুন জেলায় ডিএম, এসপি’র অফিস ছাড়াও সমস্ত দফতরের পৃথক অফিস বানাতে হবে। হবে নতুন আদালতও।’’ অথচ বাস্তবে দেখা গেল, মন্ত্রিসভার প্রস্তাব চূড়ান্ত করতেই প্রায় বছরখানেক লেগে গেল। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘নতুন জেলা গঠনের ক্ষেত্রে কিছু ছাড়পত্র ও প্রশাসনিক অনুমোদন লাগে। এর অন্যতম, হাইকোর্টের অনুমোদন। কারণ, বিচারব্যবস্থারও পুর্নগঠন দরকার। সেই অনুমোদন আসার অর্থ, জেলা গঠনের প্রক্রিয়া শেষ হওয়া। এ বার হাতে হাত লাগিয়ে কাজে নেমে পড়ার পালা।’’

উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট ও দক্ষিণের সুন্দরবন ঘিরে নতুন জেলা গঠনের সিদ্ধান্ত এখনই কার্যকর কেন হচ্ছে না, তা-ও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। নবান্নের এক কর্তার বক্তব্য, দুই ২৪ পরগনার কোন কোন এলাকা নিয়ে নতুন দুই জেলা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। সদরও ঠিক হয়নি। তাই কাজটা দ্বিতীয় দফার জন্য রাখা হয়েছে। ‘‘উপরন্তু পরিকাঠামো তৈরির টাকার জোগাড় করতে হবে।’’— মন্তব্য কর্তাটির।

বস্তুত খরচের ব্যাপারটা এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। এর আগে রাজ্য জেলা ভাগের সাক্ষী হয়েছে ২০০২ সালে— মেদিনীপুর ভেঙে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর। পূর্ব মেদিনীপুরের প্রশাসনিক ভবন ও পরিকাঠামো নির্মাণে ৯০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। পরে আলিপুরদুয়ার জেলা গঠনে বরাদ্দ হয় ৫০ কোটি। নবান্নের প্রাথমিক হিসেবে, নতুন তিন জেলার পরিকাঠামোর পিছনেও গড়ে ৫০ কোটি ধরে মোট দেড়শো কোটি খরচ হতে পারে।

থাকছে সংশয়ও। নবান্নের খবর, ২০১৩-য় জলপাইগুড়ি ভেঙে নতুন জেলা আলিপুরদুয়ার তৈরি হলেও সেখানে সমস্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি। ফলে বহু দফতরের কাজকর্ম কার্যত জোড়াতালি দিয়ে চলছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর অফিস এখনও নতুন প্রশাসনিক ভবনে উঠে যেতে পারেনি। এমতাবস্থায় নতুন তিন জেলা বাংলা নববর্ষে যাত্রা শুরু করলেও যাবতীয় পরিকাঠামো নিয়ে পুরোদস্তুর জেলা কবে হয়ে উঠবে, নবান্নের কর্তারা তা হলফ করে বলতে পারছেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

new districts westbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy