Advertisement
E-Paper

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে ‘অন্য পথ’ দেখার হুঁশিয়ারি বিধায়কদের, ১১ জনের গরহাজিরায় জল্পনা

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় সচিবালয়ে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। সেই বৈঠকে বিজেপি-সহ এনডিএ-র অন্য শরিক দলগুলির ২৭ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও গরহাজির রইলেন ১১ জন।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ।

মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১১:০৫
Share
Save

মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে ঘরে-বাইরে চাপের মুখে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার। সোমবার সন্ধ্যা ৬টায় সচিবালয়ে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ। সেই বৈঠকে বিজেপি-সহ এনডিএ-র অন্য শরিক দলগুলির ২৭ জন বিধায়ক উপস্থিত থাকলেও গরহাজির রইলেন ১১ জন। অনুপস্থিত বিধায়কদের মধ্যে ছ’জন গরহাজিরার কারণ হিসাবে শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন। আর পাঁচ জন কিছুই জানাননি।

মণিপুর প্রশাসনের একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মূলত দু’টি বিষয় নিয়ে বৈঠক উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সিংহভাগ বিধায়ক কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার আর্জি জানান। এর পাশাপাশি মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফল উপত্যকার ছ’টি থানায় সেনাবাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন ‘আফস্পা’ প্রত্যাহারের আর্জি জানান ওই বিধায়কেরা। প্রস্তাব আকারে নিজেদের এই দুই দাবি তুলে ধরার পর এনডিএ-র বিধায়কেরা হুঁশিয়ারির সুরে জানান, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কেন্দ্র তাঁদের কথা মেনে না-নিলে জনগণের পরামর্শ নিয়ে তাঁরা ভবিষ্যতের কর্মপন্থা স্থির করবেন। এই হুঁশিয়ারি বীরেন সরকারের স্থায়িত্ব নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিতে পারে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। তা ছাড়াও, একের পর এক বিধায়কের বাড়িতে হামলার ঘটনাতেও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বৈঠকে যোগ দেওয়া বিধায়কেরা।

মণিপুরের পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রশাসন ব্যর্থ, এমন অভিযোগ তুলে রবিবার বীরেন সরকারের উপর থেকে সমর্থন তুলে নেয় মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার দল ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)। এনপিপি সমর্থন প্রত্যাহার করলেও বীরেন সরকারের পতন ঘটবে, আপাতত এমন সম্ভাবনা নেই। ৬০ আসনের মণিপুর বিধানসভায় বিজেপির ৩২ জন বিধায়ক রয়েছেন। সে রাজ্যে সরকার গঠন কিংবা রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় জাদুসংখ্যা বা ‘ম্যাজিক ফিগার’ ৩১। সে দিক থেকে দেখলে বিজেপি একক শক্তিতেই সরকার রক্ষা করতে পারবে। তা ছাড়া বীরেন সরকারকে এখনও পর্যন্ত সমর্থন জানাচ্ছেন এনপিএফ-এর পাঁচ বিধায়ক, নীতীশ কুমারের দল জেডিইউ-এর ছয় বিধায়ক এবং‌ তিন নির্দল বিধায়ক। তাই কনরাডের দলের সাত বিধায়কের সমর্থন খোয়ালেও আপাতত সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে চিন্তা নেই বিজেপির।

তবে তার পরেও অস্বস্তি থাকছে বিজেপির। কারণ রাজ্যে গোষ্ঠীহিংসার আবহে দলের সাত কুকি বিধায়ক বেসুরে বাজছেন। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে মেইতেই অধ্যুষিত ইম্ফলে গিয়ে তাঁরা বিধানসভার অধিবেশনেও যোগ দিচ্ছেন না। অন্য দিকে, মেইতেই গোষ্ঠীর বিধায়কেরা কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করার জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্রমাগত চাপ বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন। ওই বিধায়কদের দাবি, কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার আগেই কঠোর অবস্থান নিলে জিরিবাম জেলায় মেইতেই পরিবারের ছয় সদস্যকে অপহরণ এবং খুনের ঘটনা ঘটত না।

অন্য দিকে, মণিপুরের অশান্ত পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম-সহ সাত জেলায় আরও দু’দিনের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হচ্ছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত এই সাত জেলার বাসিন্দারা সীমিত ইন্টারনেট পরিষেবা পাবেন। তবে হিংসাদীর্ণ জিরিবাম জেলায় কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়নি। মণিপুরের জিরিবামে সিআরপিএফ জওয়ানদের মধ্যে গুলিযুদ্ধে ১০ কুকি জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল। মঙ্গলবার চুড়াচাঁদপুর জেলায় ওই ১০ জনকে ‘শ্রদ্ধা জানাতে’ কফিন নিয়ে মিছিল করবে কুকিদের সংগঠন। সেই মিছিল ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকছে।

Manipur N Biren Singh

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}