অসহায়: কলেজ স্ট্রিটে ম্যানহোল সাফাই করছেন এক কর্মী। নিজস্ব চিত্র
বিচারকের কাজ বিচার করা। প্রয়োজনে মামলার সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন তিনি। কিন্তু কোনও মামলায় কোনও বিচারক নিজে সাক্ষী হয়েছেন, এমনটা বড় শোনা যায় না। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট দীপাঞ্জন সেন তিন বছর আগে দায়ের হওয়া এমন এক মামলার রায় দিলেন, যে মামলার সাক্ষী ছিলেন বিচার ভবনের তৎকালীন দ্বিতীয় ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য।
সরকারি কৌঁসুলি অভিজিৎ চট্টোপাধ্য্যায় জানান, হেস্টিংস থানা এলাকায় একটি ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল খিদিরপুরের বাসিন্দা মহম্মদ গিয়াসউদ্দিনকে। জেলে থাকা অবস্থাতেই তার বিচার চলছিল বিচারক ভট্টাচার্যের আদালতে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আদালতে সাক্ষ্য দিচ্ছিলেন এক সাক্ষী। বিচারক ভট্টাচার্য তখন এজলাসে বসে। গিয়াসউদ্দিনকে নিয়ম মাফিক রাখা হয়েছিল আদালতের লক-আপে। ওই সাক্ষী বিচারকের নির্দেশে কাঠগড়ায় উঠে কিছুক্ষণ সাক্ষ্য দেওয়ার পরেই লক-আপ থেকে কোনও ভাবে বেরিয়ে গিয়ে তাঁর গলা টিপে ধরে গিয়াসউদ্দিন।
সরকারি কৌঁসুলি আরও জানান, গিয়াসউদ্দিনকে মারমুখী হয়ে হামলা করতে দেখে প্রাণভয়ে কাঠগড়া থেকে নেমে আদালত থেকে পালিয়ে যায় ওই সাক্ষী। পুলিশ কর্মীরা গিয়াসউদ্দিনকে পাকড়াও করতে গেলে সে বিচারকের সামনেই তাঁদের দিকে আদালতের ভিতরে থাকা কাঠের বেঞ্চ ছুড়ে মারে। তাতে চার পুলিশ কর্মী জখমও হন। এর পরে গিয়াসউদ্দিন নিজেও পালাতে চেষ্টা করে। পুলিশ জানায়, কোনও মতে তাকে ধরা হয়।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিচারক ভট্টাচার্য ওই ঘটনার সবিস্তার জানিয়ে সেই সময় হেয়ার স্ট্রিট থানায় এফআইআর দায়ের করান। আদালতের কাজে ও পুলিশ কর্মীদের সরকারি কর্তব্য করতে বাধা ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগে মামলা দায়ের হয় গিয়াসউদ্দিনের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির যে যে ধারায়
মামলা দায়ের হয়েছিল, তার শাস্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ সাত বছর বলে ম্যাজিস্ট্রেট পদ মর্যাদার বিচারক (এ ক্ষেত্রে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট) এত দিন বিচার করছিলেন। মাঝে এক দিন বিচারক ভট্টাচার্য এসে সেই মামলায় সাক্ষীও দিয়ে গিয়েছেন।
সরকারি কৌঁসুলি জানান, গিয়াসউদ্দিনকে এ দিন সাত বছর সশ্রম কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। লালবাজার সূত্রে খবর, ডাকাতির মামলায় ইতিমধ্যে দোষী সাব্যস্ত হয়ে জেলে রয়েছে গিয়াসউদ্দিন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy