বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কনভয় দেখে উচ্ছ্বাস। ছবি: পাপন চৌধুরী
এক বার চোখে দেখার ইচ্ছে। শুধু সেটুকুর জন্য জৈষ্ঠের কাঠফাটা রোদ্দুরে টানা ঘণ্টা দুয়েক রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে শহরবাসী থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। শনিবার দুপুর পৌনে ১২টা নাগাদ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কনভয় বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢোকার আগে পর্যন্ত বাড়তেই থাকল সেই ভিড়।
শনিবার আসানসোলে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সাম্মানিক ডি লিট দেওয়া হল হাসিনাকে। জায়গার অভাবে এই অনুষ্ঠানে স্বর্ণপদক ও শংসাপত্র প্রাপকেরা ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য পড়ুয়াদের প্রবেশাধিকার ছিল না। তবে হাসিনাকে দেখতে রাস্তার দু’দিকে সকাল ৯টা থেকেই পড়ুয়াদের ভিড় জমে। ছিলেন এলাকার বাসিন্দারাও। অস্বস্তিকর গরমের মধ্যেও টানা দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁরা।
প্রবেশের অনুমতি নেই জেনেও সাতসকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী সুজাতা ভান্ডারি। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে এক বার দেখতে চাই। ওঁকে শুভেচ্ছা জানাতে সকাল-সকাল চলে এসেছি।’’ দর্শন বিভাগের ছাত্রী সান্ত্বনা ঘোষ বলেন, ‘‘এমন ঐতিহাসিক মুহূর্ত আর দেখতে পাব কি না জানি না। তাই সাক্ষী থাকতে চাই।’’
শহরবাসীর উৎসাহও ছিল দেখার মতো। কাল্লা থেকে এসেছিলেন অশীতিপর শুভেন্দু বিশ্বাস। তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শহরের অতিথি। তাঁকে স্বাগত জানাতেই সকাল-সকাল হাজির হয়েছেন। হাসিনার কনভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে বাঁক নিতেই হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানাতে শুরু করলেন অনেকে। কেউ আবার মোবাইলে ছবি তুলে রাখলেন। কাচে ঢাকা গাড়ির ভিতর থেকে প্রধানমন্ত্রীও পাল্টা হাত নেড়ে পথের পাশে অপেক্ষায় থাকা শহরবাসীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন।
এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া ১৯ জন পড়ুয়াকে স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতেই তাঁদের হাতে এই সম্মান তুলে দেন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তী। পদক প্রাপকদের মধ্যে ছিলেন আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের সিভিক পুলিশের কর্মী সুদীপ পাল। তিনি দর্শনশাস্ত্র বিভাগে ৭৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়েছেন। আসানসোল উত্তর থানার গোবিন্দনগর এলাকার বাসিন্দা সুদীপ জানান, অভাবের সংসারে কষ্ট করে পড়াশোনা চালিয়েছেন। বাবা বছর কয়েক আগে মারা গিয়েছেন। বাড়িতে রয়েছেন এক দাদা ও মা। তিনি জানান, আসানসোলের কলেজ থেকে স্নাতক হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও সংসারের খরচ জোগাতে তাঁকে চাকরি নিতে হয়েছে। তবে তারই মাঝে সময় বের করে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন। এর পরে গবেষণা করাই লক্ষ্য, জানিয়েছেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy