উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে উৎসাহী করে তুলতে চায় কেন্দ্র।
বঞ্চনা বা নিগ্রহের প্রতিবাদ থেকে শুরু করে রসরসিকতা-সহ যাবতীয় বিষয়ের অন্যতম প্রধান প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠছে সোশ্যাল মিডিয়া।
অথচ রাজ্যের প্রায় কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ই এখনও তার ব্যবহার শুরু করেননি! কেন্দ্র চায়, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেদের বিভিন্ন কাজকর্মে সোশ্যাল মিডিয়াকে যথাসম্ভব ব্যবহার করুক।
২৭ জুলাই দিল্লিতে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। মূল আলোচ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার। তার আগে জানাতে বলা হয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ডিজিটাল প্রযুক্তি কতটা ব্যবহার করতে পেরেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সোশ্যাল মিডিয়াকে কতটা ব্যবহার করছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ‘স্বয়ম’ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম। সেখানে আপলোড করা হচ্ছে ম্যাসিভ ওপেন অনলাইন কোর্সেস (মুকস)। সেই সব পাঠ্যক্রম বিশ্ববিদ্যালয়ে চালুর নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। তাদের নির্দেশ, ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে কোর্সের কথা জানানো হোক।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতে প্রায় কেউই উদ্যোগী হয়নি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট নেই। এই বিষয়ে ফোন ও মেসেজ করেও উপাচার্যের বক্তব্য জানা যায়নি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য প্রদীপকুমার ঘোষ জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার এখনও তাঁরা শুরু করেননি তাঁরা। যা জানানোর, তা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটেই।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার জানান, শুক্রবার অনলাইন কোর্স চালু করার ব্যাপারে তাঁদের ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের বৈঠক হয়েছে।
তবে তাঁরা যা জানানোর, বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে জানান। ক্যাম্পাস জুড়েই রয়েছে ডিজিটাল নোটিস বোর্ড। তাতে তাঁরা সব তথ্য জানিয়ে দেন। ডিন অব স্টুডেন্টসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। কোচবিহার পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় তুলনায় নতুন। সেখানকার উপাচার্য দেবকুমার মুখোপাধ্যায় জানান, সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট নেই তাঁদেরও। ওয়েবসাইট রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে তথ্য পড়ুয়াদের জানানোর জন্য তাঁদের একটি অ্যাপ কিছু দিনের মধ্যেই চালু করা হবে।
পুরুলিয়া সিদো-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দীপকরঞ্জন মণ্ডলের বক্তব্য, ইউজিসি নানা রকম নির্দেশ দেয়। রাজ্য সরকারের কথাও মেনে চলতে হয় তাঁদের। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার বিষয়ে রাজ্যের উচ্চশিক্ষা সংসদের কাছ থেকে তাঁরা কোনও নির্দেশ পাননি। এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিঠি লিখছেন তিনি।
‘‘এই বিষয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রাজ্য কী নিয়ম চাইছে, তা জানালে আমাদের সুবিধা হয়,’’ বলেন দীপকবাবু। প্রেসিডেন্সির রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতিবাবুরও বক্তব্য, এ বিষয়ে উচ্চশিক্ষা সংসদের মতামত খুব গুরুত্বপূর্ণ। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যেতে পারে, এই আশঙ্কায় চিন্তিত বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বাসব চৌধুরী।
ব্যতিক্রম শুধু মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি বা ম্যাকাউট। তারা ইতিমধ্যে নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছে। উপাচার্য সৈকত মিত্র জানান, এ বার তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের টুইটার অ্যাকাউন্ট খুলতে চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy