Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

মেছো বেড়াল বাঁচাতে সমীক্ষাই অস্ত্র রাজ্যের

পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজ্য প্রাণী’র তকমা তাদের গায়ে। অর্থাৎ বাংলার পশুকুলের মুখ তারাই। কিন্তু আদর দূরের কথা, সেই মেছো বেড়ালদের কে কেমন আছে, খোঁজ রাখে না কেউ। বরং উঠতে-বসতে জোটে শুধু ঠেঙানি। এত দিনে তাদের নিয়ে সমীক্ষার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০৪:০০
Share: Save:

পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজ্য প্রাণী’র তকমা তাদের গায়ে। অর্থাৎ বাংলার পশুকুলের মুখ তারাই। কিন্তু আদর দূরের কথা, সেই মেছো বেড়ালদের কে কেমন আছে, খোঁজ রাখে না কেউ। বরং উঠতে-বসতে জোটে শুধু ঠেঙানি। এত দিনে তাদের নিয়ে সমীক্ষার উদ্যোগ শুরু হয়েছে।

পশুপ্রেমীদের প্রশ্ন, জলার ঝোপে বাসা বেঁধে থাকা মেছো বে়ড়ালদের হাল কি ফিরবে?

‘রাজ্য প্রাণী’র শিরোপা দেওয়া হলেও মেছো বেড়ালদের ব্যাপারে নিশ্চিত কোনও তথ্যই নেই রাজ্য সরকারের কাছে। শুক্রবার রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদ এবং পরিবেশপ্রেমী সংস্থা ‘সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট কমিউনিকেশন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোককান্তি সান্যাল জানান, মেছো বে়ড়ালদের উপরে সবিস্তার সমীক্ষার কাজ শুরু হচ্ছে। এ ব্যাপারে একটি প্রকল্পের অনুমোদন মিলেছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। ভারতীয় প্রাণী সর্বেক্ষণ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরাও এই কাজে যোগ দেবেন বলে পর্ষদ সূত্রের খবর।

মেছো বে়ড়াল থাকে প্রধানত জলা বা নদীর ধারে। খাদ্য মূলত মাছ। তবে কখনও-সখখনও তারা হাঁস-মুরগি-ছাগল মেরে ফেলে বলেও জানান প্রাণী-বিশেষজ্ঞেরা। সাধারণ ভাবে লোকালয় এড়িয়ে চলাটাই তাদের স্বভাব। কিন্তু মানুষের চোখে পড়ে গেলেই আপাতনিরীহ এই প্রাণীগুলির ভাগ্যে জোটে মার। এবং মৃত্যু।

আরও পড়ুন: টাওয়ার মিলিয়ে ঘুষের খোঁজে সিবিআই

পরিবেশবিদদের বক্তব্য, মেছো বেড়ালেরা পারতপক্ষে মানুষের ধারেকাছে মাড়াতে চায় না। কিন্তু মানুষই ক্রমাগত জলাশয় নষ্ট করতে থাকায় ওদের খাবার আর বাসস্থান নিয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। সেই জন্যই লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে ওরা। ঠিক যে-ভাবে গ্রামে চলে আসছে খাবারের অভাবে দিশাহারা বুনো হাতির দল। এই অবস্থায় মেছো বেড়ালকে সংরক্ষণের আওতায় আনার দাবিও তুলেছিলেন কেউ কেউ। প্রাণী-বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কোনও প্রাণীকে সংরক্ষণের আওতায় আনতে হলে তাদের সম্পর্কে সবিস্তার তথ্য থাকা দরকার। এ রাজ্যের সেটাই নেই। সমীক্ষা হলে পরবর্তী কালে মেছো বেড়ালকে সংরক্ষণের আওতায় আনা যেতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা।

শুধু মেছো বেড়াল নয়, এ রাজ্যের পরিবেশ ও জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে আরও কিছু প্রাণী ও গাছ সংরক্ষণ করা প্রয়োজন বলে জানান বিশেষজ্ঞেরা। অশোককান্তিবাবু জানান, মধ্যমগ্রামের বাদুতে একটি গাছে কয়েক হাজার বাদুড়ের বাস। স্থানীয় জীববৈচিত্র কমিটির মাধ্যমে তাদের সংরক্ষণের ব্যবস্থা হয়েছে।

রাজ্যের ভেষজ উদ্ভিদ পর্ষদ জানিয়েছে, এ রাজ্যে ওষধি গাছ প্রচুর। তাদের সাহায্যে নানা ধরনের রোগ সারানো সম্ভব। কিন্তু সেই সব ভেষজ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা না-থাকায় সেগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই ধরনের গাছগাছড়া সংরক্ষণের কাজও চলছে। জীববৈচিত্র সংরক্ষণের কথা বলা হলেও অনেকের বক্তব্য, এই কাজে সরকারি অনুদান বা অর্থের বরাদ্দ খুবই কম। এ কথা মেনে নিয়ে জাতীয় জীববৈচিত্র কর্তৃপক্ষের উপদেষ্টা সুজাতা অরোরা জানান, সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই কাজ চলবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Fishing Cat West Bengal Survive
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE