Advertisement
১৩ নভেম্বর ২০২৪
Overloaded Trucks

‘ওভারলোডিং’ দমনে নির্দেশিকা

‘ওভারলোডিং’-এর ফলে গ্রামীণ রাস্তার চূড়ান্ত ক্ষতি হয়। তা নিয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হওয়া ভিডিয়ো বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা  হয়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শুভাশিস ঘটক ও প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০৪:৫৬
Share: Save:

অভিযোগ নতুন নয়। এমনকি, লকডাউন পর্বেও অভিযোগে ছেদ পড়েনি। আর বিধানসভা ভোটের আগে সে সবের জন্য বিড়ম্বনা বাড়াতে চায় না রাজ্য প্রশাসন। তাই ‘ওভারলোডিং’ নিয়ে পদক্ষেপ করতে চলেছে তারা। তার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে অবৈধ বালি খাদানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের জন্য ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। গ্রামীণ রাস্তায় ‘ওভারলোড’ হওয়া গাড়ির অবাধ বিচরণ মাথাব্যথার কারণ হচ্ছে, তা-ও মানছে তারা। পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার এবং থানার দায়িত্বপ্রাপ্তদের পাঠানো নির্দেশিকায় সেই ইঙ্গিত স্পষ্ট। এ বিষয়ে সোমবার তাঁদের কাছে নির্দেশ পাঠিয়েছেন রাজ্যের এডিজি (ট্র্যাফিক ও রাস্তা সুরক্ষা)
বিবেক সহায়।

‘ওভারলোডিং’-এর ফলে গ্রামীণ রাস্তার চূড়ান্ত ক্ষতি হয়। তা নিয়ে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি হওয়া ভিডিয়ো বৈঠকে জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের মধ্যে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সেখানে মুখ্যসচিব ছাড়াও রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং পরিবহণ, পূর্ত, সেচ দফতরের কর্তারা ছিলেন। ওই বৈঠকের সূত্র ধরে ‘ওভারলোডিং’ নিয়ে জেলাশাসক, আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিকদের (আরটিও) সঙ্গে কথা বলে কঠোর পদক্ষেপের জন্য থানা এবং ট্র্যাফিক গার্ডকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রধান রাস্তা থেকে বালি খাদান বা ইটভাটার সংযোগকারী রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ বা দেখাশোনার জন্যেও ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এডিজির (ট্র্যাফিক ও রাস্তা সুরক্ষা) নির্দেশিকায়। কোনও লরি বা ট্রাক অনুমোদনহীন ডালা ব্যবহার করছে কি না, তা দেখতে হবে মোটর ভেহিকেল অফিসারদের।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বালি খাদান নিয়ে নানা অভিযোগ আসে। তা নিরসনে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করেছিল রাজ্য সরকার। তার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়নি, তা মানেন প্রশাসনিক কর্তারা। জানা গিয়েছে, অনেক ক্ষেত্রে অনুমোদন নিয়েই খাদানে পৌঁছন ব্যবসায়ীরা এবং সেই অনুমোদনকে হাতিয়ার করে বৈধতা লঙ্ঘন করেন।

রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বালি খাদান আর ‘ওভারলোডিং’ পিঠোপিঠি চলে। আর তা নিয়ে সমস্যা রয়েছেই। তবে ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বীরভূম, বর্ধমানের পরিস্থিতি তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে বলে খবর। সম্প্রতি অরণ্য জেলায় আরটিও’র নজরদারি এড়াতে অন্য রাস্তা দিয়ে বালির গাড়ি চলাচল করছে বলেও সূত্রের দাবি। সোমবারে ঝাড়গ্রাম ব্লকের চুবকা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাকুড়িয়াপাল গ্রামে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন আধিকারিকরা। চাষযোগ্য জমি লাগোয়া এলাকা থেকে কংসাবতী নদীর বালি তোলার অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়েছিলেন তাঁরা। রবিবার বাঁকুড়ার ইন্দাসে অতিরিক্ত পাথর নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে গাড়ি আটকান স্থানীয়েরা। প্রশাসন সূত্রের দাবি, তাদের নজর এড়াতেই অতিরিক্ত বালি, ইট, সামগ্রী বহনকারী গাড়ি গ্রামীণ রাস্তা ব্যবহার করছে। এই ধরনের বিভিন্ন অভিযোগের ক্ষেত্রে ‘প্রভাবশালী’দের ছায়া থাকায় তা থেকে দূরে থাকা শ্রেয় বলে অনেকে মনে করেন। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ‘ওভারলোডিং’ বাড়ছে বলে অস্বীকার করেন না প্রশাসনের বিভিন্ন অংশের কর্তারা।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সামনে ভোট রয়েছে। শাসক দলের উন্নয়নের অন্যতম অস্ত্র রাস্তা। বর্ষার প্রথমেই বিভিন্ন গ্রামীণ এলাকার রাস্তার হাড় বেরোতে শুরু করেছে। তার মধ্যে গাড়ি চললে আরও খারাপ হবে পরিস্থিতি। সেই কারণে আগেভাগেই সতর্ক হল প্রশাসন।

অন্য বিষয়গুলি:

Overloaded Trucks Roads
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE