WB Election: History of the West Bengal Legislature can be tracked back to 19th century dgtl
West Bengal Chief minister
‘প্রাইম মিনিস্টার’ হল মুখ্যমন্ত্রী, ৬৩% আসন জিতে রাজ্যে প্রথম বিধানসভা জেতে কংগ্রেস
ব্রিটিশ শাসনে বেঙ্গল প্রভিন্সের যে সরকার, তার প্রধানকে বলা হত ‘প্রাইম মিনিস্টার অব বেঙ্গল’।
শেষ আপডেট: ০২ মে ২০২১ ০৮:১২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১২
লড়াই এখন নীলবাড়িকে ঘিরে হলেও বিধানসভা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতার শিকড় ছড়িয়ে কিন্তু সুদূর অতীতে। বাংলার বিধানসভার ঔপনিবেশিক গন্ধমাখা জন্মবৃত্তান্ত লুকিয়ে আছে ১৯ শতকের শেষ দিকে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিলস অ্যাক্ট ১৮৬১ সনের সেই আইন মোতাবেক ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দের ১৮ জানুয়ারি ভারতের তৎকালীন গভর্নর জেনারেল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলার ‘লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি’।
০২১২
সেই আইনসভায় লেফ্টেন্যান্ট গভর্নরের উপস্থিতি ছিল বাধ্যতামূলক। এ ছাড়াও থাকতেন মনোনীত সদস্যরা। ১২ জন সদস্য নিয়ে পথচলা শুরু করা এই আইনসভার কলেবর এবং ক্ষমতা, দুই-ই ক্রমে বাড়তে থাকে সময়ের সঙ্গে।
০৩১২
অ্যাক্ট অব ১৯১৯ অনুসারে ১৯২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয় ‘দ্য বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’। এর পর ১৯৩৬ সালে ভারত সরকারে আইন অনুযায়ী পূর্ববর্তী অ্যাসেম্বলি এবং পরবর্তী কাউন্সিল, দু’টিই বাংলার আইনসভার দু’টি কক্ষ হিসেবে চিহ্নিত হয়।
০৪১২
এর মধ্যে লেজিসলেটিভ কাউন্সিল ছিল চিরকালীন। এর সদস্যসংখ্যা নির্দিষ্ট ছিল ৬৩ থেকে ৬৫-র মধ্যে। অন্য দিকে লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্যসংখ্যা নির্ধারিত ছিল ২৫০-এ। প্রতি ৫ বছর পরে এর মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে বলে নিয়ম জারি করা হয়।
০৫১২
ব্রিটিশ শাসনে বেঙ্গল প্রভিন্সের যে সরকার, তার প্রধানকে বলা হত ‘প্রাইম মিনিস্টার অব বেঙ্গল’। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগে পর্যন্ত এই নিয়ম বলবৎ ছিল। ১৯৩৭ সালে ব্রিটিশ বাংলায় মিলিজুলি সরকারে ‘প্রাইম মিনিস্টার’ ছিলেন আব্দুল কাসেম ফজলুল হক। তিনিই প্রথম এই পদে আসীন হন।
০৬১২
এর পর খাজা নাজিমুদ্দিন এবং হুসেন শাহিন সুরাবর্দীও ছিলেন ব্রিটিশ বাংলার ‘প্রাইম মিনিস্টার’। কিন্তু কোনও বারই সরকার দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। প্রসঙ্গত, ব্রিটিশ শাসনের এই আইনসভার সদস্যদের মধ্যে ব্রিটিশদেরই প্রাধান্য ছিল। দেশীয় সদস্য বলতে সেখানে দেখা যেত শুধুমাত্র অভিজাত বংশের রাজন্যবর্গ এবং জমিদার শ্রেণির প্রতিনিধিদের। স্বাধীনতা লাভের কয়েক বছর আগে থেকে এই ছবির আমূল পরিবর্তন হতে শুরু করে।
০৭১২
স্বাধীনতার পর লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্যরা প্রথম বারের জন্য মুখোমুখি হন ১৯৪৭ সালের ২১ নভেম্বর। গর্ভনমেন্ট অব ইন্ডিয়া অ্যাক্ট ১৯৩৫ অনুযায়ী বিলুপ্ত হয়ে যায় বেঙ্গল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল। বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলি হয় পশ্চিমবঙ্গের আইনসভা।
০৮১২
স্বাধীনতার সঙ্গে সঙ্গে আরও একটি পরিবর্তন হয়েছিল। ‘প্রাইম মিনিস্টার’- তকমার পরিবর্তে পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক প্রধান এ বার সূচিত হলেন ‘মুখ্যমন্ত্রী’ নামে। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট প্রফুল্লচন্দ্র ঘোষ প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র এবং শিক্ষা দফতরের দায়িত্বও ছিল তাঁর হাতে।
০৯১২
১৯৫২ সালে প্রথম বার সাধারণ লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় পশ্চিমবঙ্গে। ভোটগ্রহণ পর্ব শুরু হয়েছিল ১৯৫২ সালের ৩ জানুয়ারি। এ রাজ্য থেকে লোকসভার মোট আসন ছিল ২৪টি। বিধানসভায় আসনসংখ্যা ছিল ২৩৮।
১০১২
বাংলায় প্রথম সাধারণ নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ১ কোটি ২৮ লক্ষ জন। বিধানসভায় ২৩৮টি আসনের মধ্যে ১৫০টি আসনে জয়ী হয়েছিল কংগ্রেস। মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের মধ্যে সিপিআই ২৮টি, কিষাণ মজদুর প্রজা পার্টি ১৫টি, ফরওয়ার্ড ব্লক (মার্ক্সসিস্ট গ্রুপ) ১১টি এবং ভারতীয় জনসংঘ পেয়েছিল ৯টি আসন।
১১১২
সে বার লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল একইসঙ্গে। লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৩৪টি আসনের মধ্যে ২৪টি আসনে জয়ী হয় কংগ্রেস। সিপিআই ৫টি, জনসংঘ ২টি এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল ও নির্দল প্রার্থী মিলিয়ে জয়ী হন বাকি ৩ আসনে।
১২১২
১৯৫১ সালের নির্বাচনের পরে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকেন বিধানচন্দ্র রায়ই। তিনি ১৯৪৮ সালের ২৩ জানুয়ারি থেকে ১৯৬২ সালের ১ জুলাই অবধি আমৃত্যু ছিলেন এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দিকে, পরিবর্তন হয়নি প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতেও। ১৯৫২ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরেও জওহরলাল নেহরুই ছিলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট থেকে ১৯৬৪ সালের ২৭ মে পর্যন্ত তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রিত্বের দায়িত্বে।