E-Paper

সমুদ্রগর্ভে একের পর এক ঘাট, সাগরমেলা শুরুর মুখে আতঙ্কিত তটের ব্যবসায়ীরা 

ধীরে ধীরে সমুদ্রের গ্রাসে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ঘাট। তাই গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর আগে মনে সুখ নেই তটের ছোট ব্যবসায়ীদের।

অসহায়: পার ভাঙার জেরে দুর্দশার কথা বলছেন এক ব্যবসায়ী। গঙ্গাসাগরে।

অসহায়: পার ভাঙার জেরে দুর্দশার কথা বলছেন এক ব্যবসায়ী। গঙ্গাসাগরে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫ ০৬:৪২
Share
Save

বিভিন্ন রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্যে গঙ্গাসাগর প্রাঙ্গণে ঘুরেফিরে বাজছে ‘ওগো নদী আপন বেগে পাগলপারা...’। ঘটনাচক্রে, গানের প্রথম লাইনটি এখানে প্রাসঙ্গিকও হয়ে উঠেছে। যার প্রভাবে সমস্যায় রয়েছেন বহু মানুষ।

তার কারণ, ধীরে ধীরে সমুদ্রের গ্রাসে চলে যাচ্ছে বিভিন্ন ঘাট। তাই গঙ্গাসাগর মেলা শুরুর আগে মনে সুখ নেই তটের ছোট ব্যবসায়ীদের। বরং, পুণ্যস্নানের দিনে ভরা কটাল থাকার কারণে তাঁরা ব্যবসা করতে বসতে পারবেন কি না, তা ভেবেই ঘুম ছুটেছে তাঁদের। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সাগরে এসে বার বার সমুদ্রের এগিয়ে আসার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন।

আগামী কাল, বৃহস্পতিবার কলকাতার আউট্রাম ঘাট থেকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হওয়ার কথা গঙ্গাসাগর মেলার। ১০ তারিখ, শুক্রবার থেকে মেলা শুরু হয়ে যাবে। ঘাটের কাছে অস্থায়ী দোকান তৈরির জন্য বাঁশ বাঁধার কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ। দু’-এক দিনের মধ্যে সেখানে শুরু হয়ে যাবে পুরোদস্তুর কেনাবেচা। কিন্তু, গঙ্গার ভাঙনের সমস্যায় তটের ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম সঙ্কটে। ঘাটে প্রশাসনের তরফে বণ্টন হওয়া জায়গাতেও বসার অধিকার পাননি তাঁরা।

প্রচেষ্টা: গঙ্গাসাগরে পার ভাঙা আটকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে কাঠের গুঁড়ি ও ফেলা হয়েছে বালির বস্তা।

প্রচেষ্টা: গঙ্গাসাগরে পার ভাঙা আটকাতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বসানো হয়েছে কাঠের গুঁড়ি ও ফেলা হয়েছে বালির বস্তা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

গঙ্গা এখানে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে। একাধিক ঘাটেই রয়েছে ভাঙনের সমস্যা। বহু মানুষের তটের উপরে বসে ব্যবসার জায়গা অনেক দিন ধরেই চলে যাচ্ছে সমুদ্রের গর্ভে।

কচুবেড়িয়ার বাসিন্দা জামসার শাহ ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা বিবি রবিবার বিকেলের পরে হতাশ চোখে ঘুরে দেখছিলেন ৫ নম্বর ঘাটের আশপাশ। সেখানে জামসার দোকান দেন। ভরা কটালে ডালা বসানোর জায়গা জলে ডুবে গেলে জিনিসপত্র কোথায় তুলে রাখবেন, তা নিয়েই চিন্তিত ওই দম্পতি। তটের ছোট ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ নিয়ে ক্ষোভও দেখা গেল।

জামসার জানালেন, সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় দানার সময়ে ৫ নম্বর ঘাটে জল ধাক্কা মেরেছিল। তার পর থেকেই ভরা কটালে ঘাটের কাছে জল চলে আসে। তখন দোকানও ভেসে যাওয়ার অবস্থা হয়। এই পরিস্থিতিতে পুণ্যস্নানের দিনে ভরা কটালের কারণে তাঁদের ব্যবসা শিকেয় উঠবে না তো? সেটা ভেবেই চিন্তিত সকলে।

সমুদ্রের গ্রাসে তট হারিয়ে যাওয়ার সমস্যা ঘিরে বহু দিন ধরেই জেরবার স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এখানে এসে দেখা গেল, ৫ নম্বর ঘাটে নদীর ধার ঘেঁষে শালবল্লা দিয়ে বাঁধ তৈরি হচ্ছে। তপোবন গ্রামের বাসিন্দা আশিস গিরি জানালেন, মেলার সময়ে তটের উপরে ফুল-মালা, পুজোর সামগ্রী, চা-জলখাবার সমেত বিভিন্ন ধরনের ছোটখাটো দোকান দিয়ে গরিব মানুষেরা উপার্জনের চেষ্টা করেন। ২ নম্বর ঘাটে দোকান ছিল আশিসের। সাগর সেই ঘাট গিলে নেওয়ায় আর পুনর্বাসন পাননি তিনি। ফলে, ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন।

আশিস, জামসারদের মতো অনেকেই জানাচ্ছেন, ঘাটের উপরের অংশে তাঁদের বসার অধিকার নেই। আবার, জলে তট ডুবে গেলে তাঁদের মালপত্র সরিয়ে অন্যত্র রাখারও সুযোগ নেই। পুলিশ তাড়া করে সরিয়ে দেবে। জামসার বলেন, ‘‘এই সময়টার জন্য সারা বছর অপেক্ষা করে থাকি। দানার পরে বহু বার প্রশাসনের দরজায় ঘুরেছি অন্যত্র বসার জায়গা দেওয়ার আবেদন জানিয়ে। কিন্তু, কোনও লাভ হয়নি। ভরা কটালের সময়ে কী হবে জানি না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

gangasagar River sea

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।