চিকিৎসায় ত্রুটি-গাফিলতির জন্য আদালত বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বা দিচ্ছে। এ বার সর্বোচ্চ আদালত জানতে চাইছে, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে ঠিক কেমন ধরনের নিয়মবিধি মেনে চলা হচ্ছে।
বিশেষত বিভিন্ন হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট বা সিসিইউ-এ কী চিকিৎসা বিধি মেনে চলা হয়, সেটি হলফনামার আকারে ছ’সপ্তাহের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এ রাজ্যেরই এক হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগের একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত বুধবার বিচারপতি দীপক মিশ্র ও বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দিয়েছে।
অসিতবরণ মণ্ডল নামে কল্যাণীর এক বাসিন্দা ওই শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অসিতবাবুর অভিযোগ অনুযায়ী তাঁর পুত্রবধূ সুনন্দা মণ্ডল ২০১৩ সালে দ্বিতীয় বারের জন্য গর্ভবতী হন। তিনি প্রথম থেকেই কল্যাণীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। কিছু দিনের মধ্যেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। অভিযোগ, রোগিণীর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি সত্ত্বেও হাসপাতালের তরফ থেকে তাঁর বিশেষ কোনও যত্নই নেওয়া হয়নি। প্রসবের জন্য তিনি ১৬ ডিসেম্বর হাসপাতালে ভর্তি হন।
প্রসবের পরে সুনন্দাদেবীর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। তখন তাঁর চিকিৎসা শুরু হয় অন্য চিকিৎসকের অধীনে। এর পরে তাঁকে কলকাতার ইএম বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ২৯ ডিসেম্বর সেখানেই তিনি মারা যান।
অসিতবাবুর অভিযোগ, অবস্থার অবনতি হতে থাকলে কী ধরনের চিকিৎসা দরকার, সেই বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনও ধারণাই ছিল না কল্যাণীর ওই হাসপাতালের চিকিৎসকদের। প্রাণ দিয়ে তাঁদের সেই অজ্ঞতারই মূল্য চোকাতে হয়েছে তাঁর পুত্রবধূকে। অসিতবাবু ন্যাশনাল কনজিউমার ডিসপিউট রিড্রেসাল কমিশনে (এনসিডিআরসি) কল্যাণীর ওই বেসরকারি হাসপাতাল এবং সেখানকার স্ত্রীরোগ বিভাগের চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এনসিডিআরসি যে-রায় দেয়, তাতে তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। অসিতবাবু শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন।
কী বলছে স্বাস্থ্য দফতর?
রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, সরকারি হাসপাতালে ‘স্ট্যান্ডার্ড ট্রিটমেন্ট প্রোটোকল’ রয়েছে। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালের ক্ষেত্রে তেমন বিধি চালু করার এক্তিয়ার নেই রাজ্যে সরকারের। গোটা বিষয়টিই তাঁরা সর্বোচ্চ আদালতকে জানাবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy