বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণা হয়নি। তার আগে বিভিন্ন এলাকায় শুধু রুট মার্চ করেই ক্ষান্ত থাকছে না কেন্দ্রীয় বাহিনী। এলাকার আইন শৃঙ্খলা সম্পর্কেও খোঁজ খবর নেওয়া শুরু করেছেন তাঁরা।
সারদা কাণ্ডে জেলবন্দি বিধায়ক মদন মিত্রের খাসতালুক কামারহাটিতে গিয়ে বৃহস্পতিবার সেই কাজই করলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এমনকী মানুষের অভিজ্ঞতার বিবরণ ভিডিও রেকডিংও করেছেন তাঁরা।
এ দিন বিকেলে কামারহাটি বিধানসভা এলাকায় রুট মার্চ করার সময়েই বাসিন্দাদের থেকে বিগত লোকসভা ভোট ও পুরভোটের সম্পর্কে জানতে চান কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা। বেলঘরিয়া থানায় এখনও পর্যন্ত এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছে। এ দিন বিকেলে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারেটের কর্তা ও বেলঘরিয়া থানার ওসিকে সঙ্গে নিয়ে গোটা এলাকায় রুট মার্চ শুরু করে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কামারহাটির বিভিন্ন রাস্তা ঘোরার সময়ে মাঝেমধ্যেই থমকে দাঁড়িয়েছেন জওয়ানরা। নিজেদের প্রয়োজন মতো কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। তবে বেশির ভাগ মানুষই তেমন ভাবে মুখ খুলতে চাননি। এ দিন কামারহাটি গ্রাহাম রোডের পাঁচ মাথা মোড়ে দুই ব্যক্তির কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা জানতে চান, কেমন ভোট হয়? তাঁরা ভোট দিতে পারেন কি না? প্রশ্নের উত্তরে ওই বাসিন্দারা জানান, ‘‘ভোট দিতে
গেলে বলা হয়, তোমার ভোট হয়ে গিয়েছে।’’ এর পরেই ওই বাসিন্দারা স্থানীয় বিধায়কের অনুগত ‘দাদা’দের নাম করে অভিযোগ জানাতে থাকেন। সব কিছু শোনার পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক অফিসার অভয় দিয়ে বলেন, ‘‘ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই।’’ তাঁর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যারাকপুরের এক অ্যাসিস্ট্যান্ট পুলিশ কমিশনার দাবি করেন, ‘‘অসুবিধা হলে ওঁদের বলবেন। আমাদেরও বলবেন।’’
এ দিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বাসিন্দাদের সব কথাবার্তা ভিডিও রেকডিং করা হয়। তবে কামারহাটিতে ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দেন বলেই দাবি করেন পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের গোপাল সাহা। তিনি বলেন, ‘‘কামারহাটির মানুষ নিজের ভোট নিজেই দেন। আর তাই
বামদের লাল দুর্গ ভেঙে চুরমার হয়েছে। কে কি অভিযোগ করেছেন বলতে পারব না। তবে মানুষ ভোট দিতে পারেন কি না, তা কয়েক দিন পরেই সবাই দেখতে পাবে।’’ তৃণমূলের আর এক কাউন্সিলর বিমল সাহা বলেন, ‘‘আমাদের বিধায়ক সাংসদরা লুঠের ভোটে জেতেননি। মানুষের ভোট পেয়েই তাঁরা জয়ী হয়েছেন। আর তাঁদের কাজে মানুষ খুশি হয়েই পুরভোটে তৃণমূলকে জিতিয়েছে।’’
কমিশন সূত্রের খবর, শুধু কামারহাটি নয়। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে যে এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী রুট মার্চ শুরু করেছেন, সেখানেই তাঁরা স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে সমস্ত কিছু জানার চেষ্টা করছেন। এই কথোপকথনের ভিডিও রেকর্ডিং কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হবে বলে জানান কেন্দ্রীয় বাহিনীর এক কর্তা। কমিশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এ বারে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের উপর যাতে পুরোপুরি ভাবে নির্ভর করতে না হয়, তার জন্যই মাস দুয়েক আগে প্রতিটি বিধানসভা এলাকায় চলে এসেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। এই সময়কালে সব কিছু বুঝে নিয়ে ভোটের সপ্তাহ তিনেক আগে যখন মূল বাহিনী আসবে, তখন তাঁদের নিজেদের মতো করে পরিচালনা করবেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর কর্তারা, যাঁরা এখনই এলাকায় চলে এসেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy