গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ বার তাতে মহাকাব্যের মিশেল দিতে চাইছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। সোমবার জন্মাষ্টমী তিথি। সে দিনই পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সেই উপলক্ষে তারা নানা কর্মসূচি নিয়েছে গোটা দেশে। তবে বাংলায় যে ‘প্রতিবাদের আবহ’, তাতে সাংগঠনিক প্রচারের কর্মসূচির পরিবর্তে অন্য মিছিল করতে চায় পরিষদ। সেই দিনে ‘বিচার চাই’ দাবি নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছোটদের ‘কৃষ্ণ’ সাজিয়ে মিছিল করার পরিকল্পনা করছে তারা। সারা রাজ্যে সেই প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। তবে সেই কৃষ্ণ ব্রজের নন। তিনি ‘বীর’ এবং ‘নারীর সম্ভ্রম রক্ষাকারী’। তিনি কুরুক্ষেত্রের কৃষ্ণ। যে কৃষ্ণের এক হাতে সুদর্শন চক্র এবং অন্য হাতে পাঞ্চজন্য শঙ্খ।
পরিষদের পরিকল্পনা সফল হলে সোমবার কলকাতা-সহ সব জেলায় হবে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ। সেই কর্মসূচিতে কোথাও সংগঠনের দফতরের সামনে ছোটদের কৃষ্ণ সাজিয়ে, কোথাও আবার সেই ছোট ছোট কৃষ্ণদের নিয়ে মিছিল করার প্রস্তুতি চলছে। বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ শনিবার বলেন, ‘‘সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ পর্যন্ত গোটা দেশে নানা কর্মসূচি রয়েছে। তারই অঙ্গ হবে শ্রীকৃষ্ণের আহ্বান। ধর্মরক্ষার জন্য এখন তাঁকেই দরকার। সাধারণ মানুষের আন্দোলনে তাঁর শক্তিই প্রয়োজন। কারণ, মহাভারতে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের চেষ্টা করা হলে তিনিই সহায় হয়েছিলেন। এখন নারীর সম্ভ্রমরক্ষার জন্য চাই জনতারূপী শ্রীকৃষ্ণকেই।’’
তবে কৃষ্ণের সঙ্গে রাধাকে চান না শচীন্দ্রনাথেরা। তিনি বলেন, ‘‘বাঙালি শক্তির তুলনায় ভক্তিতে বেশি আশ্বাস রাখে। কিন্তু এখন যে পরিস্থিতি, তাতে রাধাকান্ত কৃষ্ণ নন, প্রয়োজন কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে অর্জুনকে পথ দেখানো কৃষ্ণের। তাঁর সাধনা করতে হবে। এটাই আমরা বলতে চাই।’’ তিনি একই সঙ্গে জানান, শুধু ‘বিচার’ চাওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নয়। শচীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘নীতিশিক্ষার জন্য ধর্মস্থাপন প্রয়োজন। আমরা জানি, ধর্ম সংস্থাপনের জন্য যুগে যুগে অবতার রূপে ভগবান আসেন। সেই ‘সম্ভবামি যুগে যুগে’ মন্ত্র নিয়েই আমরা ধর্ম স্থাপনার আন্দোলন চাই। যা হলে নারীর উপরে নির্যাতন, নারীর অসম্মান বন্ধ হবে।’’
১৯৬৪ সালের জন্মাষ্টমীর দিনেই জন্ম হয়েছিল পরিষদের। এ বার ৬০তম জন্মদিনে পরিষদের সব চেয়ে বড় সাফল্য অযোধ্যায় রামমন্দির প্রতিষ্ঠা নিয়ে প্রচারের পরিকল্পনা রয়েছে গোটা দেশে। তবে পশ্চিমবঙ্গে সে পথে না গিয়ে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে অংশ নিতে চায় পরিষদ। এখনও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের যা পরিকল্পনা, তাতে শুধু বাংলা নয়, কলকাতার আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদকে ‘জাতীয়’ চেহারা দিতে চায় তারা। দেশের সব রাজ্যেই জন্মাষ্টমীর দিন ‘কৃষ্ণ সাজো’ কর্মসূচি পালিত হবে। এক সপ্তাহ ধরে চলবে পরিষদের প্রতিষ্ঠার হীরক জয়ন্তী পালন। তার মধ্যে ২৯ অগস্ট দিনটিকে ‘নারী সশক্তিকরণের প্রচার’ হিসাবে রাখা হয়েছে। সেই দিনও বাংলা-সহ গোটা দেশে নানা ধরনের কর্মসূচি থাকবে। তার মধ্যেও আরজি কর-কাণ্ড টেনে আনার ভাবনা রয়েছে পরিষদের। শচীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘গোটা দেশেই আমরা বাংলার কথা বলব। কী ভাবে সারদা মায়ের বাংলা এক মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলে নারী নির্যাতনের নরক হয়ে উঠেছে, তা আমরা গোটা দেশকে জানাতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy