গ্রেফতারের হুঁশিয়ারির পরেই কলকাতা হাই কোর্টে হাজিরা দিলেন শিক্ষা দফতরের কমিশনার এবং মালদহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। আদালতের নির্দেশ কেন কার্যকর করা হয়নি, তা নিয়ে শুক্রবার ওই দুই আধিকারিক নিজেদের বক্তব্য জানান। তার পরেই আদালত জানায়, দুই আধিকারিকের মতামত ভিন্ন। তা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। হাজিরা দিয়ে কমিশনার জানান, ৩১২ জন প্রার্থীর নামের প্যানেল প্রকাশিত হয়েছে। তাঁদের দ্রুত নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘‘আপনাদের বক্তব্য পরস্পর বিরোধী। যথেষ্ট হয়েছে। এ বার আদালতের নির্দেশ কার্যকর করুন।’’
২০০৯ সালে প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মালদহ জেলায় শূন্যপদে নিয়োগের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। মামলাকারীদের আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্তের সওয়াল, আদালত একাধিক বার নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও কর্তৃপক্ষ ওই বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করেননি। এখন অ্যাডমিট কার্ডের সমস্যা নিয়ে একটি যুক্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, আদালতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন ওই আধিকারিকেরা। হাই কোর্ট নির্দেশ দেওয়ার পরেও এত বছরে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় চাকরি দেওয়া হল না। এখন নতুন যুক্তি আসলে চাকরি না দেওয়ার অজুহাত। বিচারপতি মান্থার প্রশ্ন, ‘‘ওই চাকরিপ্রার্থীরা আত্মঘাতী হলে কি চাকরি দেওয়া হবে?’’
আরও পড়ুন:
বুধবার হাই কোর্ট জানিয়েছিল, বার বার বলা সত্ত্বেও আদালতের নির্দেশ কার্যকর হয়নি। চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি। বিচারপতি বলেছিলেন, ওই দুই আধিকারিককে হলফনামা দিয়ে জানাতে হবে, এর পরেও কেন তাঁদের গ্রেফতার করা হবে না? কেন তাঁদের তিন মাসের জেল হবে না? ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করে আদালত। তার পরেই শুক্রবার হাজিরা দিয়ে দুই আধিকারিক দ্রুত নির্দেশ কার্যকর করার কথা জানান। তাঁরা জানান, প্যানেলের সকলকে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে।
মালদহ এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকের কিছু শূন্যপদে নিয়োগ আটকে রয়েছে। ওই আবেদনকারীরা ২০০৯ সালের প্রার্থী। এই সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি হাই কোর্ট নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নানা অজুহাতে নিয়োগ আটকে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। একাধিক বার হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি মান্থার এজলাসে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। তিনি রাজ্যের শিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যান এবং ওই দুই জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এ বিষয়ে জবাব তলব করেন। তাঁদের হাজিরার নির্দেশ দিয়ে হুঁশিয়ারিও দেন। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার হাজিরা দেন দুই আধিকারিক।