হাই কোর্টের অসন্তোষের মুখে পড়লেন শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। একাধিক বার হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ২০০৯ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু প্রার্থী চাকরি পাননি। সেই সংক্রান্ত মামলায় শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। অভিযোগ, বার বার আদালতের নির্দেশ অমান্য করছেন তাঁরা। কোনও না কোনও অজুহাত দেখিয়ে নিয়োগ বন্ধ করে দিচ্ছেন। আদালতের পর্যবেক্ষণ, ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন ওই আধিকারিকেরা। চাকরি না-দেওয়ার জন্য অজুহাত দিচ্ছেন। তাঁদের কাছ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জবাব তলব করা হয়েছে। আদালতে সশরীরে হাজিরাও দিতে বলা হয়েছে।
মালদহ এবং উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকের কিছু শূন্যপদে নিয়োগ আটকে রয়েছে। ওই আবেদনকারীরা ২০০৯ সালের প্রার্থী। এই সংক্রান্ত মামলায় সম্প্রতি হাই কোর্ট নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু দেড় বছর ধরে নানা অজুহাতে নিয়োগ আটকে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। একাধিক বার হাই কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাসে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন। তিনি রাজ্যের শিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যান এবং ওই দুই জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে এ বিষয়ে জবাব তলব করেছেন।
আরও পড়ুন:
নিয়ম অনুযায়ী, আদালতের নির্দেশ না-মানলে এই শিক্ষা আধিকারিকদের কারাবাসের শাস্তি হওয়া উচিত। এ ক্ষেত্রে কেন তা হবে না, জানতে চেয়েছেন বিচারপতি। আগামী শুক্রবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সে দিন সশরীরে এজলাসে হাজিরা দিতে হবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা আধিকারিকদের।
নিয়োগ না-করার বিষয়ে বর্তমানে প্রার্থীদের অ্যাডমিট কার্ডের সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন কর্তৃপক্ষ। আদালতের বক্তব্য, এটি নতুন অজুহাত। মামলাকারীদের তরফে বুধবার আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত হাই কোর্টে সওয়াল করেন। তিনি জানান, আদালত একাধিক বার এই প্রার্থীদের নিয়োগ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও পদক্ষেপ করেননি। এখন অ্যাডমিট কার্ডের সমস্যা নিয়ে একটি যুক্তি খাড়া করা হচ্ছে। বিচারপতি মান্থার পর্যবেক্ষণ, আদালতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন ওই আধিকারিকেরা। তাঁদের এই নতুন যুক্তি আসলে চাকরি না-দেওয়ারই অজুহাত। ১৬ বছর ধরে চাকরির জন্য ঘুরছেন ওই প্রার্থীরা। তাঁরা আত্মঘাতী হলে কি চাকরি দেওয়া হবে? প্রশ্ন করেন বিচারপতি। শুক্রবার আদালতে গিয়ে এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানাতে হবে শিক্ষা দফতরের চেয়ারম্যান এবং ওই মালদহ ও উত্তর ২৪ পরগনার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে।