ফাইল চিত্র।
সারদা-নারদা কাণ্ডে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতারের দাবি নিয়ে মঙ্গলবার রাজ্যপালের কাছে যাচ্ছে তৃণমূল। বস্তুত, বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে ‘জড়িত’ বিজেপির বিভিন্ন নেতাকে কেন গ্রেফতার করা হবে না, সেই দাবি তুলে সোমবার থেকেই পথে নামছে রাজ্যের শাসকদল। সেই নেতাদের মধ্যে যেমন রয়েছেন শুভেন্দু, তেমনই রয়েছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাও। সোমবার কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্স, হলদিয়া এবং কাঁথিতে যুগপৎ সভা করছে তৃণমূল। মঙ্গলবার একই দাবিতে রাজভবনে যাচ্ছে তৃণমূলের প্রতিনিধিদল।
রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে যাঁরা দাবি জানাতে যাবেন, তাঁদের মধ্যে যেমন রয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, তেমনই থাকছেন ‘নন্দীগ্রামের মা’ বলে পরিচিত ফিরোজা বিবি। যিনি এখন পাঁশকুড়া পূর্বের তৃণমূল বিধায়ক। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ নন্দীগ্রামে পুলিশের গুলিতে মৃত গ্রামবাসীদের মধ্যে ছিলেন ফিরোজার পুত্র শেখ ইমদাদুল। সেই সময় থেকেই তাঁকে সামনে রেখে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বাধীন বাম সরকারের বিরুদ্ধে জোরদার আন্দোলন করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই ফিরোজাকেই আবার আন্দোলনের প্রথম সারিতে তুলে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ‘নন্দীগ্রামের মা’-কে সামনে আনা হচ্ছে অধুনা নন্দীগ্রামের বিধায়কের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার শুভেন্দুর গ্রেফতারের দাবিতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে তৃণমূলের আট সদস্যের যে প্রতিনিধিদলের যাওয়ার কথা, তার নেতৃত্ব দেবেন ব্রাত্য। প্রতিনিধি দলে থাকবেন তাপস রায়, কুণাল ঘোষ, শশী পাঁজার মতো নেতা-মন্ত্রীরা। সেই প্রতিনিধি দলে থাকবেন ফিরোজাও। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় তিনি তৃণমূল ভবনে যাবেন। সেখান থেকেই বাকি প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাজভবন যাবেন ‘নন্দীগ্রামের মা’।
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আগামী দিনে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে তৃণমূল নেতৃত্ব যে সমস্ত আন্দোলন করবেন, সেগুলিতেও ফিরোজাকে অংশ নিতে বলা হয়েছে। সোমবার ওই বিষয়ে ফিরোজাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দল যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তখনই সেই দায়িত্ব আমি পালন করেছি। আবার কোনও দায়িত্ব দিলেও তা পালন করব।’’
ঘটনাচক্রে, একটা সময় শুভেন্দুর সঙ্গে ফিরোজার সম্পর্ক ভাল ছিল। তা ছিল মূলত নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই। ২০০৮ সালে নন্দীগ্রামে উপনির্বাচনে তৃণমূলের প্রতীকে দাঁড়িয়ে প্রথম বার জিতেছিলেন ফিরোজা। ২০১৬ সালে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা তমলুক লোকসভার সাংসদ পদ থেকে সরিয়ে শুভেন্দুকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় আনার সিদ্ধান্ত নেন। তখন নন্দীগ্রাম আসনে শুভেন্দুকে প্রার্থী করা হয়। ফিরোজাকে দেওয়া হয় পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র। সেই আসন বদল মেনে নিয়েছিলেন ‘নন্দীগ্রামের মা’। এখন সেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধেই সম্মুখসমরে তিনি।
সোমবার শুভেন্দুর কথা জিজ্ঞাসা করায় খানিকটা বিরক্ত ফিরোজা বলেন, ‘‘১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল করি। সেবার পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থীও হয়েছিলাম। সেই সময় শুভেন্দুবাবু তৃণমূলে আসেননি। তৃণমূল করতাম বলেই নন্দীগ্রাম আন্দোলনে আমার ছেলেকে গুলি করে মারা হয়েছিল। আর দল দায়িত্ব দিয়ে শুভেন্দুবাবুকে নন্দীগ্রামে পাঠিয়েছিল। তাই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু কেউ দলের সঙ্গে বেইমানি করলে তাকে মাথায় তুলে আমি নাচতে পারব না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy