Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

মদ-নিষেধের ধাক্কায় লোকসান নিগমের লজে

কার্শিয়াং ট্যুরিস্ট লজের বারে বসে পাহাড়চূড়া দেখতে দেখতে বিয়ার মাগে তৃপ্তির চুমুক দেবেন, আর সেটা হবে না। নদীর মুখোমুখি হয়ে ডায়মন্ড হারবারের ‘সাগরিকা’য় মদিরায় মজে যাওয়া স্মৃতি হয়েই থাকবে। কিংবা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরে জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজের বারে হুইস্কি পান করতে করতে জঙ্গলের নিস্তব্ধতা উপভোগের কথাও ভুলে যান।

সুরবেক বিশ্বাস
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:৩৬
Share: Save:

কার্শিয়াং ট্যুরিস্ট লজের বারে বসে পাহাড়চূড়া দেখতে দেখতে বিয়ার মাগে তৃপ্তির চুমুক দেবেন, আর সেটা হবে না। নদীর মুখোমুখি হয়ে ডায়মন্ড হারবারের ‘সাগরিকা’য় মদিরায় মজে যাওয়া স্মৃতি হয়েই থাকবে। কিংবা সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসার পরে জলদাপাড়া ট্যুরিস্ট লজের বারে হুইস্কি পান করতে করতে জঙ্গলের নিস্তব্ধতা উপভোগের কথাও ভুলে যান। চা-বাগানে বেড়াতে গিয়ে নিজের ভাঁড়ার ফুরিয়ে গেলে ভাবছেন মালবাজার ট্যুরিস্ট লজের দোকান থেকে বোতল কিনে নেবেন? পাবেন না।

জাতীয় সড়কের লাগোয়া মদের দোকান ও পানশালা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আর তার আওতায় পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ট্যুরিস্ট লজের পাঁচটি মদের দোকান এবং আটটি পানশালা। ওই সব দোকান ও পানশালা থেকে ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে ৮৫ লক্ষ টাকা লাভ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগম। পাঁচটি মদের দোকান থেকে ৩৭ লক্ষ এবং আটটি পানশালা থেকে ৪৮ লক্ষ টাকা লাভ হয়েছিল।

আরও পড়ুন:​ মমতা কি মোদীর মুখোমুখি হবে?

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশে ট্যুরিস্ট লজের সঙ্গে থাকা মদের দোকান উঠে গেল দিঘা, জলদাপাড়া, দুর্গাপুর, মালবাজার ও মালদহে। পড়ে থাকল কেবল দু’টি— জলপাইগুড়ির তিস্টা পর্যটক আবাস ও সল্টলেকের উদয়াচলের মদের দোকান। পানশালা ছিল ১২টি লজে। এখন থাকল কেবল জলপাইগুড়ি, শিলিগুড়ি, মেদিনীপুরের রানি শিরোমণি ও বিষ্ণুপুর ট্যুরিস্ট লজে। জলদাপাড়া, বহরমপুর, মালদহ, কার্শিয়াং, মালবাজার, রায়গঞ্জ, বকখালি ও ডায়মন্ড হারবার ট্যুরিস্ট লজের বার বন্ধ হয়ে গেল। এর মধ্যে গত আর্থিক বছরে সব চেয়ে বেশি লাভ হয়েছিল কার্শিয়াং ট্যুরিস্ট লজের বারে— ১৫ লক্ষ টাকা। আর লজের যে-পাঁচটি মদের দোকান উঠে গেল, তার মধ্যে মালবাজারের দোকানের লাভ ছিল সব চেয়ে বেশি— ১৩ লক্ষ টাকা।

নিগম সূত্রের খবর, সদ্য শেষ হওয়া আর্থিক বছরে নিগম ১০ কোটি টাকারও বেশি লাভ করেছে। যা রীতিমতো রেকর্ড। নিগমের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের মূল আয় হয় লজ পরিচালনার মাধ্যমে। অর্থাৎ ঘর ও কনফারেন্স রুম ভাড়া আর খাবার বিক্রি থেকে। মদ বিক্রি থেকে আয় লাভের অঙ্ক কিছুটা বাড়ায়।’’

ক্ষতি পূরণের জন্য নতুন লজে পানশালা ও মদের দোকান খোলার পরিকল্পনা করেছে নিগম। তার মধ্যে ডুয়ার্সের বাতাবাড়ি ও টিলাবাড়ি লজ বাদ। কারণ, সেগুলো জাতীয় সড়কের ধারে। পুরনোগুলোর মধ্যে শান্তিনিকেতন ট্যুরিস্ট লজে বার খোলার কথা ভাবা হচ্ছে। মাইথন লজে মদের দোকান খোলা হবে শীঘ্রই। যে-সব লজ অনেক বড় এলাকা নিয়ে তৈরি, সেখানে মদের দোকান ও বার জাতীয় সড়কের ৫০০ মিটারের বেশি দূরত্বে সরানো যায় কি না, ভাবা হচ্ছে তা-ও।

অন্য বিষয়গুলি:

Prohibition Liquor Tourist lodge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE