২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কোর কমিটি গঠন করেছিলেন, সেই কমিটির প্রথম বৈঠক হতে চলেছে আগামী বৃহস্পতিবার ৬ মার্চ। তৃণমূল ভবনে বেলা ১টায় এই বৈঠক হবে, যেখানে নেতৃত্ব দেবেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বৈঠকে শুধু কোর কমিটির সদস্যরাই থাকবেন না, পাশাপাশি তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও চেয়ারম্যানদেরও তলব করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে এসএমএস বার্তা পাঠিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। ভোটার তালিকা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য বিশ্লেষণ করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
ভোটার তালিকা পর্যালোচনার কাজ ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় শুরু করে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিভিন্ন জেলার নেতারা নিজের নিজের এলাকায় বৈঠক ও ময়দানে নেমে কাজ শুরু করেছেন। কলকাতাতেও এই উদ্যোগ শুরু হয়েছে। শনিবার কলকাতার মেয়র তথা তৃণমূল নেতা ফিরহাদ হাকিম নিজের ৮২ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখতে বাড়ি বাড়ি ঘুরেছেন। দলীয় নেতাদের কাছে নির্দেশ এসেছে, যাতে প্রত্যেক বৈধ ভোটারের নাম তালিকায় থাকে এবং কোনও ভুল না হয়। প্রসঙ্গত নেতাজি ইন্ডোরে আয়োজিত সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা অভিযোগ করেছিলেন, হরিয়ানা এবং গুজরাতের ভোটারদের এ রাজ্যের ভোটার হিসেবে ঢুকিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেতে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মিলে এই ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছে কেন্দ্রের শাসকদল। এই অভিযোগের জবাব দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে খারিজ করেছে কমিশন। কিন্তু তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টিকে নিয়ে অনেক দূর অগ্রসর হতে চান। তাই সোমবার দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়ান, রাজ্যসভার সংসদ সাগরিকা ঘোষ ও বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কীর্তি আজাদ এই বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরতে পারেন বলে দিল্লির তৃণমূল সূত্রে খবর।
বৈঠকে মূলত বিষয়গুলোর যে বিষয়ে আলোচনা হতে পারে, তা হল মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর কোন জেলার কতটা অগ্রগতি হয়েছে ভোটার তালিকা সংশোধনের ক্ষেত্রে। পাশাপাশি প্রতিটি বিধানসভা ও লোকসভা কেন্দ্রে ভোটার তালিকা খতিয়ে দেখার পদ্ধতিতে নতুন কোন কোন বিষয় সংযোজন করা যায় সেই বিষয়েও আলোচনা হতে পারে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ। কোথাও কোনও গরমিল থাকলে তা সংশোধনের কৌশল নির্ধারণ করা হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। রাজ্য রাজনীতিতে এই বৈঠক অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, ভোটার তালিকা নিয়েই নির্বাচনের মূল লড়াই শুরু হয়। বিজেপি-সহ বিরোধী দলগুলো ভোটার তালিকা সংক্রান্ত নানা অভিযোগ তুলতে পারে, তাই তৃণমূল চাইছে আগেভাগেই নিজেদের প্রস্তুতি পাকা করতে। তৃণমূলের এই উদ্যোগ শুধুমাত্র ভোটার তালিকা পর্যালোচনার জন্য তা নয়, বরং এটি একটি বড় সাংগঠনিক কৌশল বলেই মনে করছে বাংলার রাজনৈতিক মহলের একাংশ।