Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
TMC leader accused of harassment

কালনা রাজবাড়িতে পুরাতত্ত্ব বিভাগের নিরাপত্তারক্ষীকে নিগ্রহ! পুরপ্রধান আনন্দকে শোকজ় তৃণমূলের

আনন্দের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ তুলে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে (ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)।

ছবি: সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো থেকে।

ছবি: সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসা ভিডিয়ো থেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২৪ ২৩:২২
Share: Save:

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের নজরদারিতে থাকা কালনা রাজবা়ড়ির নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা ও গালিগালাজের অভিযোগে পুরপ্রধান আনন্দ দত্তকে শোকজ় করল তৃণমূল। পাশাপাশি তৃণমূল পরিচালিত কালনা পুরসভার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরাতত্ত্ব বিভাগও। বৃহস্পতিবার এ কথা জানান পুরাতত্ত্ব বিভাগের আধিকারিক অমিত মালো।

আনন্দের বিরুদ্ধে ‘দাদাগিরি’র অভিযোগ তুলে সম্প্রতি একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে সমাজমাধ্যমে (ওই ভিডিয়োর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি)। ভিডিয়োটিতে দেখা গিয়েছে, রাজবাড়িতে টোটো করে জল নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। মূল ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা টোটোটিকে আটকে দেন। এতেই রেগে যান আনন্দ। ছুটে গিয়ে এক নিরাপত্তারক্ষীকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন তিনি। অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীকে গালিগালাজও করেছেন পুরপ্রধান। এই ভিডিয়ো ঘিরেই বিতর্ক বাধে। বিরোধীদের পাশাপাশি দলীয় নেতারাও আনন্দের আচরণের সমালোচনা করেছেন। কালনার তৃণমূল বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেছিলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের অনেক বিষয়ে সচেতন হতে হয়। না হলে সাধারণ মানুষ তা ভাল চোখে দেখেন না। সাধারণ মানুষ তো কোনও সমস্যায় পড়লে আমাদের কাছে আসেন। কিন্তু এক জন জনপ্রতিনিধির কাছ থেকে এই ধরনের আচরণ কখনওই কাম্য নয়। দল নিশ্চয়ই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’’

বৃহস্পতিবার জেলার তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটি দেখার পর তাঁর কাছে গোটা ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছে।’’ আনন্দও জানান, দলীয় নেতৃত্ব তাঁর কাছে পুরো বিষয়টি জানতে চেয়েছেন।

কালনা রাজবাড়ি মূলত মন্দিরের জন্যই বিখ্যাত। মন্দির ও মন্দিরের কারুকার্য দেখতে দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটক যান প্রতি বছর। রাজবাড়ি চত্বরের সবচেয়ে পুরনো লালজি মন্দির ২৫টি চূড়াবিশিষ্ট। ১৭৩৯ সালে এই মন্দির নির্মাণ করেছিলেন বর্ধমানের মহারাজ কীর্তিচন্দ্রের মা ব্রজকিশোরী দেবী। লালজি মন্দির চারদিকে সুউচ্চ প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। লম্বা-চওড়ায় প্রায় ৫৪ বর্গফুট। ৪ ফুট বেদির উপরে অবস্থিত এই মন্দির। মন্দিরের সামনে রয়েছে নাটমন্দির। এ ছাড়াও আছে নহবতখানা। এখানে একটি রাসমঞ্চও রয়েছে। এই রাসমঞ্চের পাশেই একটি শিবমন্দির আছে, যেখানে প্রতাপেশ্বর শিবলিঙ্গ অধিষ্ঠিত।

স্থানীয় সূত্রে খবর, নিয়ম অনুযায়ী, রাজবাড়ির ভিতরে কোনও গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করা নিষিদ্ধ। চারচাকা, তিনচাকা এমনকি মোটরবাইকে নিয়ে প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, এ কথা জানা সত্ত্বেও কেন রাজবাড়ির ভিতরে গাড়ি নিয়ে গেলেন পুরপ্রধান? শুধু তা-ই নয়, তাঁকে নিষেধ করার সত্ত্বেও ‘দাদাগিরি’ দেখিয়ে, নিরাপত্তারক্ষীকে ‘নিগ্রহ’ করে ভিতরে প্রবেশ করেছেন গাড়ি নিয়ে! প্রসঙ্গত, অভিযুক্ত পুরপ্রধান আনন্দ অতীতেও বিতর্কে জড়িয়েছেন। তাঁকে পুরপ্রধান পদে বসানো নিয়ে শাসকদলের অন্দরেই মতভেদ ছিল। বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর তাঁকে পুরপ্রধান হিসাবে মেনে নেননি। যদিও শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্বের ‘চাপে’ মেনে নেন সব কাউন্সিলর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy