অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘দুয়ারে সরকার’ শিবিরে বহু মানুষ বার্ধক্যভাতার জন্য নাম নথিভুক্ত করছেন। কিন্তু রাজ্য সরকারের নানাবিধ সমস্যার কারণে তাঁদের সেই ভাতা দেওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু নবান্ন কবে ভাতা দেবে, তার অপেক্ষায় না থেকে শুক্রবার নতুন ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’-এর কথা জানালেন সেখানকার সাংসদ তথা তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ফলতার বস্ত্রবিতরণ কর্মসূচি থেকে অভিষেক স্পষ্ট বলে দিলেন, ‘‘সরকার যবে দেবে দিক! তার আগে আগামী বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আমরা আমাদের সাধ্যমতো ৭০ হাজার মানুষকে বার্ধক্যভাতা পৌঁছে দেব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটাই ডায়মন্ড হারবার মডেল। কারও যদি গায়ে লাগে, তা হলে কিছু করার নেই।’’
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ‘আমরা’ কারা? অভিষেক জানিয়েছেন, ‘আমরা’ মানে সাংসদ তিনি এবং তাঁর ‘টিম’। অর্থাৎ ‘টিম অভিষেক’। তৃণমূলের শীর্ষনেতা এ-ও বলেছেন যে, নতুন বার্ধক্যভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রে সরকারের যে অসুবিধা রয়েছে, তা-ও খুব শীঘ্র মিটে যাবে। কিন্তু ততদিন যে তিনি নবান্নের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে চাইছেন না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন অভিষেক।
কৌতূহলের বিষয় হল, ৭০ হাজার সংখ্যাটা কী ভাবে বললেন অভিষেক? বক্তৃতায় তারও ব্যাখ্যা দেন তৃণমূল সাংসদ। তিনি বলেন, ‘‘গত এক-দেড় মাস ধরে আমি ডায়মন্ড হারবার লোকসভা এলাকার প্রশাসনের কাছে খবর নিয়েছি। জেনেছি, ৭০ হাজার মানুষ দুয়ারে সরকার শিবিরে নতুন করে বার্ধক্যভাতা পাওয়ার জন্য নাম লিখিয়েছেন। তাঁদের আমরা আমাদের সাধ্যমতো বার্ধক্যভাতা দেব।’’ অভিষেক কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘‘২২ শতাংশ সংক্রমণের হারকে ১০ দিনে দুই শতাংশে নামিয়ে এনেছিলাম। এক দিনে ৫০ হাজার টেস্ট করিয়েছিলাম। সারা ভারতে কেউ পেরেছে? বাংলা তো ছেড়ে দিন!’’
৭০ হাজার মানুষকে প্রতি মাসে কত টাকা করে বার্ধক্যভাতা দেওয়া হবে, সেই অঙ্ক অবশ্য অভিষেক জানাননি। তবে সেই বিপুল অর্থের সংস্থানের উৎস জানিয়ে দিয়েছেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘ডায়মন্ড হারবার লোকসভায় এক থেকে দেড় লক্ষ তৃণমূল কর্মী রয়েছেন। তাঁদের থেকে সাহায্য নিয়ে বার্ধক্যভাতা দেওয়া হবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটাই জনপ্রতিনিধির কাজ। জনপ্রতিনিধির কাজ মানুষে মানুষে বিভাজন করা নয়। টাকা নিয়ে সেটিং করা নয়। বরং নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো।’’
প্রসঙ্গত, বার্ধক্যভাতার জন্য যাঁরা নতুন নাম নথিভুক্ত করিয়েছেন, তাঁদের টাকা পাওয়ার সমস্যা হলে তা গোটা রাজ্যেই হবে। শুধু ডায়মন্ডহারবার ক্ষেত্রে নয়। সে ক্ষেত্রে অভিষেক নিজের কেন্দ্রে যে মডেল চালু করার কথা ঘোষণা করলেন শুক্রবার, তা অন্য তৃণমূল সাংসদদেরও ‘চাপে’ ফেলে দিতে পারে বলে মত দলেরই একাংশের। কোভিডের সময়ে অভিষেকের ‘ডায়মন্ড হারবার মডেল’ নিয়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অভিষেকের প্রতি কল্যাণের মনোভাবও বদলে গিয়েছে। এখন তিনি অভিষেককে ‘পরিণত রাজনীতিক’ হিসাবেই মনে করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy