শান্তা ছেত্রী। ছবি: সংগৃহীত
নেপালি রীতি মেনে ‘চৌবন্ধী’ পরবেন। এবং সাংসদ হিসেবে নেপালিতে শপথও নেবেন তৃণমূল নেত্রী শান্তা ছেত্রী। সব ঠিক থাকলে আগামী ২৯ অগস্ট দিল্লিতে সংসদ ভবনে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতির অফিসে ওই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে। পাহাড়ের রাজনীতিকদের অনেকের মতে, শান্তাই সম্ভবত পাহাড় থেকে রাজ্যসভায় মনোনীত প্রথম মহিলা।
সম্প্রতি শপথ গ্রহণের আমন্ত্রণ পেয়েছেন শান্তা। তার পরে দলের সঙ্গে আলোচনা করে দিল্লিতে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নেপালি ভাষায় শপথ নেবেন। পোশাকও পরবেন নেপালি রীতি-রেওয়াজ মেনেই। রবিবার তিনি বলেন, ‘‘পাহাড়ি মেয়ে হিসেবে পাহাড়ের ভাষাতেই আমি কথা বলতে বেশি স্বচ্ছন্দ। দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) পাহাড়ের মানুষের ঐতিহ্য বজায় রেখেই উন্নয়নের কাজ করে চলেছেন। তিনিও চান, আমি নেপালি ভাষায় শপথ নিই। এবং নেপালি রীতি মেনেই পোশাক পরে যেন সেই অনুষ্ঠানে যাই।’’
ঘটনাচক্রে, যে দিন দিল্লিতে থাকবেন শান্তা, সে দিন পাহাড়ের সব দলের প্রথম সারির নেতা-নেত্রীরা থাকবেন নবান্নে, রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকে। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সেই বৈঠকে থাকবেন মোর্চার বিনয় তামাঙ্গ, জিএনএলএফের মন ঘিসিঙ্গ। থাকবেন জন আন্দোলন পার্টি, গোর্খা লিগ-সহ বাকি দলগুলির প্রতিনিধিরাও। এবং থাকবেন উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যানেরা। তৃণমূল সূত্রের দাবি, ওই বৈঠকের আগে শপথ গ্রহণ হয়ে যাওয়ার কথা। তা হলে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী যে পাহাড়ের রীতি-রেওয়াজ ঐতিহ্যের মর্যাদা বজায় রাখতে চান, সেই বার্তাও পাহাড়ের প্রতিনিধিদের কাছে আর একবার পৌঁছে যাবে।
জন্মসূত্রে কার্শিয়াঙের বাসিন্দা শান্তা ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে জিএনএলএফ তৎকালীন প্রধান সুবাস ঘিসিঙ্গের নজরে পড়ে শান্তার চমকপ্রদ উত্থান। ১৯৯৬ সাল থেকে পরপর তিনবার শান্তা কার্সিয়াঙের বিধায়ক হন। ঘিসিঙ্গ ক্ষমতাচ্যুত হতেই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার রোষে পড়েন শান্তা। এমনকী, স্বামীর মৃত্যুর পরে অন্ত্যেষ্টিতে কেউ যাতে না সামিল হতে পারেন, সে জন্য মোর্চার কয়েক জন ফতোয়াও দেন। ঘরদোর পুড়িয়ে দেওয়ায় শান্তা শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। ২০১৪ সালে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন।
সম্প্রতি শান্তা তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে পাহাড়ে পুরভোটে দাঁড়িয়ে হেরে যান। কিন্তু, পাহাড়ে মহিলাদের মধ্যে তাঁর জনপ্রিয়তা যথেষ্ট। তা ছাড়ায় বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, নেপালি, সবেতেই স্বচ্ছন্দ তিনি। নানা দিক মাথায় রেখেই তাঁকে রাজ্যসভায় মনোনীত করেন তৃণমূল নেত্রী। শান্তা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ের জন্য যে গুরুত্বদায়িত্ব দিয়েছেন, তা পালন করার চেষ্টা করব। তাঁর নির্দেশ মেনে পাহাড়ের সুখ-দুঃখের কথা সংসদে তুলে ধরতে প্রাণপণ চেষ্টা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy