(বাঁ দিকে) হুমায়ুন কবীর। সুব্রত বক্সী (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে থেকেই জেলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভের জ্বালামুখ খুলে দিচ্ছিলেন। ভোট মেটার পরেও তা থামেনি। শেষ পর্যন্ত ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীরকে শোকজ় করে তৃণমূল। ১ অগস্ট তৃণমূল ভবনে গিয়ে মুখবন্ধ খামে জয়প্রকাশ মজুমদারের হাতে সেই শোকজ়ের জবাব দিয়ে এসেছিলেন হুমায়ুন। তারপর ফের তাঁকে শনিবার বৈঠকে ডেকে পাঠালেন বক্সী। সেই বৈঠকে যাওয়ার আগেও সেই ‘বিদ্রোহী’ মেজাজ অব্যাহত হুমায়ুনের।
শুক্রবার বিধানসভা অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন হুমায়ুন। অধিবেশনের পর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘‘আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব।’’ আনন্দবাজার অনলাইনকে হুমায়ুন বলেছেন, ‘‘জেলা নেতৃত্বের বিষয়ে আমার যা অবস্থান ছিল, তার কোনও বদল হয়নি।’’ তিনি জানিয়েছেন, শনিবার কী নিয়ে বৈঠক তা তিনি জানেন না। তবে এটুকু জানেন যে, মুর্শিদাবাদ জেলার বাকি নেতৃত্বকেও ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, গ্রাম পঞ্চায়েত গঠনের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য শনিবার পৃথক সময়ে মালদহ ও মুর্শিদাবাদের নেতৃত্বকে ডাকা হয়েছে।
কৌতূহল হল, হুমায়ুনের শোকজ়ের জবাবে কি তাহলে সন্তুষ্ট তৃণমূল নেতৃত্ব? না হলে জেলার বাকি নেতাদের সঙ্গে তাঁকেও এক বৈঠকে ডাকা হল? নাকি হুমায়ুনের সঙ্গে শাওনি সিংহ রায়, অপূর্ব সরকার (ডেভি়ড)-সহ যে নেতাদের সংঘাত, তাঁদের মুখোমুখি বিষয়ে মিটিয়ে নিতে বলবেন শীর্ষ নেতৃত্ব?
ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক অবশ্য শুক্রবার স্পষ্টই বলেছেন, ‘‘মুর্শিদাবাদ জেলায় তৃণমূল দু’তিন জনের দলে পরিণত হয়েছে। কয়েক জন মিলে নিজেদের আধিপত্য কায়েম করতে চাইছেন। এতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছে দলের। ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে সংগঠন। এটা বরদাস্ত করা হবে না।’’
হুমায়ুনের দলবদলের ‘স্ট্রাইক রেট’ ঈর্ষণীয় বলে অনেকে তাঁকে টিকাটিপ্পনী কাটেন। একটা সময়ে জেলার রাজনীতিতে তিনি ছিলেন অধীর চৌধুরীর লোক। তার পর তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি হয়ে ফের তৃণমূলে যোগ দেন হুমায়ুন। ২০২১ সালের ভোটে তাঁকে ভরতপুর থেকে টিকিট দেয় তৃণমূল। ২০১১ সালে ভোটে হেরেও মন্ত্রী হয়েছিলেন হুমায়ুন। মন্ত্রিত্ব রাখতে ফের তিনি ছ’মাসের মধ্যে একটি কেন্দ্রে উপনির্বাচনে লড়েন। কিন্তু সেখানেও জয়ের মুখ দেখেননি। ফলে মন্ত্রিত্ব খোয়াতে হয় তাঁকে।
এ বারের সংঘাতের সূত্রপাত পঞ্চায়েতের টিকিট বণ্টন ঘিরে। হুমায়ুন-বিরোধীদের বক্তব্য, নিজের অনুগামীদের বিভিন্ন জায়গায় বসাতে চেয়েছিলেন তিনি। দল সেটা ধরে ফেলেই টিকিট বণ্টন করেছে। তাতেই তাঁর গোসা হয়। এখন দেখার শনিবাসরীয় বৈঠক থেকে মুর্শিদাবাদ তৃণমূলে সংঘাত থামে কি না। নাকি হুঙ্কার দেওয়া চালিয়েই যান হুমায়ুন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy