Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কারশেড ডুবেই, ট্রেন বাতিলে ভোগান্তি বহাল

বৃষ্টি থেমে গিয়েছে দিন দুয়েক আগে। কিন্তু টিকিয়াপাড়ার কারশেডে জমা জলের ছবি বদলায়নি বললেই চলে। তাই ছেদ পড়েনি যাত্রী-দুর্ভোগেও। জল না-নামায় বুধবারেও দিনভর ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। বাতিল হয়েছে লোকাল, মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। ফলে যাত্রীদের হয়রানির শেষ নেই।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২০
Share: Save:

বৃষ্টি থেমে গিয়েছে দিন দুয়েক আগে। কিন্তু টিকিয়াপাড়ার কারশেডে জমা জলের ছবি বদলায়নি বললেই চলে। তাই ছেদ পড়েনি যাত্রী-দুর্ভোগেও। জল না-নামায় বুধবারেও দিনভর ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। বাতিল হয়েছে লোকাল, মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন। ফলে যাত্রীদের হয়রানির শেষ নেই।

রেলকর্তাদের একাংশ বলছেন, নিকাশি ব্যবস্থা কার্যত কাজই করছে না। তাঁদের বুধবারের হিসেব, টানা পাম্প চালিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় মাত্র ২০ সেন্টিমিটার জল নেমেছে। মাটি সেই জলের অনেকটাই শুষে নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পরিস্থিতির পরিবর্তন না-হলে যাত্রীদের ভোগান্তি আরও কয়েক দিন চলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তারা।

দু’দিন কেটে যাওয়ার পরেও বৃষ্টির জমা জল নামছে না কেন?

রেলের বক্তব্য, কারশেডের ওই এলাকা অনেকটা গামলার মতো। চার পাশের যাবতীয় জল এসে জমা হচ্ছে সেই গামলায়। গোটা হাওড়া পুর এলাকা বানভাসি হয়ে যাওয়ায় নিকাশি নালাগুলি জল টানতে পারছে না। আবার হুগলি নদীতে জোয়ার থাকায় সেখানেও জল ফেলা যাচ্ছে না। এই সব ক’টি সমস্যার যোগফল যে-দুর্ভোগ, সেটাই পোহাতে হচ্ছে ট্রেনযাত্রীদের। দফায় দফায় লোকাল, মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল হওয়ায় তাঁরা দিশাহারা। রেলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তাঁরা বলছেন, ‘ফি-বছর বর্ষায় নাকাল হতে হয়। তবু রেল-কর্তৃপক্ষের হুঁশ নেই।’

এ দিন দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ৮৭টি লোকাল, ন’টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন বাতিল হয়েছে। অনেক ট্রেন হাওড়া থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সাঁতরাগাছিতে। ফিরতি পথে বেশির ভাগ মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা এ দিন সাঁতরাগাছিতেই শেষ করে দেওয়া হয়। তাতে ঝামেলা-ঝক্কি বেড়েছে ট্রেনযাত্রীদের। সাঁতরাগাছি থেকে কলকাতায় পৌঁছতে কালঘাম ছুটে গিয়েছে অনেকের।

নাজেহাল হতে হয়েছে পূর্ব রেলের হাওড়া মেন লাইনের যাত্রীদেরও। বেশির ভাগ লোকাল ট্রেনই সময়ের ধার ধারেনি। একটানা ভারী বৃষ্টিতে হাওড়া স্টেশনের কাছে পূর্ব রেলের কারশেডেও জল জমেছিল। এ দিন সেই জল কিছুটা কমেছে। শিয়ালদহ-বনগাঁ শাখাতেও জল জমে যাওয়ায় সিগন্যালে বিভ্রাট দেখা দেয়। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে যায় ট্রেন চলাচল।

রেলকর্তাদের বক্তব্য, জমা জলের সমস্যা বহু কালের। সমাধানের জন্য বিভিন্ন সময়ে নানা রকম ভাবনাচিন্তা হয়েছে। কিন্তু খুব কার্যকর কিছু করা যায়নি। কেন? দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘কারশেডের লাইনগুলি উঁচু করা গেলে জলে ডোবার সমস্যা থেকে রেহাই মিলত। কিন্তু টিকিয়াপাড়া কারশেডের ঠিক মাঝখানে পূর্ব রেলের একটি সেতু রয়েছে। লাইন উঁচু করলে ওই সেতু ভেঙে দিতে হয়, যা প্রায় অসম্ভব।’’ ওই রেলকর্তা অবশ্য মনে করেন, হাওড়া পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল। তাই রেল ইয়ার্ডের বাড়তি জল টানতে পারছে না।

এই সমস্যাটাকে আলাদা করে দেখে রেলের তরফে পরিকল্পনা না-করলে কোনও দিনই সমাধান হবে না বলে মনে করেন রেলকর্তাদের একাংশ। তাঁদের দাওয়াই, পুরসভাকে সঙ্গে নিয়ে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের কর্তাদের বৈঠকে বসতে হবে। সেখানেই পরিকল্পনা করতে হবে এবং তা রূপায়ণও করতে হবে সময়সীমা মেনে। এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে হাওড়ার মেয়র-পারিষদ (নিকাশি) শ্যামল মিত্রের আশ্বাস, ‘‘রেল চাইলে আমরা তাদের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Carshed Waterlogged
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE