Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বাঘই ছিল, দাবি জখমের সঙ্গীরও

সাক্ষাৎ বাঘের কামড় খেয়েছেন, জোর গলায় দাবি করেছিলেন জয়রাম সরেন। রবিবার বিকেলে আর যাঁরা তাঁর সঙ্গে গোয়ালতোড়ের কাদরার জঙ্গলে গিয়েছিলেন, তাঁরাও কিন্তু বলছেন— ওই হানাদার বাঘই ছিল।

লালগড়ে ধরা পড়ে এই হানাদার। ফাইল চিত্র।

লালগড়ে ধরা পড়ে এই হানাদার। ফাইল চিত্র।

বরুণ দে
গোয়ালতোড় শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩৩
Share: Save:

সাক্ষাৎ বাঘের কামড় খেয়েছেন, জোর গলায় দাবি করেছিলেন জয়রাম সরেন। রবিবার বিকেলে আর যাঁরা তাঁর সঙ্গে গোয়ালতোড়ের কাদরার জঙ্গলে গিয়েছিলেন, তাঁরাও কিন্তু বলছেন— ওই হানাদার বাঘই ছিল।

গোয়ালতোড়ের কুশকাঠি গ্রামের পাশে কাদরার ঘন জঙ্গল। বুক চিরে গিয়েছে মোরাম রাস্তা। লালগড়ের বাঘ ঘুরতে ঘুরতে এই তল্লাটে এসেছে এবং রবিবার বিকেলে তার দেখা মিলেছে বলেই দাবি স্থানীয়দের। জয়রামের সঙ্গে ওই দিন জঙ্গলে শিকার করতে যান পদন মান্ডি, লুদা সরেনরা। সঙ্গে ছিল তির-ধনুক। সোমবার পদন বলছিলেন, “বাঘটা বেশ বড়সড়। জয়রামের হাতে কামড় দিয়েই চলে গেল।” পাশে দাঁড়িয়ে লুদার মন্তব্য, “জঙ্গলে অনেক কুকুর ছিল। বাঘ মনে হয় কুকুর ধরতেই এসেছিল।”

‘বাঘের কামড়ে’ জখম বছর আটচল্লিশের জয়রাম মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা জানান, আশঙ্কার কিছু নেই। কিন্তু বাঘ একটা মাত্র কামড় বসিয়ে কেন জয়রামকে ছেড়ে দিল, কেনই বা নাগালে আরও গোটা কয়েক মানুষ থাকা সত্ত্বেও তাদের দিকে থাবা বাড়াল না, বাঘের কামড় সয়ে জয়রামই বা কী করে ছুটে পালালেন— ২৪ ঘণ্টা পরেও জবাব মেলেনি। তবে ভয়ে গুটিয়ে গিয়েছে কুশকাঠি। ফের বাঘের হানার ভয়ে কেউ রাখছেন বল্লম, কেউ বড় কুঠার।

এর আগে লালগড়ের জঙ্গলে ডোরাকাটার খপ্পরে পড়েছে গরু-ছাগল। গোয়ালতোড়ে বাঘের ভয় ছড়াতেই কেউ গরু-ছাগল জঙ্গলে ছাড়ছেন না। সুবলবাঁধির আঙুর নন্দী বাড়ির উঠোনে বাঁধাকপির পাতা ছাড়াচ্ছিলেন। পাশে কয়েকটি ছাগল। আঙুরদেবী বললেন, “ছাগলগুলোকে খাওয়াব বলেই পাতা ছাড়াচ্ছি। বাঘ ধরা না পড়লে জঙ্গলে যাব না!” গাঙদুয়ারির স্বপন পাত্র সাইকেলে খড় আনছিলেন। গরুকে খাওয়াবেন বলেই খড়ের জোগাড়। গরু চরানো যে বন্ধ।

জয়রামের উপর হামলা চালানো প্রাণীটি বাঘ হোক বা অন্য কিছু, তিনি বিপদ ডেকে এনেছেন জঙ্গলে গিয়েই, মনে করালেন বনকর্তারা। এ দিন গোয়ালতোড়ে বন দফতরের গাড়িতে মাইকে আর্জি জানানো হয়েছে, ‘স্থানীয় জঙ্গলে হিংস্র বন্যপ্রাণী লক্ষ করা যাচ্ছে। জঙ্গলে যাতায়াত বন্ধ করুন। না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।”

বাঘের খোঁজে এ দিন নয়াবসতের জঙ্গলে ড্রোন উড়েছে, পাতা হয়েছে খাঁচাও। রূপনারায়ণের ডিএফও অর্ণব সেনগুপ্ত বলেন, “বাঘের অবস্থান জানার সব রকম চেষ্টা চলছে। উদ্বেগের কিছু নেই।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE