রাজ্যপাল কেশরী নাথ ত্রিপাঠী। —ফাইল চিত্র
শাসক দলের হামলা এবং পুলিশের মামলা দিয়ে আমডাঙাকে ‘সন্ত্রস্ত’ করে রাখা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতা-বিধায়কদের সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না পেলেও তাঁরা ফের আমডাঙায় যাবেন বলে এ বার রাজ্যপালকে জানিয়ে এলেন বিরোধী নেতারা।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার হাল নিয়ে উদ্বেগ ও অভিযোগ জানাতে মঙ্গলবার রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে গিয়েছিল সিপিএম ও কংগ্রেস বিধায়কদের প্রতিনিধিদল। নারায়ণগড়, পাত্রসায়র, খয়রাশোল— তৃণমূলের একের পর এক কার্যালয়ে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রসঙ্গ তোলেন তাঁরা। তার পরেই পুলিশ-প্রশাসন ও শাসক দলের ভূমিকা সম্পর্কে অভিযোগ জানাতে আমডাঙা সংক্রান্ত তথ্য পেশ করা হয় রাজ্যপালের কাছে। বাম ও কংগ্রেস বিধায়কদের বক্তব্য, আমডাঙার তিনটি পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তৃণমূল। তার পরেও সেখানে জোর করে বোর্ডের দখল নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। মানুষের প্রতিরোধের মুখে বাইরে থেকে বাহিনী এনে আক্রমণ হচ্ছে। আমডাঙার বহিরআইচে সোমবারও সংঘর্ষ হয়েছে। বিরোধী বিধায়কদের অভিযোগ, ওই এলাকায় ৬টি বুথের মধ্যে পাঁচটি সিপিএম এবং একটি কংগ্রেস জিতেছে। তাই হামলা করছে শাসক বাহিনী। মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক-সহ শাসক দলের নেতাদের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, সিপিএমই ওখানে বোমা-অস্ত্র মজুত করে হামলা চালাচ্ছে।
বিরোধী নেতাদের দাবি, রাজ্যপাল তাঁদের জানিয়েছেন, সংবাদমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রে আমডাঙার ঘটনা সম্পর্কে তিনি ‘অবহিত’। বিরোধীদের প্রতিনিধিদল যখন রাজভবনে, তখনই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোতনা চলছিল রাজ্যপালের। শাসক দলের মহাসচিবের সঙ্গেও আমডাঙা প্রসঙ্গে রাজ্যপালের কথা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। পরে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘শাসক দল ও প্রশাসন মিলে সন্ত্রাসের রাজত্ব চলছে। সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে রাজ্যপাললে গোটা ঘটনা জানিয়েছি।’’ আর বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘আমাদের বিধায়ক-দলকে ওখানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। সভা হবে ১৬ সেপ্টেম্বর, তারও অনুমতি এখনও নেই। অনুমতি থাক বা না থাক, আমডাঙায় আমরা যাবই! যা হওয়ার হবে!’’
সিপিএমের অভিযোগ, তাদের কর্মী-সমর্থকদের মিথ্যা মামলায় ‘ফাঁসানো’ হচ্ছে। পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনও চলছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীকে আলিমুদ্দিনে ডেকে আমডাঙা নিয়ে পুরোদস্তুর লড়াই করারই আলোচনা সেরেছে সিপিএম। নেওয়া হচ্ছে আইনি পরামর্শও। জ্যোতিপ্রিয়বাবুদের পাল্টা সুজনবাবু এ দিন বলেছেন, ‘‘বাইরে থেকে বিরোধীরা অস্ত্র নিয়ে আসছে, পুলিশ ধরছে না— এর জন্যই তো পুলিশমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। জ্যোতিপ্রিয়বাবু যেখানে অস্ত্র আছে বলে দেখিয়ে দিচ্ছেন, সেখানেই পুলিশ ধরছে। গ্রেফতার করতে হলে ওঁকেই আগে করা উচিত!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy