ইসরত জহান।ফাইল চিত্র।
ইসরত জহান জিতে গিয়েছেন! মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চিরকালের জন্য খোদাই হয়ে গিয়েছে বছর তিরিশের ছোটখাটো তরুণীর নাম। বোরখায় মুখ ঢাকা তিনি শুধু দৃঢ় চোখ দু’টি মেলে বলেছেন, ‘‘আভি ভি মুশকিলেঁ বহুত হ্যায়, ফিরভি হম খুশ হ্যায় কিঁউকি, মুসলিম লড়কিয়োঁকো জিনেকা মকসদ মিল গয়ি।’’
বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামের গোঁড়া মুসলিম পরিবার থেকে উঠে আসা ক্লাস টুয়েলভ পাশ মেয়ে। এ দিন অসংখ্য ফ্ল্যাশবাল্বের ঝলকানির মধ্যে বিন্দুমাত্র না ঘাবড়ে সেই বিজয়িনীর বক্তব্য, ‘‘যে ভাবে শরিয়ত মেনে সকলকে সাক্ষী রেখে, সকলের মত নিয়ে বিয়ে হয়, সেই ভাবেই সকলের সঙ্গে আলোচনা করে ধাপে-ধাপে তালাক হওয়ার কথা। ফোনে বা টেক্সট-এ তালাকের কথা কোনও দিন শরিয়তে লেখা ছিল না।’’
আদালতের রায়ের পর তিনি কি তাঁর স্বামী মুরতাজা আনসারি-র কাছে খোরপোশ চেয়ে আইনের দ্বারস্থ হবেন? প্রথমে মাথা নেড়ে ‘না’ বলেছিলেন। পরক্ষণেই উত্তর দিলেন, ‘‘আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে ঠিক করব। এখনও ভাবিনি।’’
আরও পড়ুন: মত আলাদা ছিল প্রধান বিচারপতিরই
মুরতাজার সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পেরেছিল আনন্দবাজার। আবু ধাবি থেকে টেলিফোনে তিনি অবশ্য দাবি করেন, ‘‘ইসরতকে তালাক দিইনি। আমি ওর সঙ্গে থাকতে চাই। এ নিয়ে মেসেজও পাঠিয়েছি।’’
ইসরতের অবশ্য দাবি, ১৪ বছর বয়সে বিয়ে হয়েছিল। পরপর তিন মেয়ে হওয়ার ‘অপরাধে’ রাগারাগি, অপমানজনক কথা বলা শুরু করেন মুরতাজা। পরে এক ছেলে হলেও অবস্থা বদলায়নি। ২০১৪ সালে আবু ধাবি থেকে ফোনে তিন তালাক দেন।
চার সন্তানই বিহারে। ইসরত একা থাকতে শুরু করেন হাওড়ার পিলখানায়। ইতিমধ্যে জানতে পারেন, দ্বিতীয় বার বিয়ে করেছেন স্বামী। তখনই ঠিক করেন, আইনি লড়াই শুরু করবেন। এক বন্ধু মারফত খোঁজ পান আইনজীবী নাজিয়া ইলাহি-র। এ দিন কলকাতায় ফিরে নাজিয়া বললেন, ‘‘যুগান্তকারী রায়। সব মুসলিম মেয়েরই জয় এটা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy