শান্তনু ঠাকুর, বীণাপাণি দেবী এবং জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক
বড়মার চিঠি নিয়ে সরগরম ঠাকুরবাড়ি।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা বড়মার চিঠি ও সই জাল বলে দাবি তুলে বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর সোমবার রাতে গাইঘাটা থানায় শান্তনু ঠাকুরের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন। মমতা বলেন, ‘‘বড়মার এখন সেই শারীরিক সক্ষমতাই নেই যে নিজে চিঠি লিখবেন। সইটুকুও করতে পারেন না।’’ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের জন্যই বড়মার সই জাল করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
বড়মার ছোট নাতি শান্তনুও জেঠিমা মমতার অভিযোগের উত্তর দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘মমতা ঠাকুর এবং ওঁরা (তৃণমূল) প্রমাণ করুন, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে চিঠিটি বড়মা লেখেননি বা সই তাঁর নয়।’’
শান্তনু বলেন, ‘‘রবিবার বড়মা নিজে আমার বাড়িতে এসে চিঠি দিয়ে গিয়েছেন। আমি তাঁর ঘরে যাইনি। বড়মা যে বাড়িতে এসেছিলেন ও চিঠি দিয়ে গিয়েছেন, সে ছবিও আমাদের কাছে রয়েছে। সঠিক সময়ে প্রমাণ দেব।’’
তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কারণেই যড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ শান্তনুর।
মতুয়াদের ঠাকুরবাড়িতে রাজনৈতিক বিভাজন দীর্ঘ দিনের। মমতা ঠাকুর তৃণমূলের টিকিটে সাংসদ হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে বিজেপির টিকিটে ভোটে লড়েছিলেন শান্তনুর দাদা সুব্রত। শান্তনু ইদানীং বিজেপি ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় তাঁকে মোদীর পাশেই দেখা গিয়েছে। নানা সময়ে বিজেপি নেতারা ঠাকুরনগরে এসে শান্তনুর সঙ্গে দেখা করছেন। এই পরিস্থিতিতে উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা বড়মার সই করা চিঠি নিয়ে বিতর্কেও রাজনীতির রং লেগেছে।
শান্তনুর বক্তব্য, ‘‘এ সব রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। লোকসভা ভোটের আগে আমাকে গ্রেফতার করাতে চাইছে। কারণ ওরা জানে, আমি থাকলে ওদের ভোট কমবে।’’
যা শুনে তৃণমূল শিবিরের তরফে মমতা ঠাকুরের প্রতিক্রিয়া, ‘‘শান্তনু এত বড় নেতা হয়ে যায়নি যে ভোট কমাতে পারে। মতুয়া ভক্তেরা মুখ্যমন্ত্রীর কাজে খুশি। তাঁরা তৃণমূলের পক্ষেই রয়েছেন।’’
পুলিশের কাছে চিঠিতে মমতা দাবি করেছেন, বড়মা তাঁকে জানিয়েছেন, কোনও চিঠি তিনি লেখেননি। সইও করেননি। বড়মার ঘরে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। সেটা দেখলেই বোঝা যাবে, বড়মা ঘর থেকে বেরই হননি।
যে চিঠি ঘিরে এত বিতর্ক, সেটি সোমবার দুপুরে ঠাকুরবাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে শান্তনু প্রকাশ করেছেন।
শান্তনুর দাবি, চিঠিটি বড়মা মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে লিখেছেন। তাঁদের হাতে চিঠিটি দিয়েছেন। যা মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ইমেল করে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে।
কম্পিউটারে বাংলায় লেখা ওই চিঠিতে বড়মার সই রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘স্নেহধন্যা মমতা’ বলে সম্বোধন করে লেখা, ‘তোমার দল রাজ্যসভায় ভারতীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৯ সমর্থন করুক। অন্যথায় মতুয়ারা আর তোমাকে সমর্থন করবে না।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘শান্তনু এখন আর মতুয়া নয়, ও এখন বিজেপি হয়ে গিয়েছে। বিজেপির হয়ে ষড়যন্ত্র করছে। রাজনৈতিক ভাবে এর জবাব আমরা ওকে দেব। "
পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। বড়মার সই সিআইডির বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। বড়মার ঘরের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy