কলকাতা হাই কোর্ট নিজস্ব চিত্র
দেশে ফেরার আবেদন করে কলকাতা হাই কোর্টে জয় পেলেন বাংলাদেশের বাসিন্দা পানশালার নর্তকী লাভলি আখতার। এ দেশে দীর্ঘদিন আটকে থাকার পর বৃহস্পতিবার তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিল আদালত। এমনকি ওই মহিলাকে নিজের দেশে ফেরাতে কেন্দ্রের অনীহারও সমালোচনা করেন হাই কোর্টের বিচারপতি।
গত এপ্রিল মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এসেছিলেন লাভলি। ২৮ বছর বয়সি লাভলি বাংলাদেশের রামপুরা থেকে কর্মসূত্রে প্রায়ই মুম্বই আসতেন। তবে এ বার তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কিছু দিন তিনি এ দেশে বসবাস করেন। পরে স্বরূপনগর এলাকার সীমান্ত দিয়ে পালানোর সময় বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়েন ওই তরুণী। এ দেশে অবৈধ ভাবে বসবাস করার জন্য তাঁকে ৬৬ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। বসিরহাট জেলা আদালতের নির্দেশে পরে বাংলাদেশের ওই নাগরিকের ঠাঁই হয় দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। কারাবাসের মেয়াদ শেষ করে ঘরে ফিরতে চাইলে আইনি বিপাকে জড়িয়ে পড়েন তিনি। গত ১১ জুন বসিরহাটের সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ওই তরুণীকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় কেন্দ্র। এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন লাভলি। এ বার তাঁর মুক্তির পক্ষে রায় দেয় হাই কোর্ট।
ওই তরুণীর আবেদন ছিল, করোনার কারণে তাঁর ভিসার মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব হয়নি। কর্মসূত্রে তিনি প্রায়ই এ দেশে আসেন। এখন সীমান্ত পেরিয়ে আর বাংলাদেশে যেতে চান না। নিজের খরচে বিমানে ফিরতে চান তিনি। সেই আবেদন গ্রহণ করুক আদালত। নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশের কোনও নাগরিক বেআইনি ভাবে এ দেশে ধরা পড়লে এবং তার পর তাঁকে নিজের দেশে ফেরত পাঠাতে গেলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি প্রয়োজন। রাজ্য আগেই প্রয়োজনীয় অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের গড়িমসির কারণে সাজা খেটেও এখন তিনি ছাড়া পাচ্ছেন না। এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র 'পুশ ব্যাক' নীতি নিয়ে চলে। অর্থাৎ বেশ কিছু বেআইনি নাগরিককে এক সঙ্গে জুটিয়ে সীমান্ত দিয়ে দেশে ফেরানো হয়। অনেক ক্ষেত্রে অনুপ্রবেশকারী ভেবে তাঁদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়। ফলে তা এড়ানোর জন্যই বিমানবন্দর দিয়ে দেশে ফিরতে চেয়েছেন লাভলি।
মামলাটির শুনানিতে বিচারপতি দেবাংশু বসাক বলেন, ‘‘এ রকম ঘটনার উদাহরণ আগে দেখা যায়নি। এক জন আইনি প্রক্রিয়া কাটিয়ে নিজের খরচেই দেশে ফিরতে চাইছেন। অথচ এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রের উদাসীনতা দেখে আমি বিস্মিত।’’ তাঁর নির্দেশ, নিম্ন আদালত ওই তরুণীকে মুক্তির যে নির্দেশ দিয়েছিল তা বহাল থাকবে। পাশাপাশি তাঁকে বিমানবন্দরের নিরাপত্তার ঘেরা টোপ পার করিয়ে দেবেন দমদম সেন্ট্রাল জেলের সুপার বা ওই মর্যাদার কোনও অফিসার। এমনকি দু’এক দিনের মধ্যে এ দেশে থেকে ফিরতে তিনি যেন কোনও বাধার সম্মুখীন না হন তা দেখতেও কেন্দ্রকে নির্দেশ দেয় আদালত।
লাভলির কলকাতা হাই কোর্টে সওয়াল করেন আইনজীবী সৌম্য নাগ। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মক্কেল কোনও অনুপ্রবেশকারী নন। কোভিডের কারণে ভিসার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। এই রকম উদাহরণ ভূরি ভূরি রয়েছে। এখন তিনি দেশে ফিরতে চাইছেন। আদালতের নির্দেশে তা সম্ভব হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy