আরজি কর মামলায় সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করা হল অভিযুক্ত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ওই মামলার রায় ঘোষণা করেন। তিনি সঞ্জয়কে জানিয়ে দেন, তাঁর অপরাধ প্রমাণিত। তিনিই ৯ অগস্ট আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে মহিলা চিকিৎসককে আক্রমণ করেন, তাঁর যৌন হেনস্থা করেন এবং তাঁকে গলা টিপে খুন করেন। সাক্ষীদের বয়ান এবং সিবিআইয়ের তথ্যপ্রমাণের উপর ভিত্তি করে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে বলে জানান বিচারক। আগামী সোমবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ আবার এজলাস বসবে। ওই দিন সঞ্জয়, তাঁর আইনজীবী এবং নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্য শুনবেন বিচারক। তার পর দুপুরে সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণা করবেন।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার যে যে ধারায় সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে, তাতে ধর্ষণ এবং খুনের অপরাধে সর্বোচ্চ ফাঁসির সাজা হতে পারে। সঞ্জয়কে সোমবার যে সাজা-ই দেওয়া হোক, তিনি নিম্ন আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারবেন। প্রথমে হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে আবেদন করতে হবে সঞ্জয়কে। সেখানে নিম্ন আদালতের রায় বহাল থাকলে সঞ্জয় যেতে পারবেন ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেও তাঁর আর্জি খারিজ হলে মামলা করা যাবে সুপ্রিম কোর্টে। সঞ্জয়কে যদি মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এবং শীর্ষ আদালতও যদি তা বহাল রাখে, সে ক্ষেত্রে তাঁর শেষ ভরসা রাষ্ট্রপতি। তাঁর কাছে ক্ষমাভিক্ষা করতে পারবেন সঞ্জয়। রাষ্ট্রপতি ক্ষমা না-করলে দণ্ড কার্যকর হবে।
শনিবার বেলার দিকে প্রেসিডেন্সি জেল থেকে প্রিজ়ন ভ্যানে আদালতে নিয়ে আসা হয় সঞ্জয়কে। তাঁর পরনে ছিল কমলা এবং ছাইরঙা একটি জ্যাকেট (হুডি)। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সঞ্জয়কে আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়। রায় ঘোষণার পরেও বার বার তিনি দাবি করেন, তাঁকে ‘ফাঁসানো’ হয়েছে। তবে সঞ্জয়ই যে দোষী, আদালত তা জানিয়ে দিয়েছে। এখন জল্পনা শুরু হয়েছে তাঁর সম্ভাব্য শাস্তি নিয়ে। সঞ্জয়ের কী শাস্তি হতে পারে, শনিবারই বিচারক তার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন। কোন কোন ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে, সঞ্জয়কে তা শোনান বিচারক দাস। তার পর তাঁকে জানানো হয়, যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত দেওয়া হতে পারে তাঁকে। সঞ্জয়কে বিচারক বলেন, ‘‘আপনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আপনাকে শাস্তি পেতেই হবে। কী শাস্তি, সেটা সোমবার জানাব।’’
সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করার পরে নির্যাতিতার বাবা-মা বিচারকের প্রতি তাঁদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তবে নির্যাতিতার পরিবার-সহ অনেকেই বলছেন, আরজি করের ঘটনায় এক নন, একাধিক ব্যক্তি জড়িত। তাঁদেরও শাস্তি চাই। কেউ কেউ আবার বলছেন, সঞ্জয়কে ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে। সঞ্জয়ের পরিবার অবশ্য এই রায়ে নিরুত্তাপ। প্রথম থেকেই তাঁরা সঞ্জয়ের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বজায় রেখেছিলেন। শনিবার তাঁর দিদি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, নিম্ন আদালতের রায়কে তাঁরা চ্যালেঞ্জ করবেন না। সরকার যা ঠিক মনে করবে, তা-ই যেন করে।
‘আপনার অপরাধ প্রমাণিত’
সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করার সময়ে বিচারক দাস বলেন, ‘‘আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ, আপনি ৯ অগস্ট ভোরের দিকে আরজি কর হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। সেখানে এ দিক-ও দিক ঘোরাঘুরি করার পর এক মহিলা চিকিৎসককে আক্রমণ করেন। তাঁর মুখ চেপে ধরেন। গলা টিপে ধরেন। তাতেই উনি মারা যান। আপনি যৌন হেনস্থাও করেন। যে সাক্ষীদের জেরা করা হয়েছে এবং সিবিআইয়ের আইনজীবীরা যা নথি ও তথ্য নিয়ে এসেছেন, তাতে আপনার অপরাধ প্রমাণিত। আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হল।’’
সোমবার শাস্তি ঘোষণা
শনিবার সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করলেও তাঁর শাস্তি ঘোষণা করেনি আদালত। বিচারক দাস বলেছেন, সোমবার শাস্তি ঘোষণা করা হবে। ওই দিন বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ এজলাস বসবে। সঞ্জয়, তাঁর আইনজীবী এবং নির্যাতিতার পরিবারের বক্তব্য শুনবেন বিচারক। তার পর দুপুরে শাস্তি ঘোষণা করবেন। সঞ্জয়কে বিচারক বলেছেন, ‘‘তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আপনাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তাই শাস্তি পেতেই হবে।’’
কোন ধারা, কী শাস্তি
সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ৬৬, ১০৩(১) ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। চার্জ গঠনও করা হয় ওই ধারাগুলিতেই। বিচারক ওই সমস্ত ধারা উল্লেখ করে তাতে সম্ভাব্য কী কী শাস্তি হতে পারে, তা সঞ্জয়কে জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ৬৪ নম্বর ধারায় ধর্ষণের ঘটনায় সর্বোচ্চ ১০ বছর বা তার বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। খুনের ঘটনায় ২৫ বছর থেকে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। যে ভাবে সঞ্জয় গলা টিপে হত্যা করেছেন, তাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে তাঁর। সঞ্জয়কে বিচারক বলেন, ‘‘যে ভাবে আপনি গলা টিপে হত্যা করেছেন, তাতে যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। আপনার এবং আপনার আইনজীবীর কথা সোমবার শুনব।’’
রুদ্রাক্ষের মালা
আরজি কর-কাণ্ডের রায় শুনে শনিবার আদালতে নতুন কথা বলেছেন সঞ্জয়। রায় ঘোষণার পরে নিজের গলার রুদ্রাক্ষের মালার কথা উল্লেখ করে চিৎকার করে সঞ্জয় বলে ওঠেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। আমার গলায় রুদ্রাক্ষের মালা আছে। এই মালা পরে কি আমি এই অপরাধ করব?’’ সেখানেই থামেননি সঞ্জয়। বিচারকের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘আমি ওখানে কিছু করলে আমার রুদ্রাক্ষের মালা ছিঁড়ে পড়ে যেত। আমাকে পুরো ফাঁসানো হচ্ছে। স্যর, আপনি কি বুঝতে পারছেন? আমি গরিব। আমি এই কাজ করিনি। যারা করেছে, তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে?’’ এই মামলায় এর আগে রুদ্রাক্ষের মালার প্রসঙ্গ ওঠেনি। সঞ্জয়ের গ্রেফতারির পরেও ওই মালার কথা বলা হয়নি। এমনকি, সিবিআইয়ের চার্জশিটেও তেমন কিছু নেই। নির্যাতিতার পরিবারের আইজীবী অমর্ত্য দে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘এর আগে কখনও রুদ্রাক্ষের মালার প্রসঙ্গ ওঠেনি। ঘটনাস্থল থেকে বা গ্রেফতারির পরও তা বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। এটা যদি এতই গুরুত্বপূর্ণ হত, তা হলে আগেই এর কথা জানানো উচিত ছিল।’’
আস্থার ‘পূর্ণ মর্যাদা’
রায় শুনে আদালত কক্ষে কেঁদে ফেলেন নির্যাতিতার বাবা। বিচারক চেয়ার ছেড়ে উঠে যাচ্ছিলেন। কান্না শুনে দাঁড়িয়ে পড়েন তিনি। নির্যাতিতার বাবা এর পর হাতজোড় করে বিচারকের উদ্দেশে কিছু বলতে চান। অনুমতি পেয়ে তিনি বলেন, ‘‘আপনার উপর যে আস্থা আমরা রেখেছিলাম, তার পূর্ণ মর্যাদা রেখেছেন। আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’ বিচারক জানান, সোমবার তাঁদের কথা শোনা হবে। আদালতের বাইরে বেরিয়েও নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘বিচারককে ধন্যবাদ জানানোর ক্ষমতা নেই। উনি যে ভাবে বিষয়টি দেখেছেন, তাতে কৃতজ্ঞ। আমার মেয়ে তো আর কোনও দিন ফিরে আসবে না। সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজা চাইছি। এই অপরাধে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। তাই মৃত্যুদণ্ডই চাইছি। আর যারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাদেরও সাজা চাইছি।’’
কী বললেন নির্যাতিতার মা
নির্যাতিতার মা সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘বায়োলজিক্যাল তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারপর্বের সময়ে ওর নীরবতাও প্রমাণ করে, ও-ই দোষী। কিন্তু সঞ্জয় একা ছিল না। এখনও অনেকে গ্রেফতার হয়নি। ফলে বিচার এখনও পাইনি। মামলা এখনও শেষ হয়নি। বাকি জড়িতেরা ধরা পড়লে তবেই মামলা শেষ হবে। আমরা ওই দিনটির অপেক্ষায় রয়েছি।’’
মামলা চলবে
সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও আরজি কর মামলা কিন্তু শেষ হয়নি। আগামী সোমবার সঞ্জয়ের শাস্তি ঘোষণার পরেও মামলা চলবে। আরজি করে ধর্ষণ-খুনের ঘটনাতেই সিবিআই গ্রেফতার করেছিল মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। সময়ে চার্জশিট জমা দিতে না-পারায় এই মামলায় তাঁরা জামিন পেয়ে গিয়েছেন। অভিজিৎ জেলমুক্ত হলেও সন্দীপ আরজি করে আর্থিক তছরুপের মামলায় এখনও জেলে। সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার পর মামলার বাকি দিকগুলি নিয়ে এগোবে তদন্তকারী সংস্থা। পরবর্তী চার্জশিট শীঘ্রই দিতে পারে তারা।
১১ দফা প্রমাণ
সিবিআই আদালতে চার্জশিট দিয়ে জানিয়েছিল, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে তারা মোট ১১টি প্রমাণ পেয়েছে। সংগৃহীত বয়ান, ভিডিয়ো এবং ফরেন্সিক বা সায়েন্টিফিক রিপোর্টের ভিত্তিতে সেই সব প্রমাণ মিলেছে। তার মধ্যে রয়েছে সিসিটিভি ফুটেজ, সঞ্জয়ের মোবাইল ফোনের লোকেশন, মৃতার দেহে সঞ্জয়ের ডিএনএ, মৃতার রক্তের দাগ, ঘটনাস্থলে সঞ্জয়ের চুল, সঞ্জয়ের ব্লুটুথ ইয়ারফোন, সঞ্জয়ের শরীরের ক্ষতচিহ্ন, তাঁর মেডিক্যাল পরীক্ষা ইত্যাদি।
১৬০ পাতার রায়
বিচারপ্রক্রিয়া শেষে মোট ১৬০ পাতার রায় ঘোষণা করেছেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক দাস। সোমবার দোষী সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণার পর সেই রায়ের প্রতিলিপি আদালতের ওয়েবসাইটে ‘আপলোড’ করা হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণে সঞ্জয়ের পেশা, তাঁর পরিচয়, নির্যাতিতার কাজের সময়, দেহ উদ্ধারের খুঁটিনাটি গুরুত্ব পেয়েছে।
বলির পাঁঠা?
আদালতে সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করা হলেও দ্বন্দ্ব এবং বিতর্ক এখনও রয়ে গিয়েছে। অনেকেই এখনও বলছেন, সঞ্জয়কে আসলে ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে। আদৌ তিনি অপরাধী নন। সঞ্জয় নিজেও শনিবার আদালতে সেই দাবি করেছেন। আবার নির্যাতিতার বাবা-মায়ের মতো অনেকে বলছেন, সঞ্জয়ের পাশাপাশি আরও কেউ কেউ ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। পরিবারের তরফে আদালতে ওই ঘটনার আরও নিখুঁত তদন্তের দাবি করা হয়েছে।
কী বলছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা
প্রথম থেকেই আরজি কর আন্দোলনের পুরোভাগে দেখা গিয়েছিল জুনিয়র ডাক্তারদের। আদালতের রায় ঘোষণার পর তাঁরা পুরোপুরি খুশি হতে পারছেন না। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’ (জেডিএফ) লিফলেট ছাপিয়ে দাবি করেছে, বিচার পাওয়া যায়নি। লিফলেটের দ্বিতীয় লাইনেই লেখা ‘বিচার কাঁদে নিভৃতে’। আদালত যাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে, সেই সঞ্জয় যে অপরাধী, তা নিয়ে সংগঠন সংশয় প্রকাশ করছে না। কিন্তু সঞ্জয় খুন-ধর্ষণে যুক্ত কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে লিফলেটের বয়ানে। তোলা হয়েছে একাধিক প্রশ্নও। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, সঞ্জয় একা নন, আরও কেউ কেউ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের শাস্তি হলেই ‘বিচার’ মিলবে বলে জানিয়েছে জেডিএফ।
সঞ্জয়ের দিদি কী বললেন
নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করার কোনও ইচ্ছা নেই সঞ্জয়ের পরিবারের। তাঁর দিদি শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, ভাইয়ের সঙ্গে বিশেষ যোগাযোগ নেই তাঁর। গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে দেখাও করতে যাননি। বরং প্রথম থেকেই ভাইয়ের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছিলেন। তাঁরা কোনও আইনজীবীও দেননি আদালতে। ভাইয়ের যদি সর্বোচ্চ সাজা হয়? তা নিয়েও কিছু ভাবতে চাইছেন না সঞ্জয়ের দিদি। রায় শুনে তিনি বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। সরকার বা প্রশাসন যা ঠিক মনে করছে, তা-ই করবে। আমার চাওয়া বা না-চাওয়ার মধ্যে তো কিছু নেই।” আদালতে শনিবারের ঘটনাক্রম নিয়ে সঞ্জয়ের মা’কেও কিছু জানাননি তিনি। বলেছেন, “মায়ের তো মানসিক স্থিতি ঠিক নেই। মা’কে তো সে রকম কিছু বলা যায় না।”
রাজনীতি কী বলছে
রাজনৈতিক মহলে বিবিধ প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। শাসকদল তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বললেন, ‘‘ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশ যাকে গ্রেফতার করেছিল, তাঁকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। সিবিআইয়ের তদন্ত এটা দেখাল যে, কলকাতা পুলিশ ঠিক দিকেই অগ্রসর হচ্ছিল।’’ বিজেপি-কংগ্রেস প্রায় এক সুরে বলেছে, ‘তথ্যপ্রমাণ লোপাট’ না হলে সঞ্জয় রায় ছাড়াও আরও অনেককে কাঠগড়ায় দেখা যেত। প্রদেশ কংগ্রেসের অন্যতম মুখপাত্র সুমন রায়চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আদালতের প্রতি সম্পূর্ণ আস্থা রেখেও বলছি, এই ক্ষেত্রে আগে প্রহসন ঘটেছে। তার পর বিচারপ্রক্রিয়া চলেছে। তথ্যপ্রমাণ লোপাট করে প্রশাসন অপরাধীদের নিরাপত্তা দিয়েছে।’’ সিপিএমের প্রতিক্রিয়া সবচেয়ে আলাদা। বাবরি মামলার রায়ের উদাহরণ টেনে রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘‘রায় হয়েছে, বিচার হয়নি।’’
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে ‘দোষী’ সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম, পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। আনন্দবাজার অনলাইন সেই নিয়ম মেনেই আরজি কর পর্বের প্রথম দিন থেকে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের নাম বা ছবি প্রকাশ করেনি। শনিবার আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করায় আমরা তাঁর নাম এবং ছবি প্রকাশ করা শুরু করছি।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy