Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Bratya Basu

‘উত্তর আমি লিখে এনেছি’! ১৯১১ জনের চাকরি বাতিল নিয়ে প্রশ্ন আসতেই লিখিত ‘সংলাপ’ পাঠ করলেন ব্রাত্য

শুক্রবার দুপুরেই হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির নিযুক্ত গ্রুপ ডি স্তরের ১৯১১ জন স্কুলকর্মীর চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। সেই প্রসঙ্গেই প্রশ্ন করা হয়েছিল ব্রাত্যকে।

শুক্রবার পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু।

শুক্রবার পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩৫
Share: Save:

নিয়োগ দুর্নীতির নিয়ে মন্তব্য নয়, তবে চাকরি বাতিল নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশই শিরোধার্য— জানিয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শুক্রবার বিকেলে তিনি একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে আদালতের নির্দেশে এসএসসির নিয়োগ করা ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠতেই আগে থেকে লিখে আনা একটি উত্তর পাঠ করেন ব্রাত্য। বলেন, ‘‘দাঁড়ান, উত্তরটা লিখেই এনেছি আমি। পড়ে শোনাচ্ছি।’’ এর পর একটি ভাঁজ করা কাগজ খুলে ব্রাত্য পাঠ করেন তাঁর আগে থেকে লিখে আনা জবাব।

শুক্রবার দুপুরেই হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসির নিযুক্ত স্কুলের গ্রুপ ডি স্তরের ১৯১১ জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। তবে শিক্ষামন্ত্রীর বিকেলের সাংবাদিক বৈঠকের বিষয় এ নিয়ে ছিল না। শুক্রবারই দুপুরে টেট ২০২২-এর ফলও প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। মন্ত্রী পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন মূলত টেট নিয়েই। তবে চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গ যে উঠবেই তা জানতেন ব্রাত্য। তাই এ ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য লিখে এনেছিলেন। সাংবাদিকরা প্রশ্ন ছুড়ে দিতেই ব্রাত্য পড়েন, ‘‘দুর্নীতি হয়েছে কি না, এটা সম্পূর্ণ আদালতের বিচারাধীন বিষয়। এ নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না। আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এসএসসিকে সতর্ক হতে হবে।’’

এ ব্যাপারে শিক্ষামন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ওই ফাঁকা হওয়া পদে কাদের নিয়োগ করা হবে? জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা বিষয়টি হাই কোর্টের কাছে জানতে চেয়েছিলাম। প্রশ্ন করা হয়েছিল, ওয়েটিং প্যানেল থেকে কি ওই শূন্যপদে নিয়োগ করা হবে? কিন্তু কোর্ট বলেছে, সেখানেও গন্ডগোল আছে। অপেক্ষারত চাকরিপ্রার্থীদের অনেকেরই ওএমআর শিটে সমস্যা রয়েছে। ফলে সেখান থেকেও নিয়োগ আপাতত হবে না।’’

শুক্রবার দুপুরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এসএসসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, অবিলম্বে অযোগ্য হিসাবে চিহ্নিত এসএসসির নিয়োগ করা ১,৯১১ জন গ্ৰুপ-ডি কর্মীর সুপারিশপত্র প্রত্যাহার করতে হবে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই নির্দেশের সঙ্গে সঙ্গেই ওয়েব সাইটে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওই প্রার্থীদের সুপারিশ প্রত্যাহার করে নেয় এসএসসি।

তবে সাংবাদিক বৈঠকে এ ছাড়াও আরও অনেক বিষয়েই কথা বলেছেন ব্রাত্য। শুক্রবার টেটের ফল প্রকাশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘এ বারের টেট যে এত ভাল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে, তার জন্য আমি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতিকে অভিনন্দন জানাতে চাই। এ বারের টেট পরীক্ষা এতটাই নিশ্ছিদ্র ছিল যে কোনও কালনাগিনী ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি।’’

২০২২ সালের টেট পরীক্ষাকে ‘‘লখিন্দরের বাসরঘরের থেকেও ত্রুটি মুক্ত’’ বলে উল্লেখ করে ব্রাত্য বলেন, ‘‘কেউ কেউ অপপ্রচারের চেষ্টা করেননি তা নয়। কিন্তু পর্ষদ সভাপতি বার বার প্রকাশ্যে এসে সমস্ত ভুল ধারণা দূর করেছেন।’’

ব্রাত্য বেশ স্পষ্ট ভাবেই জানিয়ে দেন, ‘‘পরীক্ষার্থীদের নিজেদের নম্বর বোঝার জন্য উত্তরপত্রের কপি দেওয়া হয়েছিল। সেই কপি যদি কেউ অপ ব্যবহার করে থাকেন তবে তিনিও সমান দোষী।’’

সম্প্রতিই রাজ্যে নিয়োগ দুর্নীতিতে প্রকাশ্যে এসেছে শাসক দল তৃণমূলের হুগলির যুব নেতা কুন্তল ঘোষের নাম। তাঁর বাড়ি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে হওয়া টেটের কিছু ওএমআর শিট বা উত্তরপত্রের কপি পাওয়া গিয়েছিল। নাম না করলেও ব্রাত্যের এই মন্তব্য যে সে প্রসঙ্গেই, তা স্পষ্ট। এ প্রসঙ্গে দিন কয়েক আগে হাই কোর্টের বিচারপতিও একটি মন্তব্য করেছিলেন। ঘটনাচক্রে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের সঙ্গে বিচারপতির সেই মন্তব্যেরও মিল রয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন, যাঁরা কুন্তলকে নিজেদের উত্তরপত্রের কপি দিয়েছিলেন, তাঁরাও সমান দোষী। ইডি চাইলে তাঁদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারে। ব্রাত্যের কথাতেও সেই একই সুর শোনা গেল।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy