Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

প্রেমিকের পণ দাবি, আত্মহত্যার চেষ্টা কিশোরীর

প্রায় তিন বছর ধরে প্রেম। কিন্তু বিয়ের কথা উঠতে ছেলের বাড়ি দাবি করেছিল ৪ লক্ষ টাকা ও একটি মোটরবাইক। মেয়ের বাবা রাজমিস্ত্রি। পাত্রপক্ষের পণের দাবি শুনে তিনি পিছিয়ে আসেন। বিয়ে ভেস্তে যায়। কিন্তু তারপরে ওই কিশোরীকে তাঁর বাড়ির লোকেদের কাছ থেকেই কটূক্তি শুনতে হয়। অভিমানে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির গাদং এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী গত ২ জুন গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।

অভিযুক্ত বিজয় সরকার। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

অভিযুক্ত বিজয় সরকার। ছবি: নিজস্ব চিত্র।

রাজকুমার মোদক
ফালাকাটা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৫ ০৩:৩৭
Share: Save:

প্রায় তিন বছর ধরে প্রেম। কিন্তু বিয়ের কথা উঠতে ছেলের বাড়ি দাবি করেছিল ৪ লক্ষ টাকা ও একটি মোটরবাইক। মেয়ের বাবা রাজমিস্ত্রি। পাত্রপক্ষের পণের দাবি শুনে তিনি পিছিয়ে আসেন। বিয়ে ভেস্তে যায়। কিন্তু তারপরে ওই কিশোরীকে তাঁর বাড়ির লোকেদের কাছ থেকেই কটূক্তি শুনতে হয়। অভিমানে জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ির গাদং এলাকার বাসিন্দা ওই কিশোরী গত ২ জুন গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। গুরুতর জখম অবস্থায় সে এখন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ওই কিশোরীর পরিবার রবিবার পাত্র বিজয় সরকার, বিজয়ের বাবা বিমলবাবু, মা শান্তিদেবী সহ মোট ৫ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা পলাতক। তল্লাশি চলছে।’’ কিন্তু এতদিন পরে অভিযোগ করলেন কেন? ওই কিশোরীর বাবা জানান, মেয়ের চিকিৎসাতে ব্যস্ত ছিলেন বলে দেরি হয়েছে।

ওই কিশোরীর সঙ্গে ফালাকাটার ভুটানির ঘাট এলাকার বাসিন্দা বিজয়ের সম্পর্কের কথা তার পরিবারের লোকজনও জানতেন। বিজয় কেরলে দিনমজুরের কাজ করেন। ওই কিশোরীকে তিনি বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। মেয়ে নাবালিকা হলেও বিয়েতে রাজি ছিল ওই কিশোরীর পরিবার। কিশোরীর বাবার দাবি, ‘‘আমরা গরিব। ভাল পাত্র মিলছে ভেবে মেলামেশায় রাজি হই। কিন্তু, এমন সর্বনাশ করবে ভাবিনি।’’ কিশোরীর মা জানান, ওই যুবক মাঝে মধ্যে তাঁর মেয়েকে ঘুরতে নিয়ে যেত। এক রাতে বিজয় ওই কিশোরীর বাড়িতে থেকেও যান।

গত ৩১ মে গাদংয়ে দুই পরিবার আলোচনায় বসে। তখনই পণ চাইলে বিয়ে ভেস্তে যায়। এর পরে ওই কিশোরীকে বকাঝকাও করা হয়। এক প্রতিবেশী জানান, ওই কিশোরীকে খুব বকুনি দেওয়ার কথা শুনেছি। খানিক ক্ষণ পরে হইচই শুনে তাঁরা গিয়ে দেখতে পান, কিশোরীর দগ্ধ দেহ ভারি তোষক দিয়ে মুড়ে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন তার মা। সকলে তাকে প্রথমে ধূপগুড়ি ও পরে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান।

তবে বিজয়ের ভগ্নিপতি গৌতম সরকারের দাবি, টাকা বা মোটরসাইকেল চাওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘শুধু বলা হয়েছিল, চার বছর পরে আমরা বিয়ে দেব। কারণ ছেলের বিয়ে দিলে বাড়িতে তাদের থাকার মতো ঘর নেই।’’ ওই কিশোরীর পরিবার জানিয়েছে, গৌতমবাবুর দাবি ঠিক নয়। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, এখন বিয়ে হলে পাত্রী নাবালিকা বলে তা আটকে দেওয়া হত।

(সহ প্রতিবেদন: রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE