বছর ঘুরলেই ভোট। তার আগে দুই কমিউনিস্ট পার্টির দুই ছবি!
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র আলিমুদ্দিনকে আরও সংহত এবং সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন। জেলার যে সব নেতারা সম্পাদকণ্ডলীর সদস্য তাঁদের জেলা থেকে তুলে এনে পার্টি কেন্দ্র আলিমুদ্দিনে থাকতে বলা হয়েছে।
আর খড্গপুরে পর পর দু’দিন সিপিআইয়ের দুই কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেও নতুন রাজ্য সম্পাদক প্রবোধ পণ্ডা কার্যত উদাসীন। তিনি ব্যস্ত উত্তরবঙ্গ সফরে!
স্বাভাবিক ভাবেই সিপিএম নেতারা যেখানে নতুন উদ্যম দেখছেন সূর্যবাবুর মধ্যে, সেখানে সিপিআইয়ের নেতারা প্রবোধবাবুর কার্যকলাপে ক্ষুব্ধ। পরের দলীয় বৈঠকে খড্গপুর-প্রসঙ্গে প্রবোধবাবুকে বিঁধতে প্রস্তুত হচ্ছেন তাঁরা।
বুধবার সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকণ্ডলীর বৈঠকে দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে রবীন দেব, অমিয় পাত্র, দীপক সরকার, নৃপেন চৌধুরী, শ্রীদীপ ভট্টাচার্যের মতো নেতারা আর জেলা পার্টির সদস্য থাকবেন না। সদস্যপদ নিতে হবে পার্টি কেন্দ্র আলিমুদ্দিনে।
এত দিন এই নেতারা অনেকেই জেলা থেকে কলকাতা এসে বৈঠকে যোগ দিতেন। বৈঠক শেষে জেলায় ফিরে যেতেন। এখন থেকে তাঁদের কলকাতায় থেকেই আলিমুদ্দিনের কাজ করতে হবে। জেলার সদস্যপদ ছেড়ে দেওয়াই নয়, ছেড়ে দিতে হবে জেলা রাজনীতিতে নাক গলানোর দীর্ঘ দিনের অভ্যাসও। অর্থাৎ রবীনবাবু এখন থেকে আর কলকাতা জেলার নেতা নন! আলিমুদ্দিনের নেতা। অমিয় পাত্র বাঁকুড়ার নেতা নন। তিনিও আলিমুদ্দিনের নেতা। দীপক সরকারও আর পশ্চিম মেদিনীপুরের নেতা নন। তিনিও আলিমুদ্দিনেরই নেতা।
বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-বিমান বসুর জমানা প্রায় শেষ ধরে নিয়েই নতুন করে নিজের মতো টিম সাজাচ্ছেন সূর্যবাবু। আপাতত ছাড় দেওয়া হয়েছে কেবল কলকাতা-সংলগ্ন দুই ২৪ পরগনার জেলা সম্পাদক, সুজন চক্রবর্তী এবং গৌতম দেবকে। আর শিলিগুড়ির মেয়র হিসাবে অশোক ভট্টাচার্যকেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীতে এবারই নতুন আসা বীরভূমের নেতা রামচন্দ্র ডোমকেও থাকতে হবে কলকাতায়।
কেন এই সিদ্ধান্ত?
সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যরা জানান, সূর্যবাবু চাইছেন আলিমুদ্দিনকে সংহত ও সক্রিয় করে তুলতে। যাতে জেলায় কোনও ঘটনা ঘটলেই আলিমুদ্দিনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সময় নষ্ট না করে রাজ্য নেতৃত্ব ছুটে যেতে পারেন জেলায়। দাঁড়াতে পারেন, জেলা নেতৃত্বের পাশে।
ঠিক উল্টো ছবি সিপিআইতে। যে ভাবে পর পর দু’দিন দলের দুই পুরানো কাউন্সিলর দল ভেঙে তৃণমূলে যোগ দিলেন, তাতে সিপিআই রাজ্য নেতৃত্বের অনেকেই অবাক হয়েছেন। দলের এক প্রবীণ রাজ্য নেতার কথায়, ‘‘২০১১ সালের পরে সিপিএম, আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লক থেকে নেতারা তৃণমূলে গেলেও আমাদের দল থেকে যায়নি। এ ব্যাপারে রাজ্য নেতৃত্বের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।’’
কী সেই ব্যবস্থা? দলের রাজ্য নেতারাই বলছেন, খড্গপুরের সিপিআই কাউন্সিলরদের তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছে বা টোপ দিচ্ছে বোঝার পরেও কেন তাঁদের কলকাতায় নিয়ে আসা হল না? কেন প্রবোধবাবু ঘটনা জানার পরেও পুরো বিষয়টি জেলার উপরে ছেড়ে দিয়ে বসে রইলেন? দলের আগামী বৈঠকে এ প্রশ্ন উঠবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy