বন্ধ হয়ে যেতে পারে সাউথ ইস্টার্ন কোল ফিল্ড (এসইসিএল) লিমিটেডের কলকাতার দফতর। কলকাতার কোল হাউসে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের এ বার ছত্তীশগঢ়ের বিলাসপুরে বদলি করে দেওয়া হবে। সিদ্ধান্ত রদ করতে রাজ্যের শাসক এবং বিরোধী, দু’পক্ষেরই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ চাইছে কর্মচারীদের সংগঠন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চেয়েও চিঠি দিয়েছে তারা।
বিলাসপুরেই এসইসিএলের সদর দফতর। কিন্তু যাবতীয় আর্থিক কাজকর্ম, সেল্স ও মার্কেটিং-এর কাজ কলকাতা থেকেই হয়। বিভিন্ন বিদ্যুৎ সংস্থা থেকে শুরু করে এসইসিএলের ক্রেতারা কলকাতার দফতরেই যোগাযোগ করেন। এর আগে ইস্টার্ন কোল ফিল্ড লিমি়টেডের (ইসিএল) সদর দফতর কলকাতা থেকে ধানবাদে সরানোর চেষ্টা হয়েছিল। তখন রাজনৈতিক হস্তক্ষেপেই তা আটকানো হয়েছিল। এ বারও কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম— তিন দলেরই শ্রমিক সংগঠন এসইসিএলের কলকাতা দফতর বন্ধের প্রতিবাদে নেমেছে।
এ নিয়ে এসইসিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক সিনিয়র ম্যানেজার জানান, কলকাতার দফতর বন্ধ করে কর্মীদের বিলাসপুরে বদলির ব্যাপারে শুক্র-শনিবার বৈঠক হলেও এখনও সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়নি। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ এই পরিকল্পনা থেকে পিছিয়ে আসেন কি না, সেটাই দেখার। আইএনটিইউসি অনুমোদিত এসইসিএলের রাষ্ট্রীয় কোল মজদুর সঙ্ঘের সভাপতি দিলীপ গুহ মজুমদার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতাকে চিঠি লিখে অবিলম্বে তাঁর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র শীর্ষ নেতা তথা রাজ্যের বর্ষীয়ান মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এ ভাবে কলকাতা থেকে যদি বিলাসপুরে দফতর সরানো হয়, আমরা তার বিরোধিতা করছি। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলবেন।’’ সিটুর নেতা, প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়াও হায়দরাবাদ থেকে জানিয়েছেন, এসইসিএল যাতে এই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখে, তার জন্য তিনি আজ, মঙ্গলবারই কলকাতায় কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান সুতীর্থ ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করবেন। বাসুদেববাবু বলেন, ‘‘এর আগে ইসিএলের সদর দফতর সরানোর চেষ্টা হয়েছিল। কর্মীদের প্রতিবাদের মুখে পড়ে তা স্থগিত রাখা হয়। বিজেপি সরকার এ বার এসইসিএলের দফতর কলকাতা থেকে সরানোর চেষ্টা করছে। এতে শুধু কর্মীদের স্বার্থই ক্ষুণ্ণ হবে না, কাজেরও ব্যাঘাত ঘটবে।’’ তাঁর যুক্তি, এসইসিলের কয়লার যাঁরা ক্রেতা, তাঁদের পক্ষে কলকাতা দফতরে যোগাযোগ অনেক সুবিধাজনক। কোল ইন্ডিয়ার সদর দফতর নিউটাউনে হওয়ায় কাজেরও সুবিধা।
এসইসিএলের কলকাতা দফতরে ৫৩ জন স্থায়ী কর্মী কাজ করেন। অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন আরও ২৬ জন। কয়লার ক্রেতা প্রায় ২০০টি সংস্থার সমস্ত হিসাবপত্রের কাজ এখান থেকেই হয়। এমনকী, কয়লার ‘ই-অকশন’ও হয় এই দফতরের তত্ত্বাবধানে। গত আর্থিক বছরে প্রায় ২১ হাজার ৪৫০ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেনের কাজ হয়েছে এই দফতর থেকে। তার আগের বছরে হয় ২২ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকার লেনদেন। এই বিপুল পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের কাজ কলকাতা থেকে চলে গেলে মার খাবে ব্যাঙ্কের ব্যবসাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy