রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। — ফাইল চিত্র।
অনুসন্ধানের জন্য রাজভবনে পুলিশের প্রবেশ নিষিদ্ধ, এ রকম কোনও সরকারি নির্দেশ হাতে আসেনি লালবাজারের। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবারও অনুসন্ধানের জন্য রাজভবনে যাওয়া হয়েছিল। অনুসন্ধানের জন্য যা যা প্রয়োজন, সবই করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রমাণ জোগাড়েরও চেষ্টা চলছে।
লালবাজারের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিশেষ অনুসন্ধানকারী দল (এসইটি) গঠন করা হয়েছে। নেতৃত্বে রয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (সেন্ট্রাল) ইন্দিরা মুখোপাধ্যায়। দলে মোট আট জন সদস্য। আইনি উপদেষ্টা দলের সঙ্গেও কথা বলেছে লালবাজার। পরবর্তী পদক্ষেপ সেই ভিত্তিতে করা হবে। অভিযোগকারিণীর সঙ্গে শুক্রবারও কথা বলেছে পুলিশ। অনুসন্ধানের জন্য কাদের সঙ্গে কথা বলা হবে, তার তালিকাও তৈরি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হেয়ার স্ট্রিট থানায় গিয়ে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ জানান এক মহিলা। পুলিশের কাছে তিনি নিজেকে রাজভবনের অস্থায়ী কর্মী বলে জানিয়েছেন। মহিলার দাবি, রাজভবনে দু’বার শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তিনি। এর পরেই রাজ্যপাল বিবৃতি দিয়ে জানান, সত্যের জয় হবে। ‘সাজানো’ অভিযোগে তিনি ভয় পান না। বৃহস্পতিবার রাতেই রাজভবনের তরফে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। তাতে বলা হয়, রাজভবন চত্বরে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি, ঢোকার অনুমতি দেওয়া হবে না মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যকেও। এমনকি, চন্দ্রিমা কোনও অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলে, সেখানে রাজ্যপাল যাবেন না বলেও জানায় রাজভবন। বিবৃতি অনুযায়ী, ‘‘চন্দ্রিমার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কী পদক্ষেপ করা যায়, তা জানতে দেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে পরামর্শও চেয়েছেন রাজ্যপাল।’’
শুক্রবার যদিও লালবাজারের এক সূত্র দাবি করেছে, রাজভবনে পুলিশের প্রবেশে যে বারণ রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি। এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ করা উচিত, তা নিয়ে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। কারণ ভারতীয় সংবিধানে রক্ষাকবচ পান রাজ্যপাল। সে কারণে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ।
বাংলার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগ ওঠার পর বৃহস্পতিবার ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় বলেছিলেন, ‘‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৬১ অনুসারে, রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্যপালদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি পদক্ষেপ করা যায় না। সাংবিধানিক রক্ষাকবচ রয়েছে রাজ্যপালের। তবে জমিজমা সংক্রান্ত কোনও দেওয়ানি মামলা করা যেতেই পারে। এই ধরনের অভিযোগ অতীতে উঠেছে বলে আমার মনে পড়ছে না। ফলে আদালতে বিষয়টি গেলে কী হবে, তা আমার জানা নেই। সুপ্রিম কোর্ট একে কী ভাবে ব্যাখ্যা করবে, তা তো বোঝা সম্ভব নয়।’’
কলকাতা পুলিশের তরফেও তাই আপাতত আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশের কী করণীয়, তা জানতে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও কথা বলছে লালবাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy