Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

পরপর বাতিল শ্যুটিং, মন খারাপ পাহাড়ের

বিনয় তামাঙ্গ-বিমল গুরুঙ্গদের নয়া জটিলতার সূত্রপাতে ফের বিশ বাঁও জলে সব কিছু। সিকিমের বিকল্প লোকেশন বলিউডি ইউনিটের মনে ধরেনি। কিন্তু লাভার ফুটবল মাঠ বা গরুবাথানের লোহার সেতুতে ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে’র স্বপ্ন এখনও হাজার যোজন দূরে পড়ে রয়েছে।

ঋজু বসু
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:৫৪
Share: Save:

নবান্নে সর্বদল বৈঠকের দিনেও বলিউডি প্রযোজকের ফোন গিয়েছিল শিলিগুড়ির লাইন প্রোডিউসার বাবলু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। অজয় দেওল-সোনম কপূরদের নিয়ে গোটা ইউনিট তখনও লাভা-গরুবাথানে হানা দিতে মুখিয়ে!

বিনয় তামাঙ্গ-বিমল গুরুঙ্গদের নয়া জটিলতার সূত্রপাতে ফের বিশ বাঁও জলে সব কিছু। সিকিমের বিকল্প লোকেশন বলিউডি ইউনিটের মনে ধরেনি। কিন্তু লাভার ফুটবল মাঠ বা গরুবাথানের লোহার সেতুতে ‘লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনে’র স্বপ্ন এখনও হাজার যোজন দূরে পড়ে রয়েছে।

দার্জিলিংয়ের চকবাজারবাসী শ্যুটিং কোঅর্ডিনেটর দিবস সেওয়া-র চোখে পড়ছে এক আশ্চর্য সমাপতন! শনিবার বিকেলে ফোনে বলছিলেন, ‘‘পাহাড়ের ওয়েদার আর রাজনৈতিক পরিস্থিতি পুরো মিলে যাচ্ছে।’’ মানে, তিন দিন আগেও রোদ ঝলমলে দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিল। সর্বদল বৈঠক পরবর্তী টানাপড়েনের সঙ্গে সঙ্গে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি চলছে। ফলে, লাভা-গরুবাথানে শিগ্‌গির শ্যুটিং সারা যাবে বলে ক্ষীণ আশাটুকু এখন উধাও। বিকল্প লোকেশন সিকিমে পশ্চিমবঙ্গের গাড়ি ঢুকতেও খুচখাচ ঝামেলা হচ্ছে।

অর্থাৎ, সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপই হয়েছে। ইদানীং দার্জিলিং-ডুয়ার্স ঘিরে শুধু টালিগঞ্জ নয় হিন্দি ও দক্ষিণী ছবির আগ্রহও তুঙ্গে উঠেছিল। শিলিগুড়ির শ্যুটিংপ্রেমী উকিলবাবু দীপজ্যোতি চক্রবর্তী ওরফে বাচ্চাবাবুর হিসেব, দু’মাসে কম সে কম ১৫টা ছবি ও হিন্দি-বাংলা টিভি ধারাবাহিকের কাজ নষ্ট হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতি শ্যুটিংয়ে ড্রাইভার, কেটারার, জেনারেটর বা আলোর কোঅর্ডিনেটর, জুনিয়র আর্টিস্ট মিলিয়ে রোজ ৫০-৬০ জনের রুজি জড়িয়ে থাকে।’’ বাবলুবাবুর দাবি, দু’মাসে কম করে ৩০-৪০ কোটির ক্ষতি। এই পটভূমিতে রজনীকান্ত-ঘনিষ্ঠ জনৈক প্রযোজকের তামিল ছবির লোকেশন খুঁজতে শিলং, চেরাপুঞ্জি, অরুণাচলের তাওয়াং যাওয়ার কথা তাঁর। জুলাইয়ের শেষ থেকে টানা এক মাস দার্জিলিংয়েই সে-ছবির আউটডোর ঠিক হয়েছিল।

পাহাড়ের নাম শুনলেই টলিউডও বিষাদের ছায়াময়। টিভিজগতের তারকা-নির্মাতা লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের আফশোস, ‘‘ভুতুড়ে গল্পের একটি ধারাবাহিকে বেশ ক’টা পর্ব পাহাড়-ডুয়ার্সের গা-ছমছমে পরিবেশে ভাবা ছিল!’’ চিত্রপরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের গলায় খেদ, ‘‘পাহাড়-নদী-জঙ্গলের এমন গা ঘেষাঘেঁষি বৈচিত্র্য গোটা দেশেই বিরল। কত চিত্রনাট্য এই লোকেশন ভেবে হয়েছে।’’ তাঁর সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত ছবিতেও মংপু, টাইগার হিল, জলাপাহাড়, ডুয়ার্স ভরপুর।

দার্জিলিংয়ের ম্যালে কিউরিও দোকানের ছাদে ক্যামেরা, রাস্তায় টলিট্র্যাক! শৈলশহরের শ্যুটিংপাগল দিবস সেওয়ার বুকে এ সব স্মৃতিই তিরের মতো বিঁধছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy