সিঙ্গুর মামলায় পুরনো অবস্থান বদলে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়ল রাজ্য সরকার। বুধবার রাজ্য সরকারের আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী শীর্ষ আদালতকে জানান, বাম আমলে সিঙ্গুরে যে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল, তা নিয়মমাফিক হয়নি। টাটাদের তরফে বলা হয়েছিল, গাড়ি তৈরির কারখানার জন্য তাদের জমি চাই। শিল্পের জন্য কতখানি জমি চাই, সেটাও রাজ্য সরকারকে জানিয়েছিল টাটা। এর ভিত্তিতে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত নেয়। যা এক্কেবারে নিয়মমাফিক হয়নি।
জমি অধিগ্রহণের সঠিক নিয়মটা ঠিক কী?
শিল্পের জন্য সরকার আগে জমি অধিগ্রহণ করবে। যেখানে জমি অপেক্ষাকৃত কম উর্বর, যেখানে কৃষিকাজ সে অর্থে হয় না বা হলেও কৃষিজমিতে ফসল সে ভাবে হয় না— সেই সব জমি খুঁজে শিল্প সংস্থাকে জানাতে হবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সেই নিয়ম মানা হয়নি।
আরও পড়ুন: তাড়িয়ে কেন দোষ দেওয়া, প্রশ্ন টাটার
টাটার তরফে যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখন নিজেদের সিদ্ধান্তকে বেআইনি বলে দেখাতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গে সরকার বদলে গিয়েছে। কিন্তু, সংবিধান অনুযায়ী সরকারের বদল হয় না, শাসক দল পরিবর্তিত হয়ে ক্ষমতায় আসে। এর আগে রাজ্য সরকারের তরফে তিন বার যে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল, তাতে একেবারে ভিন্ন অবস্থান ছিল। এখন সর্বোচ্চ আদালতে রাজ্যই তার বিরোধিতা করছে।
এ দিন রাজ্য সরকারে তরফে আরও অভিযোগ জানানো হয়, টাটারা প্রথমে ছয়শ একর জমি চেয়েছিল। পরবর্তী কালে টাটা এক হাজার একর জমি চায় তৎকালীন বাম সরকারের কাছ থেকে। বাম সরকার খড়্গপুরে টাটাকে জমি দেওয়াতে সায় দিয়েছিল। এর পরে জমির পরিমাণ ৪০০ একর বাড়িয়ে সিঙ্গুরে হাজার একর জমি চায় টাটারা। ওই একই প্রকল্পে সায় দিয়েছিল বাম সরকার।
এ দিন বিচারপতি অরুণকুমার মিশ্র রাজ্য সরকারের তরফে আইনজীবীর কথা শুনে তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘‘এই যে ৪০০ একর অতিরিক্ত জমি চাওয়া হয়েছিল, কী কারণে হঠাৎ করে জমি চাওয়ার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল? প্রকল্প কী রদবদল হয়েছিল? আর প্রকল্পে কিছু বদল হলে সেই সমস্ত নথি কোথায়?’’
এ দিন এই বিষয় সংক্রান্ত সম্পূর্ণ তথ্য পরবর্তী শুনানির সময় রাজ্য সরকারকে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy