দু’মাস বন্ধ থাকার পরে শ্রীরামপুর-ব্যারাকপুরের মধ্যে কাল, নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই ফের শুরু হচ্ছে ফেরি চলাচল।
কয়েক মাস আগে ভদ্রেশ্বরের তেলেনিপাড়া ঘাটে অস্থায়ী জেটি ভেঙে ২১ জনের মৃত্যুর পরে রাজ্য জুড়েই ফেরিঘাটের হাল ফেরানোর দিকে নজর দেয় রাজ্যের পরিবহণ দফতর। দু’মাস আগে ব্যারাকপুরের ধোবিঘাট সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়। ফলে দু’পারের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। যাত্রীদের অসুবিধা কিছুটা লাঘব করতে অপর প্রান্তে শ্রীরামপুর যুগল আঢ্য ফেরিঘাট (স্থানীয় ভাবে এটিও ধোবিঘাট নামেই পরিচিত) থেকে ব্যারাকপুরের মণিরামপুর পর্যন্ত ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গত ৮ নভেম্বর থেকে এ ভাবে পারাপার চলছিল। কিন্তু পরিবহণ দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, যুগল আঢ্য ফেরিঘাটের পরিকাঠামোও ঢেলে সাজা হবে।
গত ৮ ডিসেম্বর থেকে যুগল আঢ্য ফেরিঘাট বন্ধ করে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শুরু হয়। গ্যাংওয়ের কাঠ এবং লোহার কাঠামো বদল করা হয়। পুরনো পন্টুন (জলে ভাসমান জেটি) হাওড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে সারাইয়ের জন্য। তার পরিবর্তে অন্য একটি পন্টুন ঘাটে লাগানো হয়েছে। নৌকো পাড়ে না-ভিড়লে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা যাতে জেটিতে না যেতে পারেন, সে জন্য গেট লাগানো হয়েছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর সন্তোষ সিংহ জানান, পরিবহণ দফতরের ৩৬ লক্ষ টাকায় সেচ দফতর ওই কাজ করছে। পয়লা জানুয়ারি থেকেই পরিষেবা চালু হয়ে যাবে। এর আগে পরিবহণ দফতরের দেওয়া ১০ লক্ষ টাকায় এই ঘাটে লাইফ-জ্যাকেট কেনা থেকে পানীয় জলের ব্যবস্থা, যাত্রীদের জন্য ছাউনি তৈরি, সিসি ক্যামেরা বসানোর মতো কাজ হয়েছে পুরসভার তত্ত্বাবধানে। ব্যারাকপুরের ঘাটও তৈরি হয়ে গিয়েছে। হুগলি জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা শুভেন্দুশেখর দাস বলেন, ‘‘কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। শ্রীরামপুরের ঘাট থেকে ফেরি পারাপারে সমস্যা নেই।’’
এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। শ্রীরামপুরের দিক থেকে ব্যারাকপুরে স্কুল-কলেজে যান প্রায় এক হাজার ছাত্রছাত্রী। আদালত-সহ বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরেও কাজের প্রয়োজনে বহু মানুষ পারাপার করেন। পরিষেবা বন্ধ থাকায় তাঁদের অন্যপথে পৌঁছতে হচ্ছিল। পরিষেবা চালু হলে তাঁদের সমস্যা দূর হবে। ঘাটের ইজারাদার তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জলপথ পরিবহণ নিয়ে সরকারি স্তরে এমন উদ্যোগ আগে দেখা যায়নি। যাত্রী নিরাপত্তার নিরিখে ঘাটের পরিকাঠামো অনেকটাই বেড়ে গেল।’’
বহু বছর ধরে শ্রীরামপুর-ব্যাপাকপুর ফেরি চলাচল করছে। শুরু হয়েছিল হাতে টানা নৌকো দিয়ে। তার পরে ভুটভুটি আসে। এক সময় লঞ্চও চলত। নদীর নাব্যতা কম থাকায় এখন তা চলে না। দু’মাস আগে শ্রীরামপুরে এসে পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য জানিয়ে দেন, ব্যারাকপুরের দিকে পাকা জেটি তৈরি হয়ে গেলে এখানে ঝুঁকিপূর্ণ ভুটভুটি তুলে ফেলা হবে। পারাপার করা হবে লঞ্চে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy