প্রতীকী ছবি।
যাত্রী পরিষেবায় কোনও রকম ত্রুটি রাখলে চলবে না। নিজেদের ত্রুটি সংশোধন করে নেওয়ার কথা কর্মীদের মনে করিয়ে দিলেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এ কে মিত্তল। জানালেন, নিজেদের ভুলত্রুটি শুধরে নিয়েই সময় মেনে চালাতে হবে ট্রেন।
রেলের বিরুদ্ধে যাত্রীদের অন্যতম প্রধান অভিযোগ হল, ঠিক সময়ে যথাযথ মানের পরিষেবা মিলছে না। রেলের ক্ষেত্রে পরিষেবা-তালিকার প্রথমটাই হচ্ছে সময় মেনে ট্রেন চালানো। কিন্তু রেল অধিকাংশ ক্ষেত্রে সেই প্রাথমিক শর্তটুকুও মেনে চলছে না বলে আমযাত্রীর অভিযোগ।
সোমবার কলকাতায় কর্মী-বৈঠকে পরিষেবার সেই প্রথম কথাটাই মনে করিয়ে দিয়েছেন বোর্ড-প্রধান। তিনি বলেন, ‘‘সময়ে ট্রেন চালাতে পারলেই যাত্রীদের মন জয় করা সম্ভব। তাই সময়ে ট্রেন চালাতেই হবে।’’ ভুলত্রুটি সংশোধনের কথা ওঠে এই প্রসঙ্গেই। ট্রেন-বিভ্রাটের অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে: রেলের কর্মী-অফিসারদের ভুল বা গাফিলতিতেই সময়ে ট্রেন চলে না; রক্ষণাবেক্ষণের ত্রুটিতেই বেলাইন হয় ট্রেন; কর্মীদের গাফিলতিতে স্টেশনে ঘোষণাটুকুও ঠিকঠাক হয় না...।
বোর্ড-প্রধান এ দিন জানান, ঠিক সময়ে ট্রেন চালাতে গেলে চাই যন্ত্রপাতির যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ। আর সিগন্যাল, লাইন রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকঠাক হলে যাত্রী-সুরক্ষাও ঠিক থাকবে। পণ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে অন্যান্য জোনের তুলনায় এগিয়ে থাকায় দক্ষিণ-পূর্ব রেলকে সাধুবাদ জানিয়েছেন চেয়ারম্যান মিত্তল। পরে সাংবাদিকদের কাছে তিনি বলেন, ‘‘এই অঞ্চলের তিনটি রেল জোনেরই পরিষেবার মান ভাল।’’
যদিও পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনে নানাবিধ যান্ত্রিক (সিগন্যাল ও রেললাইনের ত্রুটি) ত্রুটির জেরে সম্প্রতি বেশ কয়েক দিন ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত হয়ে যায়। লক্ষ লক্ষ যাত্রী চূড়ান্ত দুর্ভোগে পড়েন। ওই সব ঘটনায় রেলকে কড়া সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়। রেলের অন্দরমহলের খবর, সম্ভবত সেই সব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই বোর্ড-প্রধান এ দিন রেলকর্তাদের জানিয়ে দেন, লাইন এবং সিগন্যাল যাতে রোজ রোজ খারাপ না-হয়, তার বন্দোবস্ত করতে হবে। ব্যবহার করতে হবে উন্নত মানের যন্ত্র, যাতে সময়ে ট্রেন চালানো যায়। সেই সঙ্গেই তিনি জানান, কোনও কারণে পরিস্থিতির অবনতি হলে যাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে আরও বেশি করে প্রকৃত অবস্থা জানানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
যাত্রীদের অভিযোগ, কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে বা রেল-বহির্ভূত কোনও কারণে ট্রেন চলাচল থমকে গেলে ঘোষণাই বন্ধ করে দেয় রেল। ফলে যাত্রীরা বুঝতেই পারেন না, ট্রেন ফের চলবে কখন! বোর্ড-প্রধান এ দিন পূর্ব রেলের কর্তাদের বলেছেন, ‘‘যাত্রীদের সঙ্গে রেলের যোগাযোগ বাড়াতে হবে। ঠিকঠাক তথ্যও দিতে হবে তাঁদের। নইলে ক্ষোভ বাড়বে।’’ মিত্তলের আরও বক্তব্য, ট্রেন কেন আটকে রয়েছে, আবার কখন তা চলবে, পরিষ্কার করে সবই জানাতে হবে যাত্রীদের। প্রয়োজনে ঘোষণার বাড়তি ব্যবস্থা চালু করতে হবে।
বোর্ড-প্রধান এ দিন সকালে কলকাতায় এসে তিন জোনের (পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এবং মেট্রো) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। রেল সূত্রের খবর, বৈঠকে মিত্তল জানান, রেলের কাছে যাত্রীদের চাহিদা ক্রমাগত বাড়ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হওয়ায় বিদেশের রেল দেখে তাঁরা এ রেলের সঙ্গে তুলনা করছেন। কিন্তু এ দেশের রেল যে-হারে যাত্রী বহন করে, বিদেশের মানুষজন সেটা ভাবতেই পারবেন না। ‘‘তা সত্ত্বেও এ দেশের ট্রেন পরিষেবা অনেক ভাল,’’ দাবি করেছেন রেল বোর্ডের চেয়ারম্যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy