ছটপুজোর মুহূর্ত। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ছটপুজো উপলক্ষে দুই জেলায় গঙ্গার ঘাটগুলি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার পাশাপাশি নিরাপত্তার দিকে নজর দিয়েছে প্রশাসন। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন ভার্চুয়ালি করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে রয়েছে রিষড়া ফেরিঘাট, ভদ্রেশ্বরের শিবতলা ঘাট।
রিষড়া শহরে ১০টি ঘাট রয়েছে। পুরসভা সূত্রের দাবি, সেখানে পর্যাপ্ত আলো, সিসি ক্যামেরার বসছে। পুলিশের পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগ করা হবে। থাকবে চিকিৎসা ব্যবস্থা। রাখা হবে জৈব শৌচাগার। পুরপ্রধান বিজয়সাগর মিশ্র বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার বিকেল ও শুক্রবার ভোর থেকে গঙ্গায় ভেসেলে নজরদারি চালাবেন পুরপ্রতিনিধিরা। দুর্ঘটনা এড়াতে মাইকে প্রচার চলবে। গঙ্গায় অঘটন এড়াতে স্থানীয় স্যুইমিং ক্লাবগুলি থেকে স্বেচ্ছাসেবীনেওয়া হয়েছে।’’
ভদ্রেশ্বর পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রায় ৩০ হাজার পুণ্যার্থী গঙ্গায় পুজো দেন। কাঙালি ঘাট থেকে তেলেনিপাড়া ঘাট পর্যন্ত রাস্তা সাজানো হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা, আলো, জলের বন্দোবস্ত থাকবে। পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী জানান, প্রায় দু’হাজার মানুষকে ছটপুজোর সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। ঘাটে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। চাঁপদানিতে ইন্দিরা ময়দানে সবথেকে বেশি পুণ্যার্থী জড়ো হন। ভদ্রেশ্বরের মতো এখানেও যাবতীয় ব্যবস্থা থাকছে।
শেওড়াফুলি ছাতুগঞ্জ, বৈদ্যবাটীর শ্যাম চ্যাটার্জি ও নিমাইতীর্থ ঘাটে ভিড় হয় বেশি। স্থানীয় পুরপ্রধান পিন্টু মাহাতো বলেন, ‘‘পুণ্যার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে সব ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের নিরাপত্তার ব্যাপারেও জোর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ-প্রশাসন নিষিদ্ধ বাজি না ফাটানোর দিকেও লক্ষ্য রাখবে।’’
চুঁচুড়ায় ১৮টি, চন্দননগরে ১২টি ঘাটে ভিড় হবে। দুই পুরসভার তরফে ঘাটগুলিতে স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে। থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা। চুঁচুড়ার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে চুনি মিঞার ঘাট, বকুলতলা ঘাট, জেলখানার মাঠ, মল্লিকঘাটেও ভিড় উপচে পড়ে। পুর পারিষদ (স্বাস্থ্য) জয়দেব অধিকারী জানান, ঘাটগুলিতে বাড়তি স্বেচ্ছাসেবক রাখা হবে। পথে পানীয় জলের গাড়ি থাকবে। চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুজোর দিন ভোর ৩টেথেকে জল দেওয়া হবে।’’ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঘাটগুলিতে পুলিশ থাকবে। জলেও নজর রাখা হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যেরা স্পিড বোটেগঙ্গায় টহল দেবেন।
আরামবাগ শহর সংলগ্ন দ্বারকেশ্বরের তিনটি ঘাট এবং পুরশুড়া থানা সংলগ্ন দামোদরের একটি ঘাট মঙ্গলবার পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা পরিদর্শন করেন। পুরসভার তরফে দ্বারকেশ্বরের তিনটি ঘাট কাদা-পলি সরিয়ে সাফ করা হয়েছে। পুরপ্রধান সমীর ভান্ডারী জানান, প্রায় ১২০০ ভক্তের জন্য ঘাটগুলিতে আলোর ব্যবস্থা, মহিলাদের পোশাক বদলানোর ছাউনি করা হয়েছে। পুরশুড়ার ঘাটটিও পুলিশের উদ্যোগে পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
হাওড়ায় হুগলি নদীর ধারে বাউড়িয়া লঞ্চঘাট থেকে উলুবেড়য়ার শতমুখী শ্মশান পর্যন্ত ১০টি ঘাটকে ছটপুজোর জন্য নির্দিষ্ট করেছে পুরসভা। পুরসভার তরফে প্রতি ঘাটে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেকঘাটে থাকবেন পুরকর্মী। থাকবে নৌকো। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মী ও চিকিৎসক থাকবেন, সাফাইকর্মীরাও থাকবেন। নদীতে বর্জ্য না ফেলারজন্য প্রচার চালানো হবে। থাকবে পুলিশ। মঙ্গলবার অন্যান্য পুরসদস্যদের নিয়ে বিভিন্ন ঘাট ঘুরে দেখেন পুরপ্রধান অভয় দাস এবং উপপুরপ্রধান ইনামুর রহমান। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ছটপুজো যাতে নির্বিঘ্নে হয় তার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
সাঁকরাইলে গঙ্গার ঘাটগুলিতে সাফাই শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন। তারা জানিয়েছে, নিরাপত্তার কারণে ঘাটগুলিতে কাঠ ও বাঁশের কাঠামো করে জাল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ব্লকের ১৪টি ঘাট ছটপুজোর জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy