Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

ভোটাভুটির আগেই ইস্তফা পুরপ্রধানের

রঘুনাথপুরের ছায়া সোনামুখীতেও। তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অনাস্থা আনা হচ্ছে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং তার অধীন বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে। অন্য দিকে, বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভায় সেই দ্বন্দ্বই প্রকাশ্যে এসেছে সিপিএমে। যার জেরে পদত্যাগই করে বসলেন সোনামুখীর পুরপ্রধান, সিপিএম নেতা কুশল বন্দ্যোপাধ্যায়!

নিজস্ব সংবাদদাতা
সোনামুখী শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:১৭
Share: Save:

রঘুনাথপুরের ছায়া সোনামুখীতেও।

তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে অনাস্থা আনা হচ্ছে রঘুনাথপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এবং তার অধীন বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে। অন্য দিকে, বাঁকুড়ার সোনামুখী পুরসভায় সেই দ্বন্দ্বই প্রকাশ্যে এসেছে সিপিএমে। যার জেরে পদত্যাগই করে বসলেন সোনামুখীর পুরপ্রধান, সিপিএম নেতা কুশল বন্দ্যোপাধ্যায়!

সোনামুখী পুরসভার মোট আসন ১৫। বামফ্রন্টের দখলে থাকা পুরবোর্ডে সিপিএমের ৭ জন এবং আরএসপি-র এক জন কাউন্সিলর রয়েছেন। বিরোধী হিসাবে রয়েছেন তৃণমূলের ৬ এবং তৃণমূল সমর্থিত এক নির্দল কাউন্সিলর। যথেচ্ছাচার, অনিয়ম, অনুন্নয়নের অভিযোগ তুলে গত ২৯ অক্টোবর পুরপ্রধান কুশলবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিল বিরোধী তৃণমূল। সেই অনাস্থাপত্রে সই করেছিলেন ৫, ১০ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের তিন সিপিএম কাউন্সিলরও। ফলে, খাতায়কলমে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে ৮ সদস্যের বাম পুরবোর্ড। অবশেষে ভোটাভুটির আগেই সোমবার বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসকের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন সিপিএম পুরপ্রধান কুশলবাবু।

আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ার ভয়েই কি পদত্যাগ? এই প্রশ্নের সরাসরি জবাব দেননি কুশলবাবু। তাঁর মন্তব্য, “নিজের দলেরই তিন কাউন্সিলর আমার বিরুদ্ধে আনা অনাস্থায় সই করেছেন। নৈতিক ভাবেই আমার পুরপ্রধানের পদ থেকে সরে যাওয়া উচিত। তাই পদত্যাগ করলাম। মহকুমাশাসকের কাছে ডাকযোগে এবং মেল করে এ দিনই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছি। এর বেশি কিছু বলার নেই।” কুশলবাবু এই কথা বললেও সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের অভিযোগ, “ওই পুরসভায় আমাদের দলের কাউন্সিলরদের বহুদিনই ভয় দেখিয়ে ও টোপ দিয়ে ঘর ভাঙানোর চেষ্টা চলছিল। এ বার ওরা (তৃণমূল) সেটা করেই দেখাল।” সিপিএমের সোনামুখী জোনাল কমিটির সম্পাদক শেখর ভট্টাচার্য আরও এক ধাপ এগিয়ে দাবি করেছেন, “অনাস্থার চিঠিতে সই করার পরে আমাদের ওই তিন কাউন্সিলরকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের মোবাইলের সিমও বদলে দেওয়া হয়েছে, যাতে আমরা যোগাযোগ করতে না পারি!”

সিপিএমের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে সোনামুখী পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা ১১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সুরজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “জোরাজুরিই যদি করতাম, তা হলে ২০১২ সালের অগস্ট মাসে আনা অনাস্থায় আমাদের এক কাউন্সিলরকে ভাঙিয়ে পুরবোর্ড যে ধরে রেখেছিল বামফ্রন্ট, সেটা কি পারত? কবেই বোর্ড ভেঙে দিতাম!” তাঁর আরও দাবি, সিপিএমের যে-সব কাউন্সিলর অনাস্থায় সই করেছেন, তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবেই করেছেন। চাপ দেওয়ার কোনও প্রশ্ন নেই। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অরূপ খাঁ সুরজিতের বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, “জোরাজুরির অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা। এলাকায় উন্নয়নের কাজ না হওয়াতেই আমাদের আনা অনাস্থায় সই করেছেন ওই তিন সিপিএম কাউন্সিলর। সংখ্যালঘু হয়ে পড়ায় এখন বাজে কথা বলছেন সিপিএম নেতারা।”

অনাস্থায় সই করা সোনামুখীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রূম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এ দিন বলেন, “আমাকে কেউ চাপ দেয়নি। উন্নয়নমূলক কাজ না হওয়াতেই দলের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থায় সই করেছি আমি।” ১০ নম্বর ওয়ার্ডের শুভেন্দু দত্ত এবং ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিজন বাউরির সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসক পলাশ সেনগুপ্ত বিকেলে জানান, তিনি বাঁকুড়ায় একটি কাজে গিয়েছিলেন। তাই সোনামুখী পুরপ্রধানের পদত্যাগের বিষয়টি জানেন না। “চিঠি না দেখা পর্যন্ত কিছু বলতে পারব না।”—বলেন মহকুমাশাসক।

অন্য বিষয়গুলি:

sonamukhi resignation municipality chairman tmc
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE