পাত্রী সদ্য মাধ্যমিক পাশ করেছে। আর পাত্র সবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের মধ্যে বিয়ের তোড়জোড় চলছিল পাত্রের গ্রামে। খবর পেয়ে গ্রামে গিয়ে বিয়ে রুখলেন বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ থানার ওসি রামনারায়ণ পাল এবং বিডিও শঙ্খশুভ্র দে।
সোমবার রাতে হিড়বাঁধের লাল রাইডিহি গ্রামের ঘটনা। ওসি জানান, সোমবার রাত আটটা নাগাদ ওই গ্রামের বছর উনিশের এক তরুণের সঙ্গে খাতড়ার বলরামপুর গ্রামের এক নাবালিকার বিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে থানায় খবর আসে। সঙ্গে সঙ্গে ওসি বিষয়টি বিডিও এবং শিশুকল্যাণ দফতরের আধিকারিককে জানান। বিডিও-কে সঙ্গে নিয়ে ওই গ্রামে হাজির হন ওসি। রামনারায়ণবাবুর কথায়, “পাত্র ও পাত্রী, দু’জনেরই যে এখনও বিয়ের বয়স হয়নি, তা দু’পক্ষকে বুঝিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বলি। তাঁরা আমাদের কথা মেনে বিয়ে আপাতত বন্ধ করতে রাজি হন।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খাতড়া থানার বলরামপুর গ্রামের এক দোকানির সদ্য মাধ্যমিক পাশ ১৬ বছরের মেয়ের সঙ্গে লাল রাইডিহি গ্রামের ওই তরুণের সম্পর্ক রয়েছে। সোমবার রাতে ওই নাবালিকা ও তার বাবা মা লাল রাইডিহিতে হাজির হন। পাত্র ও পাত্রীর বাড়ির সম্মতিতে রাতেই বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিডিও বলেন, “১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে দণ্ডনীয় অপরাধ, সেকথা ওই নাবালিকার বাবা-মা এবং পাত্রের বাড়ির লোককে বোঝানো হয়। লিখিত মুচলেকা দিয়ে তাঁরা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন। পাত্রীর বয়স ১৮ বছর হওয়ার পরে ওই যুবকের সঙ্গে তার বিয়ে হবে বলে দুই পরিবারের তরফে লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।” এত কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে অপরাধ, সে কথা মেনে নিয়েছেন ওই কিশোরীর বাবাও। তবে তাঁর দাবি, “পাত্র ভাল, মেয়ের পূর্ব পরিচিত। আমরা দুই পরিবারই রাজি ছিলাম বলে তাড়াতাড়ি বিয়েটা দিতে চেয়েছিলাম। থানার ওসি, বিডিও যখন বলেছেন, তখন আর বিয়ে এখন বিয়ে দেব না।” পাত্রের বাবা অবশ্য দাবি করেন, “মেয়েটির যে এখনও বিয়ের বয়স হয়নি, তা আগে জানতাম না। তবে, পরে ওই মেয়েটিকেই আমার ছেলে বিয়ে করবে।”
বিডিও-র কথায়, “প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের বিয়ে দেওয়া অনুচিত কাজ, তার প্রচারে খামতি রয়েছে। প্রতিটি পঞ্চায়েতকে নাবালিকাদের বিয়ের বয়স সম্পর্কে সচেতন করার জন্য প্রচার চালাতে বলা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy