মাঝে কিছু দিন শান্ত থাকার পরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল পাত্রসায়রের বালসি ১ পঞ্চায়েত এলাকা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় মারপিট হল দুই গোষ্ঠীর সমর্থকদের মধ্যে। বালসির ব্যাঙ্ক মোড়ে শাসক দলের বালসি ২ অঞ্চল অফিসে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল অন্য গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। মারপিটে কয়েক জন জখমও হয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তৃণমূলের পাত্রসায়র ব্লক সভাপতি স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে একদা তাঁরই ঘনিষ্ঠ ব্লকের দাপুটে নেতা নব পালের বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে। এলাকার রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এখন সবচেয়ে বেশি বালসি ১ ও বালসি ২ পঞ্চায়েতে। বালসি ১ পঞ্চায়েতটি বর্তমানে নববাবুর গোষ্ঠীর দখলে। বালসি-২ পঞ্চায়েতে ক্ষমতাসীন স্নেহেশবাবুর গোষ্ঠী।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই দুই পঞ্চায়েতের কর্তৃত্ব নিয়ে দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া বারবার প্রকাশ্যে চলে আসছে। গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকবার দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট হয়েছে। পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছে। পুলিশ অবশ্য এখনও অবধি কোনও ঘটনাতেই কাউকে ধরেনি। প্রায় দিনের অশান্তিতে একই সঙ্গে আতঙ্কিত ও তিতিবিরক্ত এলাকার বাসিন্দারা। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। কেন না, গত কয়েক মাসের অশান্তি নিয়ে পরপর অভিযোগ হওয়া সত্ত্বেও কোনও পক্ষের কাউকেই পুলিশ গ্রেফতার করেনি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন নব পাল এবং তাঁর অনুগামীরা বাইক-মিছিল করে বালসিতে মিটিং করতে গিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই মিছিলকে কেন্দ্র করেই হামলা, পাল্টা হামলা হয়েছে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে। বালসি ২ পঞ্চায়েতের প্রধান বুদ্ধদেব পালের অভিযোগ, “বৃহস্পতিবার বিকেলে পাত্রসায়র, ফকিরডাঙা, নারায়ণপুর এলাকা থেকে লোক নিয়ে গিয়ে বালসিতে মোটরবাইক মিছিল করেছেন নব পাল। ওই মিছিল থেকেই পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপরে হামলা চালানো হয়েছে। ব্যাঙ্কমোড়ে আমাদের দলের অফিসে হামলা হয়েছে। অফিসের সামনে রাখা কয়েকটি মোটরবাইক ও সাইকেল ভেঙে দেওয়া হয়।” ব্লক তৃণমূল সভাপতির অভিযোগ, “নব পালের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী আমাদের পার্টি অফিসগুলি ভাঙার জন্যই বাইক-মিছিল করেছে। প্রথমে বালসিতে হামলা চালায় ওরা। সেখান থেকে ফেরার পথে পাত্রসায়র বাজারে আমাদের পার্টি অফিস ভাঙার জন্য হামলা করলেও পুলিশ এসে যাওয়ায় ওরা পালাতে বাধ্য হয়েছে।”
এই ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা। অনেক ব্যবসায়ীই তড়িঘড়ি দোকান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন। তৃণমূল নেতা নববাবু অবশ্য সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে দাবি করেন, পুলিশের অনুমতি নিয়েই এ দিন বিকেলে বালসিতে মিটিং করতে গিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, “বুদ্ধ পালের নেতৃত্বে কিছু দুষ্কৃতী আমাদের কয়েক জনের বাইকের উপরে প্রথমে হামলা চালায়। মারধর করে। ওদের জন্যই আমাদের মিটিং ভেস্তে গিয়েছে। আমাদের কেউ প্রথমে ওদের উপরে হামলা করেনি বা পার্টি অফিস ভাঙচুর করতে যায়নি।” তাঁর আরও দাবি, এলাকায় স্নেহেশ মুখোপাধ্যায়ের জনসমর্থন দিন দিন কমছে। দলের দুর্দিনের কর্মীরা তাঁকে ছেড়ে তাঁদের দিকে চলে আসছেন। তাই তাঁদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।
বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, পাত্রসায়র ও বালসিতে উত্তেজনা থাকায় পুলিশি টহলদারি শুরু হয়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy