অপসারিত বীরভূমের তৃণমূলের বুথ সভাপতি শেখ খয়রাত (সাদা জামা)। —নিজস্ব চিত্র।
বীরভূমের জেলা সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে চা খাওয়াই কি কাল হল? অভিযোগ, তার পরই নাকি বুথ সভাপতি পদ খোয়ালেন জেলার এক তৃণমূল নেতা! বীরভূমের সদাইপুর থানার লালমোহনপুরের বুথ সভাপতি শেখ খয়রাত ওরফে কটার অভিযোগ, সিউড়ির বিধায়ক তথা তৃণমূলের কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর নির্দেশে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে তাঁকে। সেই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে শাসক দলের অন্দরে। অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে কাজলের ‘দ্বন্দ্ব’-এর জেরেই এমন ঘটনা কি, উঠছে প্রশ্ন। যদিও এ ব্যাপারে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব।
গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর প্রায় দু’বছর জেলে ছিলেন অনুব্রত। তাঁর অনুপস্থিতিতে বীরভূমের দলের সাংগঠনিক হাল ধরার জন্য তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। জামিনে অনুব্রতর মুক্তির পর এখনও সেই কমিটি বহাল রয়েছে। সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ, সিউড়ির বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ এবং তৃণমূল নেতা সুদীপ্ত ঘোষ।
জেলা সভাপতি পদে অনুব্রত থাকলেও রাজ্য নেতৃত্ব বার বার দাবি করেছেন, সব সিদ্ধান্ত নেবে কোর কমিটিই। অনেকের মতে, অনুব্রত জেলায় ফেরার পর কোর কমিটির মধ্যেই কিছুটা ‘কোণঠাসা’ কাজল। অনুব্রতের সঙ্গে দূরত্ব রয়েই গিয়েছে তাঁর। দুর্গাপুজোর পর বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় ১৭ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত চলা বিজয়া সম্মিলনীর কোনও মঞ্চেই কাজল-কেষ্টকে এক ফ্রেমে দেখা যায়নি। যদিও অনুব্রতের সঙ্গে কোর কমিটির বাকি সদস্যেরা উপস্থিত ছিলেন। অনেকের মতে, শেখ খয়রাতের পদ খোয়ানো কেষ্ট-কাজল সংঘাতের ফল!
গত ৩১ অক্টোবর সিউড়ি ১ নম্বর ব্লকের কচুজোড়ে সারদা সন্তান সংঘের কালীপুজোর উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন কাজল পরে একটি চা চক্রের আয়োজন করেন। অভিযোগ, সেই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার জন্য বুথ সভাপতির পদ খুঁইয়েছেন শেখ খয়রাত। তাঁকে সরিয়ে নতুন বুথ সভাপতি করা হয়েছে শেখ গিয়াসউদ্দিনকে।
পদ খুঁইয়ে বিকাশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লালমোহনপুরে তৃণমূলের প্রাক্তন বুথ সভাপতি। তিনি বলেন, ‘‘বিধায়ক বিকাশ এবং সদাইপুর থানার ওসি মিখাইল মিয়া আমাকে পদ থেকে সরিয়েছেন। আমার অপরাধ, জেলা সভাধিপতির সঙ্গে চা খেয়েছিলাম। বিধায়ককে বিষয়টি জানাতে তিনি বলেন, বাকি নেতাদের পায়ে ধরে থাক। কাজল শেখের লোক হয়েছিস কি আর করা যাবে?’’ শেখ খয়রাত জানান, বিষয়টি তিনি কাজলকে জানাবেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘১২ বছর ধরে আমি দলের বুথ সভাপতির পদ সামলেছি। ভোটে লিড দিয়েছি। আর দলের নেতার সঙ্গে চা খাওয়ার জন্য আমাকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy