বিয়ারের বিক্রি গত বারের তুলনায় বাড়লেও চাহিদা তুলনায় কম ছিল। — প্রতীকী চিত্র।
শারদোৎসবের মরসুমে মদের বিক্রিবাটা প্রতি বছরই গত বছরকে ছাপিয়ে যায়। এ বারও সেই ধারা বজায় রয়েছে। এ বার পুজোর সময়ে পুরুলিয়া জেলায় ২৩ কোটিরও বেশি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে। পুরুলিয়া জেলা আবগারি দফতরের দাবি, ষষ্ঠী থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত জেলায় মদ বিক্রি হয়েছে ২৩ কোটি ৬৬ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার।
বাঁকুড়াতেও পুজোর দিনগুলিতে মদের বিক্রি গত বছরকে ছাপিয়েছে। আবগারি দফতর জানাচ্ছে, এ বার মদ বিক্রি হয়েছে ১০ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকার বেশি। যা সামগ্রিক ভাবে গত বারের চেয়ে ১৩.৬৪ শতাংশ বেশি।
পুরুলিয়া জেলা আবগারি দফতর জানাচ্ছে, গত বছরে পুজোয় জেলায় ১৯ কোটিরও বেশি টাকার মদ বিক্রি হয়েছিল। তার আগের বছরে অঙ্কটা ছিল ১৭ কোটির কাছাকাছি। ফি বছরই যে উৎসবের সময়ে মদের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে, জেলা আবগারি দফতরের পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট।
আবগারি দফতর সূত্রের খবর, চলতি বছরে দেশি মদ বিক্রি হয়েছে ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার লিটারের বেশি। সেখানে বিদেশি মদ বিকিয়েছে ১ লক্ষ লিটারের বেশি। বিক্রি বেড়েছে বিয়ারেরও। গত বছরের হিসাব ছাপিয়ে এ বারে বিয়ার বিক্রি হয়েছে দেড় লক্ষ লিটারের বেশি। এ বারে বিদেশি মদও বেশি বিক্রি হয়েছে। তবে কমেছে দেশি মদের বিক্রি। আরও খবর, পুজোর মরসুমে ২৩ কোটিরও বেশি টাকার মদ বিক্রি হয়েছে জেলার ২২৫টি দোকান থেকে। এবারে পুজোয় কোনও ‘ড্রাই-ডে’ অর্থাৎ মদের দোকানের ঝাঁপ বা পানশালা বন্ধ ছিল না। দফতর সূত্রে জানা যায়, কোনও দোকান বা পানশালা বন্ধ রাখতে চাইলে দফতরের অনুমতি নিয়ে বন্ধ রাখার সুযোগ ছিল।
পুজোর অনেক আগে থেকেই এ বারে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে মদের অবৈধ ঠেক ও চোলাইয়ের ঠেকে অভিযান শুরু করেছিল আবগারি দফতর। জেলা আবগারি দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “জেলা জুড়ে অবৈধ ঠেক বা বিভিন্ন হাটে বেশ কিছু দিন ধরেই আমাদের অভিযান চলছে। রাজস্বও বেড়েছে। এ ছাড়া, পুজোর সময়েও অবৈধ মদ বা চোলাইয়ের ঠেকে নিয়মিত হানা দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজো থেকে লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত অবৈধ ঠেকে হানা দেওয়ার পাশাপাশি একাধিক মামলাও করা হয়েছে।”
বাঁকুড়া জেলাতেও এ বার পুজোর দিনগুলিতে মদের বিক্রি গত বছরকে ছাপিয়ে গিয়েছে। এখানে দেশি মদের চাহিদা ছিল সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলিতে দেশি মদ বিকিয়েছে বেশি। তবে বিদেশি মদের চাহিদাও গত বারের তুলনায় অনেকটা বেড়েছে এ বার। মুকুটমণিপুর, বিষ্ণুপুরের মতো পর্যটনকেন্দ্রগুলির ব্যবসায়ীরা জানান, পুজোর ছুটি কাটাতে বাইরে থেকে আসা ক্রেতাদের অনেকে বিদেশি মদের খোঁজে এসেছিলেন। মূলত হুইস্কি, স্কচের চাহিদাই বেশি ছিল। বিয়ারের বিক্রিও গত বারের তুলনায় বাড়লেও চাহিদা তুলনায় কম ছিল।
জেলার এক ব্যবসায়ী বলেন, “অক্টোবরে পুজো হওয়ায় গরম বেশি থাকে না। তাই বিয়ারের চাহিদা বরাবরই কম থাকে। এ বারও তা-ই ছিল। তবে গ্রামাঞ্চল বা শহরের দিনমজুর শ্রেণির মানুষের ভিড়ই এ বার বেশি ছিল।” দেশি মদের চাহিদা বাড়ার জন্য মূল্যবৃদ্ধিও অন্যতম কারণ বলে মত অনেকের। বাঁকুড়া শহরের এক টোটোচালক বলেন, “পুজোর কেনাকাটায় ভাল খরচ হয়েছে। এ সময়ে সাধারণ যাত্রীও কম থাকায় রোজগার কম হয়েছে। কিছুটা সাশ্রয়ের লক্ষ্যেই তাই দু’দিন দেশি মদ কিনেছি।”
মদে বসতি লক্ষ্মী
পুরুলিয়া
২০২৩: ১৯ কোটি ৪ লক্ষ ৬ হাজার
২০২৪: ২৩ কোটি ৬৬ লক্ষ ৬৮ হাজার
বাঁকুড়া
২০২৩: ৯ কোটি ১১ লক্ষ ৩২ হাজার
২০২৪: ১০ কোটি ৩৫ লক্ষ ৫৯ হাজার
(তথ্যসূত্র: জেলা আবগারি দফতর)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy