গেট আটকে সিউড়িতে চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র
জল প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আগেই সরব হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক স্বপনকান্তি ঘোষ। এ বার পেনশনের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন অবসরপ্রাপ্ত পুর-কর্মীরা। সিউড়ি পুরসভার ঘটনা। সোমবার ওই কর্মীরা কার্যত পুরসভা অচল রেখে বিক্ষোভ দেখান।
দরজা আগলে পোস্টার সেঁটে সকালে বিক্ষোভ শুরুপ করেন ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত পুরপ্রধান, উপপুরপ্রধান, কোনও কাউন্সিলর, কর্মীরা পুরসভায় ঢুকতে পারেননি। বিক্ষোভের জেরে শুধুমাত্র পানীয় জলের পরিষেবা বাদ দিলে অন্য পুরপরিষেবা ব্যাহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত জেলা ট্রেজারি আধিকারিক ও পুরসভার মধ্যে একপ্রস্ত আলোচনায় পেনশন পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে এ দিনের মতো বিক্ষোভে ইতি টানেন অবসরপ্রাপ্ত কর্মীরা। তবে তাঁদের হুঁশিয়ারি, দাবি না মিটলে ফের আন্দোলন শুরু হবে। প্রসঙ্গত, মাস দু’য়েক পেনশন না পেয়ে গত বছর শেষ দিনেই আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা। তাঁরা পুরকর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন, দাবি না মিটলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবেন। দাবি মেটেনি। তাই সোমবার আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন তাঁরা। পুর-পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মৃণাল বসু জানান, অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মোট পাঁচটি সংগঠন এ দিনের বিক্ষেভে সামিল হয়েছিল। এ দিন সকাল থেকেই পুরসভার দরজায় পোস্টার সেঁটে হাজির হয়েছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সাফাই কর্মী লক্ষ্মী কাহার, শান্তি হাঁড়ি, রোড সুপারভাইজার দেবনারায়ণ ভট্টাচার্যের মতো আরও অনেকে। তাঁদের ক্ষোভ, “মূলত পেনশনের উপরেই সংসার চলে। দীর্ঘ তিন মাস পেনশন না পাওয়ায় সংসার চলছে না। কেন পেনশন পাচ্ছি না, তারও কোনও সদুত্তর পুরসভা দিতে পারছে না। তাই অশক্ত শরীর নিয়ে এ ভাবে আন্দোলন করতে হচ্ছে। জেলাশাসককেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
যদিও পুরসভার অন্দরের খবর, এই খাতে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় পেনশন দেওয়া যায়নি। ফান্ড ডাইভার্ট করে যদিও বা ওঁদের পেনশন এতদিন দেওয়া হত সেটা করার জন্যও পর্যাপ্ত টাকা নেই। সমস্যা সেখানেই। পুরসভার ট্রেজারি অ্যাকাউন্ট থেকে যদি কোনও ভাবে টাকার ব্যবস্থা করা যায় সেই চেষ্টাই করছে পুরসভা। একটা সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হবেই, সেটা জোরে সঙ্গে বলা যাচ্ছে না। পুরপ্রধান উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায় অভিযোগের সত্যতা মেনে নিয়েছেন। তনি বলেন, “আসলে পুরসভার ১৩২ জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রয়েছে, যাঁদের পেনশন মেটাতে প্রতিমাসে পুরসভার সধারণ খাত থেকে ৮ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই টাকা এই মুহূর্তে পুরসভার খাতে নেই। রাজ্য সরকার পেনশনের ৪০ শতাংশ দিয়ে থাকে। সেটা মার্চের আগে পাওয়া যাবে না। তাই পেনশন দেওয়া যায়নি। পুরসভা ইচ্ছে করে টাকা দিচ্ছে না এমনটা নয়। তবে একটা মধ্যবর্তী উপায় ভাবা হয়েছে ওঁদের পেনশন মেটানোর জন্য।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy