Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে আড়শার সভাপতির নাম পাঠালেন মন্ত্রী

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে সরাসরি তৃণমূলের জেলা সভাপতির কাছ থেকে এ বার মুখবন্ধ খামে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নাম পৌঁছল আড়শায়। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দলীয় সদস্যদেরই আনা অনাস্থায় পদ হারান। মঙ্গলবার নতুন সভাপতি নির্বাচন ছিল। কিন্তু সভাপতি নির্বাচন ঘিরে ফের যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে একাধিক নাম না উঠে আসে, তাই এ বার সরাসরি পদক্ষেপ করলেন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আড়শা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:০৩
Share: Save:

গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে সরাসরি তৃণমূলের জেলা সভাপতির কাছ থেকে এ বার মুখবন্ধ খামে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির নাম পৌঁছল আড়শায়।

চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দলীয় সদস্যদেরই আনা অনাস্থায় পদ হারান। মঙ্গলবার নতুন সভাপতি নির্বাচন ছিল। কিন্তু সভাপতি নির্বাচন ঘিরে ফের যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে একাধিক নাম না উঠে আসে, তাই এ বার সরাসরি পদক্ষেপ করলেন জেলা সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। মুখবন্ধ খামে দলেরই এক নেতাকে দিয়ে একটি মাত্র নাম পাঠান তিনি।

২৩ সদস্যের এই পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল ১৩, কংগ্রেস ১, সিপিএম ৮ ও ফব-র ১টি আসন রয়েছে। গত ২৩ ডিসেম্বর তৃণমূলের ৬ সদস্য দলেরই সভাপতি তুষ্টরানি রাজোয়াড়ের বিরুদ্ধে মহকুমা শাসকের (সদর) কাছে অনাস্থার প্রস্তাব পাঠান। ওই চিঠিতে কংগ্রেসের ও ফব-র একজন করে সদস্যও স্বাক্ষর করেছিলেন। গত ৬ জানুয়ারি অনাস্থা প্রস্তাবের উপর ভোটাভুটি হয়। তাতে তৃণমূলের ৮ সদস্য ও সিপিএমের ৪ সদস্য এবং কংগ্রেসের ও ফব-র একজন করে সদস্য তুষ্টরানির বিপক্ষে ভোট দেন। সে দিন তৃণমূলের ৫ জন ও সিপিএমের ৪ জন সদস্য গরহাজির ছিলেন।

মঙ্গলবার নতুন সভাপতি নিবার্চনকে ঘিরে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছবি প্রকাশ্যে আসতে পারে, এই আশঙ্কায় এ বার আর কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কেন না বিগত দিনে কোনও দল একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা না পাওয়ায় বারবার অনাস্থার ভোটাভুটি দেখেছে আড়শা। বিরোধীরা বলেছেন, বারবার অনাস্থা আসায় আড়শার উন্নয়নে প্রভাব পড়েছে। বিগত পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারেও এলাকার উন্নয়নের সঙ্গে স্থায়ী পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের জন্য বাসিন্দাদের কাছে ভোট চেয়েছিল তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু দীর্ঘদিন পরে আড়শা পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল একক সংখ্যা গরিষ্ঠ দল হওয়া স্বত্ত্বেও অনাস্থার ভোটাভুটি এড়াতে পারল না। এতে দৃশ্যতই অস্বস্তিতে পড়ে দল।

পাশাপাশি অনাস্থা প্রস্তাবকে ঘিরে ওই এলাকায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও প্রকাশ্যে চলে আসে। তাতে আরও অস্বস্তি বাড়ে নেতৃত্বের। তা ছাড়া সম্প্রতি বহিরাগত এবং ঠিকাদারদের ঘনিষ্ঠ কিছু লোকজন পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনায় সরাসরি নাক গলাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে থাকা দলেরই একাংশ এই অভিযোগ তুলেছিলেন। এই বিষয়গুলি মাথায় রেখেই এ দিন মুখবন্ধ খামে নাম পাঠানোর ব্যবস্থা বলে দল সূত্রের খবর।

এ দিন মোট ২৩ সদস্যের মধ্যে ২২ সদস্যই উপস্থিত ছিলেন। গরহাজির ছিলেন শুধু প্রাক্তন সভাপতি তুষ্টরানি রাজোয়াড়। জেলা থেকে পাঠানো কৌশল্যা সহিসকেই সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। তিনি আগে ক্ষুদ্রশিল্প, বিদ্যুৎ ও অচিরাচরিত শক্তি বিভাগের কর্মাধক্ষ্য ছিলেন। প্রসঙ্গত তিনি অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষেও স্বাক্ষর করেছিলেন।

এ দিন জেলা সভাপতির ওই চিঠি আড়শায় নিয়ে গিয়েছিলেন দলের নেতা নবেন্দু মাহালি। তিনি বলেন, “জেলা সভাপতি মুখবন্ধ খামে আমাকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। তা আমি ওই পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শেখ সালে মহম্মদের হাতে তুলে দিই। যাতে কোনও দ্বিতীয় নাম না আসে তাই জেলা সভাপতি এই চিঠি আমাকে দিয়েছিলেন।” তিনি জানান, জেলা সভাপতির নির্দেশ অনুযায়ী এ দিন কৌশল্যাদেবীকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। তবে কড়া নিরাপত্তায় খামতি ছিল না।

অন্য বিষয়গুলি:

panchayat samiti tmc inter clash arsha
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE