খয়রাশোলে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় জড়িত অভিযোগে দলেরই বিরোধী গোষ্ঠীর পাঁচ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার পুলিশ। যাঁদের খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির এক তৃণমূল সদস্য রয়েছেন। শুক্রবার রাত ও শনিবার দুপুরে খয়রাশোল থেকে তাঁদের ধরা হয়। ধৃতেরা হলেন জয়নাল শেখ, পার্থ গোস্বামী, যুদ্ধপতি বাউড়ি, অরুণ দাস ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কালীচরণ দাস। শনিবার ও রবিবার দু’দফায় ধৃতদের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হলে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সকলকে জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দেন বিচারক।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে খয়রাশোলে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে হামলা চালাল বেশ কয়েকজন দুষ্কৃতী। দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে উপস্থিত নেতাদের কয়েকজনকে মারধর, চেয়ার ভাঙচুর, কার্যালয়ের বাইরে রাখা বেশ কয়েকটি মোটরবাইক ভাঙচুর করে বিনা বাধায় পালায় দুষ্কৃতীরা। সেই সময় (নিহত তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষ প্রতিষ্ঠিত দলীয় কার্যালয়ে) দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এলাকা উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন খয়রাশোল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহসভাপতি, বেশ কয়েকজন কর্মাধ্যক্ষ, জনা কয়েক প্রধান ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাঞ্চন দে প্রমুখ। ঠিক তখনই লাঠিরড হাতে হামলা চালায় জনা পঞ্চাশেক দুষ্কৃতী হামলা চালায় বলে মৌখিক ভাবে দাবি করেছিলেন উপস্থিত নেতাকর্মীরা। ঘটনায় হতচকিত নেতাকর্মীরা যে যাঁর মতো পালিয়ে বেঁচেছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু কারণে হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা সেটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি উপস্থিত নেতাকর্মীরা। এমনকী পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেতে সন্ধ্যা গড়িয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ২৯ জনের নামে লিখিত আভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই দিনের ঘাটনায় মার খাওয়া তৃণমূল নেতা কাঞ্চান দে।
নেতারা প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও লিখিত অভিযোগে হামলার পিছনে দিন কয়েক আগে দুষ্কৃতীদের গুলিতে নিহত তৃণমূল নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর দিকেই আঙ্গুল তুলছিলেন। উল্লেখ্য, ওই নেতা খুনের ঘটনায় বিরোধী অশোক ঘোষ (যিনি গত অগস্টে একইভাবে খুন হয়েছিলেন) গোষ্ঠীর নেতা কর্মীদের নামে অভিযোগ দায়ের হওয়ায় তাঁরা সকলেই পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। দুই অশোক খুনের ঘটনার পরে খয়রাশোল কার্যত নেতৃত্ব শূন্য হয়ে পড়েছে। কারণ, ওই ব্লকের পঞ্চায়েতগুলি এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের উপর কর্তৃত্বও ছিল ঘোষ গোষ্ঠীর হাতে। এলাকাবাসীর দাবি, খয়রাশোলের নিয়ম অনুযায়ী যাঁদের হাতে ক্ষমতা তাঁদের হাতেই কয়লা সাম্রাজের দখল। যখন নেতৃত্ব হীনতায় ভুগছে খয়রাশোল ঘোষ গোষ্ঠীর লোকেরা তখন মুখোপাধ্যায় গোষ্ঠীর লোকেরা নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এর জেরেই দ্বন্দ্ব বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।
যদিও তাঁদের বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মানতে নারাজ ধৃতেরা। কালীচরণ দাস এবং অরুণ দাসদের দাবি, “গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের জেরেই অকারণে আমাদের নাম ঢুকিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। দলীয় কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় আমাদের কোনও হাত নেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy